পয়লা যাত্রায় প্রতিমন্ত্রীর আইন ভঙ্গ-
শফিক রহমান : এবার পয়লা যাত্রায় প্রতিমন্ত্রীর পলক আইন ভঙ্গ-করলেন মোটর বাইকে চড়ে হেলমেট না পরে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জাতিরকন্ঠ কে বলেছেন, সময়মতো কার্যালয়ে গিয়ে প্রশংসিত হলেও হেলমেট না থাকায় আইন ভঙ্গ এবং সেইসাথে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। নতুন সরকারে শপথ নেওয়ার পর দিন মঙ্গলবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে দ্রুত যেতে তিনি মোটরবাইকে সওয়ার হয়েছিলেন।
লক্ষ্যনীয় হচ্ছে মোটরবাইকে চেপে অফিসযাত্রার ছবি নিজের ফেইসবুক একাউন্টের টাইমলাইনেও পোস্ট করেন পলক।তাতে তাকে হেলমেট ছাড়া অবস্থায় দেখে সমালোচনা করেন অনেকে।
নিজের নতুন সরকারের সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই যাত্রায় সংসদ ভবন থেকে সব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা গিয়েছিলেন বাসে চেপে।সেখান থেকে ফেরার পর সংসদ ভবন থেকে গাড়িতে করে নিজ নিজ দপ্তরে যান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা; তবে পলক চাপেন মোটর বাইকে।
ট্রাফিক আইনের ১৩৭ ধারা অনুযায়ী প্রথম বার অপরাধ করলে ২০০ টাকা জরিমানা এর পরের বার করলে ৪০০ টাকা। এছাড়া ট্রাফিক আইনের ১৪৯ ধারায় বলা হয়েছে, নিরাপত্তা ছাড়া বাইক চালালে যেমন হেলমেট না থাকা, ব্যাক লাইট ইন্ডিকেটর,ব্রেক লাইট ইত্যাদি না থাকলে, দুই জনের বেশী সহযাত্রী থাকলে এবং সহযাত্রীর হেলমেট না থাকলে ৩০০ টাকা জরিমানা।
ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের ডিসি পূর্ব মহোদয় এর মতে, ট্রাফিক আইনের ১৩৭ ধারায় প্রথমবার অপরাধ করলে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এর পরের বার একই অপরাধ করলে জরিমানা হয় ৪০০ টাকা। তাঁর মতে, এই জরিমানার রেকর্ড থাকে ট্রাফিক পুলিশ কর্তার মেশিনে’ই। তবে যদি কোন পুলিশ কর্তা এ কাজে দায়িত্ব অবহেলা করে তবে তিনিও অভিযুক্ত হন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোনো ট্রাফিক পুলিশ কর্তাই ফাইন করেননি প্রতিমন্ত্রী পলককে। এখন তিনি প্রতিমন্ত্রী বলেই কি তার ধারে কাছে যাননি ট্রাফিক পুলিশ তা নিয়েও চলছে নানা সমালোচনা।
জানা গেছে, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে তার মতবিনিময় সভার সময় নির্ধারিত ছিল দুপুর ১২টা।প্রটোকলের গাড়ি ছেড়ে প্রতিমন্ত্রী পলক কেন মোটরবাইকে চড়ে দপ্তরে এসেছেন, তার কারণ জানিয়ে বিকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এতে বলা হয়, সংসদ ভবন থেকে আইসিটি টাওয়ারের উদ্দেশে রওনা হয়ে পলক যানজটে পড়ে প্রটোকল ছেড়ে মোটর সাইকেলে সওয়ারী হন। সবাইকে অবাক করে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত হন, বলা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
আইনপ্রণেতা হিসেবে হেলমেট না পড়ে মোটরযান আইন ভাঙায় ফেইসবুকে পলকের পোস্টেই সমালোচনা করেন অনেকে।এই প্রসঙ্গে পলক বলেন, তাড়াহুড়ো করে যাওয়ার জন্য আমি যে বাইকের সাহায্য নিয়েছি, তার কাছে কোনো বাড়তি হেলমেট ছিল না। আর ওটা রাইড শেয়ারিংয়ের বাইকও ছিল না, ব্যক্তিগত বাইক ছিল।
অাইন প্রনেতা বিরুদ্ধে ফেসবুকে সমালোচনা-
পলকের ফেইসবুক পোস্টে ‘শিহাব এফপি’ নিক থেকে বলা হয়, “দাদা হেলমেট কোথায়…? প্রথম দিনের অফিসে যাওয়াটায় তো আইন অমান্য করছেন।”
‘আরিফ রহমান’ নিক থেকে বলা হয়, “সমালোচনা তো মন্ত্রী সাহেব নিজেই তৈরি করেন। সব পিক ফেইসবুকে দিতে হয় না। আপনার হেলমেট কোথায়? না কি মন্ত্রীদের হেলমেট লাগে না?”
‘মুক্তা মনি’ নিক থেকে বলা হয়, “ছবিটা আপনাকে যতোটা সম্মানিত করবে ভেবেছিলেন তার চেয়ে বেশি অসম্মানিত আর সমালোচিত করলো!!! সব দিক ভেবে কাজ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি। আমরা নিজের ভুলের চেয়ে অন্যের ভুল বেশি ধরতে জানি।”
তরুণ প্রতিমন্ত্রী পলকের সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছনোরও প্রশংসাও এসেছে। একে ঝলক দেখানোও বলছেন কেউ কেউ।পলক তিনটি ছবি তুলেছেন ফেইসবুকে। দুটি অফিসে যাওয়ার, যে দুটিতে তার মাথায় হেলমেট ছিল না। কিন্তু আরেকটি ছবিতে তাকে হেলমেট পরা অবস্থায় দেখা যায়, যেটি অফিস থেকে ফেরার পথের।গত বছর রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই স্কুল শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার পর নজিরবিহীন আন্দোলনে ট্রাফিক আইন মানার বিষয়ে কঠোর হয়েছে প্রশাসন।