মোস্তফা কামাল.আশুলিয়া থেকে:
ফিল্মী স্টাইলে জঙ্গি কায়দায় কমার্স ব্যাংক লুট হয়েছে আশুলিয়ায়।ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের শাখায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। তারা এ সময় গ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে এবং কুপিয়ে জখম করে ব্যাংকের ভেতরে ও বাইরে তাণ্ডব সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের মরদেহ সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা আছে বলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী। আরেকটি মরদেহ পাওয়া গেছে ঘটনাস্থলের একটু দূরে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ওয়ালিউল্লাহ ও গানম্যান বদরুল ইসলাম এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পলাশ, ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান ও মুড়ি বিক্রেতা মনির হোসেন।
ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার তরিকুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মীর ভাষ্য, দুপুর দুইটার দিকে তিনটি মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন ব্যক্তি ব্যাংকের সামনে আসে। তারা গ্রাহকের বেশে ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে। এরপর তারা ব্যবস্থাপক ওয়ালিউল্লাহকে গ্রেনেড দেখিয়ে জিম্মি করে ভল্টের চাবি চায়।
কিন্তু ব্যবস্থাপক তা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় দুর্বৃত্তরা তাঁকে কোপাতে শুরু করে। তারা গ্যানমান বদরুলকে কোপায় ও তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপর দুর্বৃত্তরা গ্রেনেড চার্জ করে ও গুলি চালিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করে ক্যাশ থেকে টাকা লুটে নেয়।
ব্যাংকের বাইরের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ব্যাংকের ভেতর থেকে গ্রেনেড, গুলি ও চিৎকারের শব্দ শুনে আশপাশের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসেন। তাঁরা ব্যাংকটি ঘেরাও করে দুর্বৃত্তদের আটক করার চেষ্টা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি চালাতে চালাতে ও গ্রেনেড ছুড়তে ছুড়তে বের হয়ে যায়।
আশুলিয়া থানার পুলিশ জানায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে ও গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে ১৪ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। আহত ১১ জন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
পুলিশ আরও জানায়, দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতা তাদের ধাওয়া করে দুজনকে ধরে ফেলে।
তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া প্রায় পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। গণধোলাইয়ে একজনের মৃত্যু হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।