প্রসাধনসামগ্রী পুরুষদের প্রজননক্ষমতা ধ্বংসে গুরুত্বপূর্ণ
জার্মানির বন শহরের টিমো স্ট্রাঙ্কার অব দ্য সেন্টার অব অ্যাডভান্স ইউরোপিয়ান স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের দ্য ইএমবিও সাময়িকীতে ওই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্রসাধনসামগ্রী প্রস্তুতের সময় নন-টক্সিক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যা শুক্রাণু কোষকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর ধীরে ধীরে তা পুরুষের বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কাকে অনেক গুণ বাড়িয়ে তোলে।
গবেষকেরা প্রথমে কয়েক বছর ধরে মরে যাওয়া শুক্রাণুর ওপর গবেষণা চালান। পরে ওই গবেষণার ওপরে ভিত্তি করে তাঁরা পুরুষদের জন্য তৈরি করা প্রসাধনসামগ্রী নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছান। এ ধরনের গবেষণা এটাই প্রথম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকেরা খুব শিগগির ইউরোপের বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে বিস্তারিত নথিপত্র উপস্থাপন করবেন এবং আবেদন জানাবেন যাতে পুরুষদের জন্য তৈরি করা প্রসাধনসামগ্রী বাজারে যাওয়ার আগে সেগুলোর বিষবিদ্যা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। যদি পরীক্ষায় শুক্রাণুর জন্য ক্ষতিকারক কোনো পদার্থের অস্তিত্ব মেলে, তবে ওইসব পণ্য ছাড় না করার সুপারিশ করবে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
শুক্রাণু বিশেষজ্ঞ ও ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অধ্যাপক নেইলস স্কাক্কেবায়েক বলেন, ‘এই প্রথম আমরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহূত প্রসাধনসামগ্রীর সঙ্গে শুক্রাণুর জন্য ক্ষতিকারক এমন পদার্থের যোগসূত্র পেয়েছি।’
গবেষণায় দেখা গেছে, নিত্য ব্যবহার্য প্রসাধনসামগ্রীর প্রতি ৯৬টির মধ্যে ৩০টিতেই শুক্রাণুর জন্য ক্ষতিকারক পদার্থ রয়েছে। এসব রাসায়নিক পদার্থ শুক্রাণুর ক্যাটস্পার আমিষকে নষ্ট করে দেয়। এ আমিষটির ওপরে শুক্রাণুর মেয়াদ, গতিশীলতা এবং ডিম্বাণুর আবরণ ফেড়ে দেওয়ার সক্ষমতা নির্ভর করে।
এডিনবার্গের দ্য মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল হিউম্যান রিপ্রডাক্টিভ সায়েন্সেসের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রিচার্ড শার্প বলেন, এ গবেষণা নতুন এক দিকের উন্মোচন করলো। নিত্য ব্যবহূত প্রসাধনসামগ্রী যে পুরুষদের প্রজননক্ষমতা ধ্বংসে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখে চলেছে, তা জানা সম্ভব হলো।