‘প্রিয়াংকা গান্ধী ইউল রিভাইভ দ্যা নেহেরু গান্ধী ফ্যামিলি’
প্রশ্ন: উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী ফল দিয়েই কথা শুরু করা যাক৷ সেখানে এ বার ১৯.৬% ভোট পেয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি, ৩৪টি আসনে দ্বিতীয় স্থানে আছে, কিন্ত্ত আসন একটাও পায়নি৷ পিছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, ১৯৯১ সালের ভোটে তারা ৮.৭% ভোট পেয়ে একটা আসন পেয়েছিল, ‘৯৬-এ ২০% ভোট পেয়ে ছ’টা আসন পেয়েছিল, কিন্ত্ত এ বারে ১৯.৬% ভোট নিয়ে একটাও আসন পেল না৷ আপনার মতে কারণটা কী?
আন্দ্রে বেতে: কারণটা, আমাদের ইলেকটোরাল সিস্টেম৷ সেখানে এমনটা যে হবেই, তা নয়, কিন্ত্ত পরিস্থিতিসাপেক্ষে এই জিনিসটা হওয়া সম্ভব৷ খুবই সম্ভব৷ এটার প্রতিকার হিসেবে অনেকে বলেন যে, উই শুড হ্যাভ আ সিস্টেম অফ প্রপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন৷ তার সপক্ষে অনেক কিছু বলার আছে, বিপক্ষেও অনেক কিছু, কিন্ত্ত আমাদের যে ইলেকটোরাল সিস্টেম, সেই ইলেকটোরাল সিস্টেমে এমন কাণ্ড সাধারণত হয় না৷ কিন্ত্ত ওই যা বললাম, হওয়াটা অসম্ভব নয়৷ এবার হয়েছে এবং তার কারণ কিন্ত্ত এই নয় যে, বিজেপির ভোট সংখ্যা এত বেশি৷ তবে প্রাপ্ত ভোট এবং আসনসংখ্যার মধ্যে এই যে ফারাক, এটা তো থাকবেই৷ আমাদের ইলেকটোরাল সিস্টেম যে রকম৷
প্রশ্ন: এবারের নির্বাচনে বিজেপি-র এই বিপুল জয় দেখে একটা তর্ক ক্রমশ উঠে আসছে যে, এক ধরনের হিন্দুয়াইজেশন অফ দ্য সাবঅলটার্ন হয়েছে কি না৷ যে বিজেপি হিন্দুত্ব ওরফে ব্রাহ্মণ্যবাদের ধ্বজাধারী, দলিতদের একটা অংশ, বড় অংশই বলতে হবে, তাদের ভোট না দিলে এই ফল সম্ভব ছিল কী?
আন্দ্রে বেতে: ভোট এক জিনিস, জীবনের ধারা বদলানো অন্য জিনিস৷ আমার মনে হয় না, এই দুটোর সঙ্গে খুব একটা সম্পর্ক আছে বলে৷ যদিও আমি বলব যে এই হিন্দুয়াইজেশন বা আমার শিক্ষক শ্রীনিবাস যেটাকে পঞ্চাশ-ষাট বছর আগে ‘স্যাংস্কৃটাইজেশন’ বলেছিলেন, সেই সংস্কৃতায়নের ধারা একটা আছে৷ সেটা উপেক্ষা করলে চলবে না৷ কিন্ত্ত তার সঙ্গে বর্তমান ভারতের প্রেক্ষিতে বিচার করলে অন্য একটা জিনিসও আছে৷ তা হলো বহু সংখ্যায় একটা নতুন মিডল ক্লাস-এর উত্থান৷ এই মিডল ক্লাস-এর ঠিক বাংলা পরিভাষা কী, আমি জানি না৷ ‘মধ্যবিত্ত’ বলা হয় বটে, কিন্ত্ত আমার মতে সেটা ঠিক যথাযথ পরিভাষা হয় না৷ ‘মিডল ক্লাস’কে আমরা বরং এখানে ‘মিডল ক্লাস’ই বলি৷ এই মিডল ক্লাস যে ধর্ম ভাষা, জাতপাত এ সব একেবারে মানে না তা নয়, মানে, কিন্ত্ত এগুলো ছাড়াও অন্য জিনিসের দিকে তাদের নজর আছে৷ এটাই আমাদের সামাজিক জগতের বৈশিষ্ট্য এবং রাজনীতিতে তার একটা ছাপ পড়বেই৷
প্রশ্ন: উত্তরপ্রদেশের কথাটা আর এক বার টানছি, যেহেতু এটা আসনসংখ্যার বিচারে বৃহত্তম রাজ্য, তা ছাড়া একেবারে হিন্দিবলয়ের হূদয়পুরও বটে৷ যে প্রক্রিয়াটাকে মায়াবতী এবং বিএসপি-র ‘সোশ্যাল এনজিনিয়ারিং’ বলা হয়ে থাকে, মূলত ব্রাহ্মণ-মুসলিম-দলিতের তিনটি তাসকে ভোটের লড়াইতে সুকৌশলে ব্যবহার করা, সেটা কি এ বারে ব্যর্থ হলো বলে আপনার মনে হয়? মায়াবতী এবার ব্রাহ্মণ ও মুসলিমদের বেশি টিকিট দিয়েছিলেন, ওবিসিদের সে তুলনায় কম৷ তার হিসাবটা হয়তো এ রকম ছিল যে, ওবিসিদের ভোটটা এমনিতেই বিজেপি এবং সমাজবাদী পার্টির মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে, ফলে জাত নিয়ে তার অঙ্কটা নির্বাচনে খেটে যাবে৷ সেটা হয়নি৷ যাদব-নয় এমন ওবিসি-রা, ব্রাহ্মণ এবং দলিতদের সঙ্গে বিজেপি-র দিকে ঝুঁকেছে৷
প্রশ্ন: সমাজ থেকে যেমন, তেমনই রাজনীতি থেকে ধর্মের প্রভাব উঠে যেতে পারে না বলে আপনার বিশ্বাস৷ সে ক্ষেত্রে একটা প্রশ্ন মনে আসে৷ আমরা দেখলাম নরেন্দ্র মোদি নিজেকে ইউপিএ-র ভোট-লড়াইয়ের পুরোভাগে থাকা রাহুল গান্ধীর সার্থক বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে পারলেন৷ কিন্ত্ত কথাটা হলো, তার ভাবমূর্তির গায়ে তো একটা দাঙ্গার রক্তাক্ত, কলঙ্কিত স্মৃতি লেগে আছে৷ সেটা সত্ত্বেও তিনি নিজের এমন একটা ধর্ম-নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ভারতের সামনে কী করে তুলে ধরতে পারলেন?
আন্দ্রে বেতে: আমার ধারণা নরেন্দ্র মোদির যেটা প্রধান শক্তি, হি ইজ আ সেলফ-মেড ম্যান৷ এটা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না৷ আমাদের দেশে বংশ, পরিবার এই সবের প্রতি খুবই ঝোঁক আছে, কিন্ত্ত সঙ্গে সঙ্গে তার বিপরীতের প্রতিও একটা শ্রদ্ধা আছে৷ একজন সেলফ-মেড ম্যান, মানে কোথা থেকে এসে নিজের চেষ্টায় কত দূর উঠেছে, সেটাকেও তো আমরা মান দিই৷ নরেন্দ্র মোদির যে মান, সেটা শুধু যে তিনি বিরুদ্ধ মতের লোকজনদের হটিয়ে দিয়েছেন তার জন্য নয়, হি হ্যাজ দি অ্যাট্রাকশন অফ আ সেলফ মেড ম্যান৷ আমরা ডেমোক্রেসি বলে সব সময় অনেক বড় বড় কথা বলি, কিন্ত্ত ডেমোক্রেসি যদি সেলফ মেড ম্যানকে স্থান না দেয়, শুধু কে কোন বংশের ছেলে, তার ঠাকুর্দা কী ছিলেন, তার বাবা কী ছিলেন, এই নিয়ে বসে থাকি, তা হলে আর গণতন্ত্র নিয়ে অত বড়াই করার কী মানে আছে? এই বংশগৌরবটাই তো আমাদের অনেক রাজনৈতিক দলের ভিত্তি, সে ক্ষেত্রে, সেলফ মেড ম্যান হ্যাজ আ সার্টেন অ্যাট্রাকশান অ্যাজ দি অপজিট অফ আ বিট কমন টেনডেনসি৷ আমার নিজের ধারণা রাজনীতিতে পরস্পরবিরোধী প্রবণতা থাকবে৷ এই অনিবার্য বিরোধী ধারণার সংঘর্ষ নিয়েই ভারতীয় রাজনীতি৷ ইনফোসিস-এর যিনি ভূতপূর্ব চালক ছিলেন, তাকে আমি ভালো করে চিনি৷ নন্দন নিলেকানি৷ হি ইজ ভেরি ইন্টেলিজেন্ট৷ নন্দন আমাকে বলে, তোমরা সব সময় বল ‘কাস্ট’ ‘কাস্ট’ ‘কাস্ট’, কোথায় এত ‘কাস্ট’? ইনফোসিসে এসে দেখো, কে কার ‘কাস্ট’ নিয়ে মাথা ঘামায়? সেটা সত্যি৷ আমি সেটা অস্বীকার করি না৷ কিন্ত্ত তার মানে এই নয় যে, কাস্ট-এর কোনো প্রাধান্য নেই এই সমাজে৷ জাত, ভাষা, ধর্ম- এই তিনটে জিনিস, যেটা জন্মের সঙ্গে জড়িত, এটার খুবই প্রাধান্য আছে৷ কিন্ত্ত তার সঙ্গে সঙ্গে, উই অ্যাডমায়ার দ্য সেলফ মেড ম্যান৷ নন্দন নিলেকানি, নারায়ণমূর্তি এরা সব কোথা থেকে কোথায় উঠেছে৷ উই অ্যাডমায়ার দ্যাট৷ এবং তার সঙ্গে সঙ্গে রাহুল গান্ধী যে এত বড় বংশের ছেলে, সেটাও আমরা অ্যাডমায়ার করি৷
প্রশ্ন: কংগ্রেসের একজন নেতা, মণিশংকর আয়ার নরেন্দ্র মোদিকে ‘চাওয়ালা’ বলে ফেলেছিলেন৷ সেই কথাটাকে বিজেপি তৎক্ষণাৎ তুলে নিল এবং তাদের নির্বাচনী প্রচারের একটা অঙ্গই হয়ে গেল সেটা৷
আন্দ্রে বেতে: মণিশঙ্কর আয়ারের পক্ষে ওই কথাটা বলা চূড়ান্ত আহাম্মকির পরিচয় হয়েছে৷ আর বিজেপি যে কথাটাকে তুলে নিল, ঠিক করেছে৷ মণিশঙ্করের কথাটাই প্রমাণ দেয়, কংগ্রেসি রাজনীতির সংস্কৃতিটা কী, এরা কোনো লোকের কদর দেয় না৷ নিজের পরিশ্রমে যারা উপরে উঠেছে, তাদের এরা কোনো কদর দেয় না৷ শুধু বংশগৌরবে কে কত বড়, সেই নিয়ে তারা পড়ে আছে৷ কিন্ত্ত সেই বংশগরিমার উল্টো দিকে ব্যক্তির নিজস্ব ক্ষমতারও একটা অ্যাপিল আছে আমাদের দেশে, অ্যান্ড নরেন্দ্র মোদি হ্যাজ ইউজড ইট৷ তিনি তো বার বার বলেছেন, আমি চাওয়ালার ছেলে৷ এই চা-ওয়ালা বলে বিদ্রূপটা কিন্ত্ত রাহুল গান্ধী কোনোদিন করতেন না৷ সেই ভদ্রতা, পশ্চিমবাংলায় যাকে কালচার বলা হয়, সেটা কিন্ত্ত রাহুল গান্ধীর ছিল৷ কিন্ত্ত কালচার থাকলে কী হবে, হি ইজ আ ফিবল ক্যারেকটার৷ কিন্ত্ত এটাও ঠিক যে এই পরিবারের প্রতি আকর্ষণ কংগ্রেস পার্টি থেকে ধুয়ে মুছে যায়নি৷ আমি মনে করি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আসবেন৷ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী উইল রিভাইভ নট ওনলি দ্য কংগ্রেস পার্টি বাট অলসো দ্য নেহরু-গান্ধী ফ্যামিলি৷ শি উইল রিভাইভ ইট৷ আমার ধারণা তাই৷ আই থিংক শি ইজ অ্যান অ্যাডমিরেবল পার্সন৷ কিন্ত্ত তারও একটা সমস্যা আছে৷ বাংলায় যাকে বলে দায়, সেই দায় আছে৷ তার স্বামী৷ ইন্দিরা গান্ধীরও এমন একটা সমস্যা ছিল৷ তার পতি ছিলেন ফিরোজ গান্ধী৷ ইন্দিরা তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেননি৷ বাবার সংসার দেখার অজুহাতে তিনি তাকে ছেড়ে চলে আসেন৷ প্রিয়াঙ্কা কী করবেন, জানি না৷ আমার ধারণা, প্রিয়াঙ্কা ইজ হিয়ার টু স্টে নট ওনলি ইন কংগ্রেস পার্টি বাট অলসো ইন দ্য ন্যাশনাল পলিটিক্স৷
প্রশ্ন: ভোটের আগে কলকাতার নানা জায়গায় রাস্তার ধারে বিজেপি ছোটো ছোটো চায়ের দোকান দিয়েছিল৷ রোড সাইড টি স্টল৷ শুধু ওই ‘চা-ওয়ালা’-র বিষয়টাকে প্রচারে ব্যবহার করার জন্য৷ এই ব্যাপারটাকে আপনি কী ভাবে দেখবেন?
আন্দ্রে বেতে: এটাকে ঠিক কোনো একটা বিশেষ ক্লাস-কে ধরার চেষ্টা বলব না৷ এটাকে আমি বলব পলিটিকাল সিম্বলিজম৷ নরেন্দ্র মোদি তার ছাপান্ন ইঞ্চি ছাতি ফুলিয়ে বলেছে, আমি চা-ওয়ালার ছেলে, তাতে হলো কী? অর্থাৎ ইট বিকেম আ কাইন্ড অফ পলিটিক্যাল সিম্বল অফ দ্য সেলফ মেড ম্যান অফ নরেন্দ্র মোদি৷ আর এটাতে সে লজ্জা পায় না, লজ্জার বিষয় বলে মনে করে না, এটাকে সে গর্বের বিষয় মনে করে৷ অ্যান্ড হি ডিড ইট, এটা হচ্ছে ওনার ব্যক্তিত্ব৷ একটা সাধারণ বিজেপি-র নেতা এটা করতে পারতেন কি না জানি না৷ নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিত্ব, সেটাকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না৷ আমরা তাকে ভালো বলি, খারাপ বলি, সেটা অন্য ব্যাপার৷ আমি নিজে তাকে খুব ভালো বলে মনে করি না৷ আমার বক্তব্য হলো, উই ডু নট নিড আ ম্যাসকুলার ডেমোক্রেসি, উই নিড আ কমপ্যাশনেট ডেমোক্রেসি৷ সেটা আমি মানি৷
প্রশ্ন: যদি সেটা হয়, তা হলে তো নরেন্দ্র মোদি তো প্রথম বর্গেই পড়েন, যেটা আপনি চান না৷
আন্দ্রে বেতে: নিশ্চয়ই৷ এবং এ সব ব্যাপারে তিনি বুদ্ধিমান৷ তিনি একটু পিছিয়ে গিয়েছেন, এখন আর অত বেশি বড়াই করেন না৷ হি ইজ আ গুড লারনার৷ এটা আমাদের মেনে নিতে হবে৷ রাহুল গান্ধী আদৌ তা নন৷ হি লার্নস নাথিং, হি লার্নট জিরো৷ নরেন্দ্র মোদি ইজ আ ভেরি গুড লারনার৷
প্রশ্ন: এই প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পড়ছে৷ সম্প্রতি একটি মন্তব্য করেছেন জয়রাম রমেশ৷ তিনি বলেছেন, রাহুল গান্ধী এই ভোট-বিপর্যয় থেকে একটি জিনিস শিখতেই পারেন৷ তা হলো কী ভাবে সর্বদা জনসমক্ষে থাকতে হয়, ‘হাই ভিজিবিলিটি’-র বিষয়টা রক্ষা করতে হয়৷
আন্দ্রে বেতে: জয়রাম বলবেন, কিন্ত্ত কিস্যু হবে না৷ রাহুল পারবেন বলে মনে আমার মনে হয় না৷ পারলে প্রিয়াঙ্কাই পারবেন৷
প্রশ্ন: মনমোহন সিং ছিলেন একেবারে উল্টো৷ স্বল্পভাষ৷ নিজেও খুব বেশি সামনে আসতেন না৷ আপনার কি মনে হয় তিনি যদি এ রকম একটা ‘হাই ভিজিবিলিটি’ রাখতেন, তা হলে কংগ্রেস ভোটে এত বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতো না?
আন্দ্রে বেতে: মনমোহন খুব বেশি সামনে আসতেন না, ঠিক, কিন্ত্ত তিনি নির্বোধ লোক নন৷ ইট ইজ অ্যান আনইয়ুজুয়াল কনজাংকচার অফ ইভেন্টস দ্যাট মেড মনমোহন সিং হোয়াট হি বিকেম৷ সেই ঘটনাচক্র আবার আসবে, এটা আমি মনে করি না৷ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আমাদের রাজনীতির ধাঁচে খাপ খেয়ে যান৷ নরেন্দ্র মোদিও তাই৷ তার ওই নিজের চেষ্টায় উঠে আসার বৃত্তান্তটাকে আমাদের গণতন্ত্র সম্মান করে৷ বড়ো বংশের ছেলেকে আমরা মান দিই, আবার সেলফ-মেড ম্যানকেও মান দিই৷ দু’ধরনের লোককেই মান দিই৷ কামরাজ কী ছিলেন? তিনি তো ইংরেজিও বলতে পারতেন না৷ নরেন্দ্র মোদি তো কথা বলে যেতে পারেন, আর কামরাজকে কোনো প্রশ্ন করলেই, উনি খুব গভীর ভাবে বলতেন ‘পারসালাম’, তামিল ভাষায় ‘পারসালাম’ মানে ‘দেখা যাবে’৷ কিন্ত্ত, কংগ্রেসের মধ্যে তিনি কোথায় উঠেছিলেন! এই ব্যাপারটা কিন্ত্ত আমার কাছে খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়৷ আমরা সেলফ মেড ম্যানকে মান দিই৷ যে রকম কামরাজকে দিয়েছি, খানিকটা লালবাহাদুরকে দিয়েছি, বেশিদিন উনি ছিলেন না, মারা গেলেন আচমকা৷ আবার আমরা বড় বংশের ছেলেকেও মান দিই৷ আমাদের রাজনীতিতে জাতপাতের একটা ভূমিকা আছে, আমি এটা একশো বার স্বীকার করি৷ সেটা ধুয়ে মুছে উঠে যায়নি৷ কিন্ত্ত আমি বিশ্বাস করি না যে, আমাদের পলিটিক্সের যা ধাঁচ, যা ধরন তাকে স্রেফ কাস্ট-এর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়৷ ব্যক্তিগত পার্সোনালিটির অনেক প্রভাব আছে৷ রাজনৈতিক রণকৌশলেরও অনেক প্রভাব আছে৷ ১৯৫৭ সালে এম এন শ্রীনিবাস তার ওই ‘কাস্ট ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’ প্রবন্ধে যা বলেছিলেন, তা পরে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে৷ কিন্ত্ত এখন ষাট-পঁয়ষট্টি বছর পরে পরিস্থিতি অনেক বদলে গিয়েছে, তার নিরিখে জাতপাতের পুরনো প্রভাব বেশ খানিকটা বদলেছে৷ শ্রীনিবাস নিজেও আজ থাকলে সেটা স্বীকার করতেন৷- ওয়েবসাইট।