• সোমবার , ১৮ নভেম্বর ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী ভূমিদস্যু থেকে আমাদের বাঁচান-গাজীপুরে নিরীহ ১০ পরিবারের আর্তনাদ


প্রকাশিত: ৯:৫২ পিএম, ২১ এপ্রিল ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৯১ বার

 
মোস্তফা কামাল প্রধান : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলায় জড়িয়ে ১০ নিরীহ gagipur kapasia-www.jatirkhantha.com.bdকৃষকের জমি জবরদখলের চেষ্টা করছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের বিবাদিয়া গ্রামে স্বাধীনতার ৪৫ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী বঙ্গতাজ উদ্দিন আহমেদের পবিত্র জন্মস্থানের মাটিতে স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু চক্র ১০ অসহায় ক্ষেতমজুর পরিবারের আবাল, বৃদ্ধ, নিরীহ সদস্যদের মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় জড়িয়ে পুলিশ দিয়ে দফায় দফায় বাড়ি-ঘরে হামলা, গ্রেফতার ও হয়রানির মাধ্যমে এলাকাকে পুরু শূণ্য করে ১০ নিরীহ কৃষক পরিবারের জমি জবরদখলের তান্ডব চালিয়ে বঙ্গতাজের জন্মস্থানের মাটিকে কলুষিত ও অপবিত্র করে কাপাসিয়ায় আরেক নজির বিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা।

১০ নিরীহ কৃষক পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলায় জামিনে এসেও বাড়িতে থাকতে পারছেন না। ভূমিদস্যুদের হুমকি, নতুন করে মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানির ভয়ে তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

kapasia land dakoldari-www.jatirkhantha.com.bdবৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় কাপাসিয়ার বিবাদিয়া গ্রামের প্রধানপাড়া এলাকায় আমরাইদ-সিংহশ্রী সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ মোঃ জালাল উদ্দিন এসব অভিযোগ করেন। এর আগে ওই পরিবারের শতাধিক শিশু-কিশোর, নারী-পুল, বৃদ্ধ-যুবকদের অংশগ্রহনে বিবাদিয়া প্রধান পাড়ায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে তারা মানববন্ধনে অংশ নেন। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। মানববন্ধন শেষে একই স্থাানে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন মোঃ জালাল উদ্দিন।তিনি বলেন, গাজীপুর জেলাধীন কাপাসিয়া থানার রায়েদ মৌজাস্থিত সি.এস খতিয়ান নং-২৪৬, এস.এ খতিয়ান নং-৫৩২, আর.এস খতিয়ান নং- ৪৬ এবং সি.এস ও এস.এ দাগ নং-৫২, আর.এস দাগ নং-১৩৪ মোট জমি ১৭৪ শতাংশ। ইহার কাতে ৭০ শতাংশ জমি ক্রয় সূত্রে ও ওয়ারিশান সূত্রে মালিক হইয়া ছাপরা ও হাফ বিল্ডিং মার্কেট নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণ ভোগ দখলে থাকাবস্থায় স্থানীয় ভূমিদস্যু চক্রের মূলহোতা ঝাউয়াদি গ্রামের গফুর মিয়ার পুত্র আক্তার হোসেনের নেতৃত্বে সরকার দলীয় পরিচয়ে লোহাদি গ্রামের পিতা মৃত শাহাজুদ্দিনের পুত্র মোঃ কবির হোসেন মোল­া, বাঘেরহাট গ্রামের খোরশেদ এর পুত্র কবির হোসেন, সিংহশ্রী গ্রামের রোয়াজ উদ্দিনের পুত্র মোস্তফা ও রুবেল, খোরশেদ আলীর পুত্র হাসেম ও মাসুদ, সিদ্দিকসহ অজ্ঞাত আরও ২০/২৫জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক দা, লাঠি, লোহার রড, শাবল ইত্যাদি অস্ত্র-শস্ত্রে বেআইনী জনতাবদ্ধ সমাবেশে তফসিলে বর্নিত ভোগ দখলীয় উক্ত জমিতে অনধিকার প্রবেশ করিয়া আমার নির্মাণাধীন স্থাপনা, ছাপরা, আধাপাকা মার্কেট ভাংচুর করে রাতারাতি ইটা-বালি দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মানের মাধ্যমে জবর দখলের চেষ্টা চালায়।

সংবাদ পেয়ে আমি ও আমাদের ১০ পরিবারের লোকজন জমিতে গিয়ে বাধা দিলে জবল দখলকারীরা আমাদের মারপিটসহ অপমান-অপদস্থ করে এবং পুলিশের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে দফায় দফায় কাপাসিয়া থানা পুলিশ আমাদের বাড়ি-ঘরে হানা দিয়ে নিরীহ লোকদরে ধরপাকর শুরু করলে গোপন সংবাদে জানতে পারি আমাদের ১০ ক্ষেতমজুর পরিবারের আবাল-বৃদ্ধ, ছাত্রসহ সকল পুরুষদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার ভয়ে আমাদের বাড়ি-ঘর যখন পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়ে ওই ভূমিদস্যুরা তখন আমাদের জমি জবর দখলের মহোৎসবে মেতে উঠে। তিনি বলেন, আদালত থেকে জমিনে মুক্তিলাভের পর ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমাদের পরিবারের সদস্য মৃত আতর আলীর ছেলে মমতাজ উদ্দিন (৬০) রায়েদ বাজারে বাজার করতে গেলে সেখানে উপস্থিত ভূমিদস্যুদের ইশারায় পুলিশ মমতাজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করে।

পুলিশকে তখন জামিনের কথা বলা হলে রিকল চান। বাড়ি থেকে রিকল নিয়ে দেখানোর পরেও মমতাজের বিরুদ্ধে অন্য মামলা রয়েছে বলে পুলিশ কাপাসিয়া থানায় নিয়ে যায়। পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দ করেন। বার বার এমন মিথ্যা মামলায় হয়রানি করে অভিযুক্তরা আমাদের জায়গা জবরদখলের চেষ্টা করছে।

ওই পরিবারের সোহাগ মিয়ার স্ত্রী আফরিনা আক্তার পুতুল ও স্বামী মৃত জিয়াউল হকের স্ত্রী কমলা বেগম (৫০) বলেন, অভিযুক্তরা গভীর রাতে পুলিশের সাথে বাড়িতে এসে পুরুষ লোকদের না পেয়ে জানালা দিয়ে শিশুদের হাত-পা, মশারি টানা হেঁচড়া করে। বাচ্চু মিয়ার ঘরের দরজা লাথি মেরে ভেঙ্গে ফেলে।

রায়েদ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড কৃষকলীগের সা. সম্পাদক পিতা মৃত আতর আলী প্রধানের ছেলে আঃ জব্বার প্রধান (৫০), ইমাম উদ্দিন প্রধানের ছেলে হাবিবুর রহমান ও মৃত ছফির উদ্দিনের ছেলে আঃ বারেক (৭৫) বলেন, ভূমিখেকোরা এক ভুয়া দলিল মূলে অবৈধ মালিকানার দাবিদার ঢাকার এক ব্যক্তির নিকট হইতে আমমোক্তার নামা নিয়ে অকারনে গায়ের জুড়ে দলীয় প্রভাব দেখিয়ে আমাদের এখানে জমি পাবে বলে দাবি করে।

বিষয়টি আমরা তেমন গুরুত্ব না দিলে পুনরায় জমি দাবি করে নইলে জবর দখলের হুমকি দেয়। তখন কাগজপত্র নিয়ে বসার কথা বললে এসব আমলে না নিয়ে জুড় পূর্বক জমিতে আসার কানাঘুষা শুনতে পেরে আমরা এ ব্যাপারে কাপাসিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করি। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারাসহ একাধিক মামলা থাকা সত্বেও বেপরোয়া হয়ে ওই ভূমিদস্যুরা জবর দখল চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

আমরা নিরীহ ও সৎ আওয়ামীলীগ হওয়ায় আজ ক্ষমতাশালী আওয়ামীলীগরা আমাদের জমি জবরদখল করে নিচ্ছে। ভূমিদস্যুদের অব্যাহত হুমকি ও পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে আমাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ওই ভূমিদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পেতে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রায়েদ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সা. সম্পাদক সিংগাপুর প্রবাসী রুবেল প্রধান বলেন, শুনেছি কাকের মাংস কাকে খায়না। অথচ আমাদের পরিবারের সবাই আওয়ামীলীগ হলেও আজ আওয়ামীলীগের পরিচয়ধারী ভূমিদস্যুরাই আমাদের জায়গা-জমি জবরদখল, হুমকি, হামলা, মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলা ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছে।

ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী কবির হোসেন, যুবলীগ পরিচয়ধারী আসাদ, বাঘের হাটের কবির মোল­া ও কাশেম মাস্টার পার্শ্ববর্তী সিংহশ্রী ইউনিয়নের বিএনপি দলীয় আক্তার হোসেন এর সাথে ১০ লাখ টাকা চুক্তির বিনিময়ে আমাদের বৈধ মালিকানার জমি জবরদখল ও পুলিশ দিয়ে আমাদের ১০ পরিবারের নিরীহ সদস্যদের হয়রানি করছে।

পুলিশি হয়রানি ও সরকার দলীয় মুখোশধারী ওই ভূমিদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পেতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রবাসী রুবেল প্রধান স্থানীয় এমপি বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন পুলিশি হয়রানির অভিযোগ ঠিক নয়।
তাদের বির“দ্ধে দুটি মামলা রয়েছে, একটি মামলায় জামিন থাকলেও অপরটিতে নেই। তাই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে সক্রিয় রয়েছে। মিথ্যা মামলার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হলে সেরূপ প্রতিবেদন দেওয়া হবে।