প্রাণ বাঁচাতে মীর কাসেমের গোপন কলাকৌশল ফাঁস
হাইকোর্ট রিপোর্টার : প্রাণ বাঁচাতে মীর কাসেমের গোপন কলাকৌশল ফাঁস হয়েছে অবশেষে। আজ রবিবার নিজেকে বদলে ফেলেন মীর কাশেমের আইনজীবী। এই নয়া ফন্দি অবশেষে ধরে পেলেন এটর্নী জেনারেল।
আপিলের রায় রিভিউ শুনানিতে এসে একাত্তরে মীর কাসেমের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ অস্বীকার করেননি তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। বিচারিক আদালত ও আপিল বিভাগের বিচার প্রক্রিয়ার পুরা সময়জুড়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও রবিবার (২৮ আগস্ট) আপিলের রিভিউ শুনানির শেষ মুহূর্তে এসে ভিন্ন কথা বলছেন আইনজীবী। একটি মাত্র চার্জে পাওয়া মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচতে ‘কিন্তু’, ‘তবু’, ‘সবকিছুর পরও’ জাতীয় শব্দ দিয়ে ওই একটা চার্জ (অভিযোগ নম্বর ১১) থেকে মীর কাসেম আলীর মুক্তি পেতে চাইলেন তিনি।
রবিবার দেড়ঘণ্টার শুনানিকালে যে ডালিম হোটেলে জসীম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেই হোটেলেরই মীর কাসেম যে কর্তা ছিলেন, সে বিষয় অস্বীকার করেননি তার আইনজীবী।
শুনানিকালে মীর কাসেমের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘মীর কাসেম আলী প্রত্যক্ষভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তাই তাকে চরম দণ্ড দেওয়া উচিত হবে না। যে সাক্ষ্য -প্রমাণ আছে, তার ভিত্তিতে অন্তত এ অভিযোগে (মুক্তিযোদ্ধা জসিম হত্যা) তাকে সাজা দেওয়া যায় না। তারপরও যদি আপনারা (আদালত) মনে করেন, অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের নিবেদন থাকবে যে, যেহেতু মীর কাসেম আলী সরাসরি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রিন্সিপাল অফেন্ডার হিসেবে জড়িত বলে প্রমাণিত হয়নি, সেহেতু তাকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া আইনগতভাবে উচিত হবে না।’
মীর কাসেমকে দানশীল ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপনেরও চেষ্টা করেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। পাশপাশি তিনি মীর কাসেমকে একজন ‘ডিসেন্ট’ ও ‘ভদ্রলোক’ হিসেবে দাবি করেন। এ সময় তিনি রিভিউ রায়ের ক্ষেত্রে তার অর্থনৈতিক অবদানের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে আদালতের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘তারা বলতে চান মীর কাসেম একজন দানশীল ব্যক্তি। আমি আদালতে বলেছি, বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ করার উদ্দেশ্যে বিদেশি লবিস্ট নিয়োগ করতে এই ব্যক্তি (মীর কাসেম আলী) ২৫ লাখ ডলার দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছিলেন। এই বক্তব্যও আসামিপক্ষ অস্বীকার করেননি।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মীর কাসেমের ওই রিভিউ আবেদনের আদেশের দিন আগামী মঙ্গলবার ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অন্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মোহাম্মদ বজলুর রহমান।