পৃথিবীর আলো না দেখতেই ঘাতক বাস কেড়ে নিল নবজাতককে
কুমিল্লা প্রতিনিধি : পৃথিবীর আলো না দেখতেই ঘাতক বাস কেড়ে নিল নবজাতককে।জন্ম-মৃত্যুর মাঝখানে নাম রাখারও সময় পেল না ৩০ মিনিট বয়সী নবজাতক।দশ মাস মাতৃগর্ভে বেড়ে উঠে প্রায় ৭ ঘণ্টা লড়াই করে জন্ম নিয়ে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই ঘাতক বাসের চাপায় প্রাণ হারিয়েছে ওই নবজাতক।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলা গেইট এলাকায় ওই নবজাতককে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স ও যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখী সংঘর্ষে তার মৃত্যু ঘটে তার।মৃত্যুর পূর্বে নিজের নামও প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি ৩০ মিনিটের জন্য পৃথিবীতে আসা ওই নবজাতক। দেখেনি পৃথিবীর আলো। তার মায়ের নাম রূপালী বেগম ও বাবার নাম মোহাম্মদ হাসান।
ওই দুর্ঘটনায় আহত হয় অন্তত আরও সাত জন। তারা হলেন- দেবিদ্বার উপজেলার বাগুর গ্রামের আলী আশরাফ এর ছেলে আলাউদ্দিন (২২), একই গ্রামের জয়নাল আবেদীন এর ছেলে মকবুল (২৪), দাউদকান্দির দড়ানিপাড়া গ্রামের নূরজাহান (৩৫), হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় শাহিন (১৫), এ্যাম্বুলেন্স চালক দেবিদ্বার উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের আবুল হোসেন এর ছেলে মাহাবুব (৩০), হেলপার বাবুটিপাড়া গ্রামের আমির হোসেন এর ছেলে সাইফুল (২০), নিহত নবজাতকের নানী (৬০)। তার নাম জানাযায়নি।
আহতদের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, দড়ানিপাড়া গ্রামের সৌদী প্রবাসী মোহাম্মদ হাসান এর স্ত্রী রূপালী বেগম এর প্রসব ব্যথা অনুভব হয় ভোর ৪টার পর থেকে। গ্রাম্য সনাতন পদ্ধতিতে নিজ বাড়িতে বহু চেষ্টা করেও স্বাভাবিক নিয়মে প্রসব সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ১১টায় তাকে চান্দিনার মেডিকেয়ার নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে সিজার না করে নার্স স্বাভাবিক ডেলিভারী করায়। ফলে নবজাতকের অবস্থার অবনতি হয়।
নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়া মাত্র ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে অন্য একটি হাসপাতালের প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। আর এ্যাম্বুলেন্সটি মাত্র ২০শ গজ অতিক্রম করার পরই বিপরীত দিক থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখী সংঘর্ষ ঘটে। এত ঘটনাস্থলে নবজাতক মারা যায়।
হাইওয়ে পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস ছালাম জানান, মূলত এ্যাম্বুলেন্সটি উল্টো পথে আসার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নবজাতক শিশু ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। আহতদের উদ্ধারে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাসের চালক পলাতক রয়েছে।