ফুটপাতের ৭২ চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ডিএসসিসির মামলা
স্টাফ রিপোর্টার : ফুটপাতের ৭২ চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ডিএসসিসি মামলা দায়ের করেছে । গুলিস্তান ও মতিঝিল এলাকার ফুটপাত-সড়কে অবৈধ দোকান বসিয়ে তা থেকে চাঁদাবাজি করার অভিযোগে ৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-ডিএসসিসি।
বৃহস্পতিবার ডিএসসিসির সহকারী সম্পত্তি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সামছুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও শাহবাগ থানায় আলাদা তিনটি মামলা করেন। মামলার বিষয়ে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, সব ধরনের অপরাধীদেরকে আমরা আইনের আওতায় এনে বিচার করতে চাই। আমরা ৭২ জন চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছি।
মতিঝিল থানায় করা মামলায় ১৬ জন, শাহবাগ থানার মামলায় সাতজন এবং পল্টন থানায় ৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। মতিঝিল থানায় করা মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে মো. সাইফুল ইসলামকে। ঠিকানা দেওয়া হয়েছে বগারপাড়, থানা সরিষাবাড়ি জেলা জামালপুর। বর্তমান ঠিকানা দেওয়া হয়েছে- ১২৮১ পূর্ব জুরাইন, ঢাকা।
শাহবাগ থানার মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে শাহজাহান ওরফে ‘লম্বু শাহজাহান’কে। ঠিকানা বাড়ুইগাঁও, শ্রীনগর,মুন্সিগঞ্জ। পল্টন থানার মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হারুন ওরফে ‘লম্বু হারুন’কে। তার ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ডহিরন তাপসি, থানা ও জেলা মুন্সিগঞ্জ।
যানবাহন ও পথচারী চলাচল নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর গুলিস্তান-মতিঝিলের ফুটপাত ও সড়কে হকার বসা বন্ধ করতে মধ্য জানুয়ারিতে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদে অভিযান চালায় ডিএসসিসি।
এর প্রতিবাদ ও পুনর্বাসনের দাবিতে সেই থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন উচ্ছেদ হওয়া হকাররা। ডিএসসিসি মেয়রের বিরুদ্ধে নালিশ করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তারা।
হকারদের সেই আন্দোলন চলার মধ্যে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি ও তা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে এই ৭২ জনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করল সিটি করপোরেশন। মামলাগুলোর এজাহারে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দোকান বসিয়ে তা থেকে চাঁদা আদায় করছে। ডিএসসিসির বিধি মোতাবেক অভিযান চালিয়ে তাদের উচ্ছেদ করলেও তারা পুনরায় রাস্তা ও ফুটপাতে দোকান বসিয়ে দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে থাকে।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং হকার্স পুনর্বাসন কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ হকার্স লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এম এ কাশেমের ‘সরবাহকৃত তথ্য ও প্রমাণের আলোকে’ ওই ৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় বলে এজাহারে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আসামিরা রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিল, বায়তুল মোকাররম, ফুলবাড়িয়া এলাকায় সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জনচলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। তারা প্রতিদিন প্রতিটি দোকান থেকে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে।
এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সময় ‘তাদের দ্বারা লাঞ্ছনার শিকার’ হতে হয়েছে। চক্রটি বর্তমানেও সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকতা-কর্মচারীদের ‘ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে’ বলে অভিযোগ করা হয়।
চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটি মহল সড়ক ও ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে চাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, যাদের স্বার্থে আঘাত লেগেছে। তারা এটাকে ব্যাহত করতে চাচ্ছে। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে হকার নামধারী লোকদের টাকা দিয়ে এনে মিছিল করাচ্ছে। এটাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। এরসঙ্গে কিছু রাজনৈতিক নামধারী লোকও রয়েছে। চাঁদাবাজদের বয়কট করতে নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানান মেয়র সাঈদ খোকন।