প্রকাশনাকে শিল্প করে শিক্ষায় রেফারেন্স বই’য়ের স্বীকৃতি দিন-মহিউদ্দিন
বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস) এর বার্ষিক সাধারন সভায় দেশের প্রকাশনা খাত কে শিল্প ঘোষণা করে করে শিক্ষায় রেফারেন্স বই’য়ের স্বীকৃতি দাবি করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে বাপুস এর বার্ষিক সাধারণ সভায় শনিবার এফবিসিসিআই সভাপতি এসব কথা বলেন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন। উপস্থিত ছিলেন লেকচার পাবলিকেশন্স লিমিটেড এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম, সিওর সাকসেস ও লেকচার পাবলিকেশন্স গ্রুপ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মেহেদী হাসান, সমিতির সহ-সভাপতি ও অমিকন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শরীফ উল আলম, মো. সালাহউদ্দিন, সাবেক সহ-সভাপতি শ্যামল পাল, কামরুল হাসান শায়ক, লেকচার পাবলিকেশন্স ও অমিকন গ্রুপের পরিচালক সৌরভ মাহমুদসহ সারাদেশ থেকে আগত বাপুস নেতৃবৃন্দ ও লাইব্রেরির মালিকরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব রয়েছে। তাই শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক রেফারেন্স বইয়ের প্রয়োজন।এছাড়াও বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি বাপুসের সঙ্গে অনেক শিল্প জড়িত। এই খাতে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। তাই প্রকাশনা খাতকে শিল্প ঘোষণার মাধ্যমে প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন সংশোধন করে শিক্ষা আইনে সৃজনশীল অনুশীলনমূলক বই অন্তুরভুক্তি করা জরুরি। এসব বিষয় নিয়ে আমরা শিগগির শিক্ষা ও শিল্প মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসব বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
দেশের বই প্রকাশক-বিক্রেতা বক্তারা দেশের প্রকাশনা খাতকে অবিলম্বে শিল্পের মর্যাদা দেয়ার দাবি জানিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বাপুস নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ই একমাত্র বই বান্ধব সরকার। তিনি শত ব্যস্ততার মাঝেও যেমন বই পড়েন তেমনি বইয়ের কদরও তিনি বোঝেন। তাই সারাদেশের প্রকাশকদের দাবি বই বান্ধব সরকার বইকে শিল্পের মর্যাদা দেবেন, এটাই শেখ হাসিনার কাছে প্রকাশকদের শেষ দাবি।
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, জ্ঞানের প্রধানতম উৎস বই। এই বই বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়ার মহৎ কাজে নিয়োজিত দেশের পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস) সদস্যরা। সরকারি নীতিমালার আলোকে বই প্রকাশ করে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি শিক্ষিত জাতি গঠনে দেশের অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। এই প্রকাশনা খাতে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে’ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই এই প্রকাশনা খাত যাতে আরো বিকশিত হয়ে শিল্পের মর্যাদা পেতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস)এর সহ-সভাপতি এবং অমিকন গ্রুপের এমডি এম. শরীফ উল আলম বলেন, পুস্তক ব্যবসায়ীরা আসলে আলোর মশালবাহী, আলোর পথের অভিযাত্রী। একটি শিক্ষিত ও জ্ঞান-নির্ভর জাতি গঠনে বর্তমান সরকারের নেয়া কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রকাশক ও বিক্রেতারা অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষিত জাতি গঠনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি’র ভূমিকা এদেশের শিক্ষক সমাজের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
তাই প্রকাশনা খাতকে অবিলম্বে শিল্পের মর্যাদা দিয়ে বাংলাদেশের সংবাদপত্রসমূহ যে বিশেষ রেয়াতি মূল্যে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানির সুযোগ পায় বাপুসকেও সেই সুযোগ দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন সংশোধন করে প্রকাশনা খাতকে শিল্পবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে এর কোনো বিকল্প নেই।
বাপুস এর সভাপতি মোঃ আরিফ হোসেন ছোটন বলেন, প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনে সৃজনশীল অনুশীলনমূলক সহায়ক বই প্রকাশ ও বিক্রয় পরিপন্থী উল্লেখ করে যে ধারা-উপধারা আছে তা আইনে পরিণত হলে দেশের ২৮ হাজার বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। ২৫ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। এসব শিল্পে ব্যক্তিগত ও ব্যাংক খাতের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে; যা প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন হলে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। সহায়ক বই বন্ধ হলে ছাত্রছাত্রীরা কোচিং ও প্রাইভেট টিউটরের ওপর নির্ভরশীল হবে।