প্রিন্স সালমানের নিরাপত্তা কেড়ে নিল ১৩০০ হাজীর প্রাণ?
অবশ্য ইরানের হজ সংস্থা নিহতের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১৩১ জন ইরানি। আহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল নয়টায় হজের শেষ প্রধান আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে শয়তানের প্রতীকী স্তম্ভে পাথর মারার সময় প্রচণ্ড ভিড়ে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। সড়ক নম্বর ২০৪ ও ২২৩ দিয়ে বিপুল সংখ্যক হজযাত্রী আসতে থাকলে এই মহা-বিপর্যয় ঘটে বলে দুর্যোগ বিষয়ক সৌদি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
সৌদি যুবরাজ নায়েফ এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।এদিকে কোনো কোনো সূত্র বলেছে, সৌদি রাজার ছেলের গাড়ি বহর মিনা শহরের কেন্দ্রস্থলে আসায় তীব্র ভিড় দেখা দেয়া এবং মূলত এ কারণেই পদপিষ্ট হয়ে হজযাত্রীদের মৃত্যু ঘটেছে।
লেবাননের আরবি দৈনিক আদদিয়ার লিখেছে, শাহজাদা মুহাম্মাদ বিন সালমানের গাড়ি বহরই প্রাণঘাতী এই বিপর্যয় সৃষ্টির মূল কারণ। তার বিপুল গাড়ি বহর ও নিরাপত্তা প্রহরা মিনার প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা দখল করে নেয়। শাহজাদার সঙ্গে ছিল ২০০ সেনা ও ১৫০ পুলিশ কর্মকর্তা।
সৌদি সরকার এ বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য হজের সময় মিনায় সালমানের সফর বা তার উপস্থিতি সংক্রান্ত খবর প্রচার নিষিদ্ধ করেছে বলে লেবাননি দৈনিকটি উল্লেখ করেছে।
‘মিনার ঘটনা তদন্তে আন্তর্জাতিক আদালত চাই’
ইরানের বিশিষ্ট আলেম ও তেহরানের জুমা নামাজের অস্থায়ী খতিব আয়াতুল্লাহ মুহাম্মাদ ইমামি কাশানি পবিত্র মিনার ঘটনাকে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের অযোগ্যতার প্রমাণ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, বিশ্বসমাজ এ ঘটনার ব্যাপারে সৌদি সরকারের নানা সাফাই বা অজুহাতকামীতাকে মেনে নেবে না, কারণ এসবই মিথ্যা।
গতকাল তেহরানের জুমা নামাজের খোতবায় ইরানের বিশিষ্ট আলেম ও তেহরানের জুমা নামাজের অস্থায়ী খতিব আয়াতুল্লাহ মুহাম্মাদ ইমামি কাশানি এসব কথা বলেন। তিনি এ বিষয়ে আরও বলেছেন, পবিত্র কুরআনের সুরা নিসার ১০০ নম্বর আয়াতের অন্যতম তাফসির অনুযায়ী, আল্লাহর ঘর তথা কাবা জিয়ারতকারী শহীদরা ‘আল্লাহ ও রাসূলের দিকে হিজরতের ইচ্ছা প্রকাশের পর মৃত্যুবরণকারীর’ মতই মহাপুরস্কার বা প্রতিদান পাবেন মহান আল্লাহর কাছ থেকে।
হজযাত্রীরা বিশৃঙ্খল থাকায় বা তীব্র গরমের কারণে মারা গেছে বলে সৌদি সরকার যেসব দাবি করছে তা নাকচ করে দিয়ে আয়াতুল্লাহ কাশানি বলেন, সৌদি নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে সড়ক বন্ধ করে দেয়াটাই মিনায় বিপর্যয় ঘটার মূল কারণ। আর এই সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল সৌদি প্রিন্সের নিরাপত্তা জনিত কারণে। আন্তজার্তিক আদালত তদন্ত করলেই এটা বেরিয়ে আসবে। মুসলিম দেশগুলো যাতে মিনায় বিপুল সংখ্যক হজযাত্রীর হতাহত হওয়ার কারণ স্পষ্ট করার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে সেই সুযোগ করে দেয়াও সৌদি সরকারের দায়িত্ব বলে তিনি মন্তব্য করেন।