• শুক্রবার , ২২ নভেম্বর ২০২৪

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির জারিজুরি ফাঁস


প্রকাশিত: ১০:১৩ পিএম, ২২ আগস্ট ১৪ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৯ বার

 

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির রাজশাহী ক্যাম্পাসে গতকাল কক্ষ সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত l প্রথম আলো
প্রিয়া রহমান, ঢাকা:
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি জারিজুরি ফাঁস করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ইউজিসি।ইউজিসির নির্দেশে রাজশাহী শাখা সিলগালা করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসন সূত্র জাতিরকন্ঠকে জানায়,
অবৈধভাবে পরিচালিত প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির রাজশাহী শাখাটি গতকাল বৃহস্পতিবার সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন। রাজশাহীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দুপুরে শহরের ভদ্রা এলাকার এই ক্যাম্পাসে অভিযান চালানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসটিকে অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করে।

বিদ্যালয়টির উপাচার্য পরিচয়দানকারী এম এন হক নামের এক ব্যক্তিকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ক্যাম্পাস আছে। কিন্তু রাজশাহীতে কেন সমস্যা হলো তা বুঝতে পারছি না।’ রোববার তিনি রাজশাহী গিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজুর রহমান বলেন, ইউজিসি থেকে ওই অবৈধ শাখা ক্যাম্পাসটি উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শাখা ক্যাম্পাসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ক্যাম্পাস থেকে বেশ কিছু আসবাব, দুটি কম্পিউটারের সিপিইউ, দাপ্তরিক কাগজপত্র, পরীক্ষার খাতা, বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশি-ভারতীয় চলচ্চিত্রের সিডিসহ বেশ কিছু মালামাল জব্দ করা হয়েছে।

এখানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কী হবে সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, সে ব্যাপারে ইউজিসি থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। প্রশাসনকে ক্যাম্পাসটি শুধু উচ্ছেদের জন্য বলা হয়েছে।
অভিযানে দেখা যায়, কক্ষের সামনে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে লাইব্রেরি রুম। তবে দরজা খুলেই দেখা গেল রুমটি আসলে একটি রান্নাঘর। পড়ে আছে রান্না করার উপকরণ। দুই শ্রেণিকক্ষে মোট ২০টি চেয়ার রয়েছে। কিন্তু উপস্থিত ছিলেন না কোনো শিক্ষার্থী। অন্য কক্ষে দুটি কম্পিউটার নিয়ে চালানো হয় ভর্তির কার্যক্রম ও দাপ্তরিক কাজ।

অভিযোগ আছে, দালালদের কমিশন দিয়ে এখানে ছাত্রভর্তির কার্যক্রম চলত। স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে ক্লাসপ্রতি ৫০০ টাকা সম্মানীর বিনিময়ে সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিবিএ, ইংরেজি সাহিত্যের মতো ক্লাস নেওয়া হতো। এভাবেই চলছিল এই শাখা ক্যাম্পাস।
তবে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির রাজশাহী ক্যাম্পাসের নির্বাহী পরিচালক ইব্রাহীম শেখ দাবি করেন, রাজশাহী ক্যাম্পাসটি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত শাখা। তবে এ-সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। ভর্তির রসিদ বইয়ের উল্টোদিকে কমিশন বাবদ বিভিন্ন টাকার সংখ্যা লেখা রয়েছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ ভর্তি করার জন্য ছাত্র নিয়ে এলে তাঁকে প্রথম জমার ৫০ ভাগ টাকা দেওয়া হতো। শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বা নিয়োগপত্রের কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

ক্যাম্পাসের ফাইলে সংরক্ষিত একটি তালিকায় ৩০ জন শিক্ষকের নাম ও কিছু মুঠোফোনের নম্বর পাওয়া যায়। ওই তালিকা থেকে সিভিল বিভাগের শিক্ষক তাসনুভা হুমাইরাকে ফোন করা হলে তিনি জানান, ওই ক্যাম্পাসে তিনি যোগদান করেছিলেন কিন্তু কার্যক্রম পছন্দ না হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দেন। এখন তিনি নাটোরের রাজশাহী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে শিক্ষকতা করছেন।