প্রেমের গনিতে ধরা অধ্যাপক মানিক মুনশীকে অব্যাহতি
জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ের প্রলোভনের সম্পর্ক করার অভিযোগে গণিত বিভাগের এক শিক্ষককে বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।সোমবার বিকেলে গণিত বিভাগের একাডেমিক সভায় সর্বসম্মতিতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে বিভাগের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ. বি. এস. মানিক মুনশী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মানিক মুনশী ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে তৈরি করেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ এক বছর ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েন তিনি। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে বলেও জানান এ শিক্ষক। বুধবার তার কক্ষে ওই নারী শিক্ষার্থীসহ দীর্ঘসময় দরজা বন্ধ করে অবস্থান করছিলেন। যা বিভাগের অন্য এক শিক্ষকের নজরে আসে। ঘটনা জানাজানি হলে ওই ছাত্রী বিয়ের জন্য চাপ দেন। তখন মানিক মুনশী আপত্তি জানান। পরবর্তীতে ওই ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, তিনি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কীভাবে এমন জঘন্য কাজ করতে পারেন তা জেনে আমরা সবাই হতবাক। যদি না বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ত, তাহলে হয়তো আড়ালে থাকত।
তিনি আরো বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রথমে ওই শিক্ষকের কাছে কাউন্সেলিং এবং বিভিন্ন পরামর্শের জন্য আসেন বলে জানতে পেরেছি। এ সুযোগে ওই শিক্ষক ছাত্রীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন এবং একপর্যায়ে শিক্ষার্থীকে বিয়ে করবেন বলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
এ বিষয়ে গণিত বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক মানিক মুনশী বলেন, আমি এ বিষয় নিয়ে আপনাকে কিছু বলতে চাচ্ছি না। যা বলার আমার বিভাগে চেয়ারম্যানকে বলব। ওই ছাত্রীও এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
অভিযোগের বিষয়ে গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে আমরা বিষয়টি বিভাগের একাডেমিক সভায় তুলেছি। প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষককে বিভাগের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।আমরা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা গণিত বিভাগ থেকে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। উপাচার্য অসুস্থ হওয়ায় তারা আবেদনটি আমাকে দিয়েছে। বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।