পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছিলেন রাব্বী: আইজিপি
নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার: এ কে এম শহীদুল হকপুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে তল্লাশি করতে চাইলে তিনি তল্লাশি করতে না দিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে যান। কোনো ব্যক্তি যদি পুলিশের কাজে বাধা দেন সেটা ফৌজদারি অপরাধ হয়।
সেই অপরাধে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। কিন্তু পুলিশ সব ক্ষেত্রে ক্ষমতা দেখায় না। কথায় কথায় মামলা নেয় না।
রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারের আমিনবাজারে আয়োজিত কমিউনিটি পুলিশের এক সমাবেশে আজ মঙ্গলবার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইজিপি এসব কথা বলেন।
শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা রাব্বীর ঘটনা তদন্তে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের শতভাগ নিরপেক্ষ তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। যত দূর জানতে পেরেছি ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বাগবিতন্ডা কেন্দ্র করে। ব্যাংক কর্মকর্তা রাত প্রায় পৌনে ১২টার দিকে জেনেভা ক্যাম্পের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
সেখানে পুলিশের চেক পোস্টে ছিল। পুলিশ তাঁকে তল্লাশি করতে চাইলে তিনি তল্লাশি করতে দিতে চাননি। কিন্তু নিয়ম হলো কোনো ব্যক্তি যদি পুলিশের কাজে বাধা দেন সেটা ফৌজদারি অপরাধ হয়।
আইজিপি বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তার উচিত ছিল ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে বসিয়ে রাখা এবং তারপর তাঁর বাসা কোথায় জেনে এবং তাঁর সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাঁকে সম্মানের সহিত বাসায় পৌঁছে দেওয়া।
তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) এ কাজটি করেননি বিধায় আর তদন্ত যাতে নিরপেক্ষ হয় এবং তিনি যাতে কোনো ঝামেলা করতে না পারেন এ কারণেই তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে যা পাওয়া যাবে তার ওপরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া আদালতে রিট হয়েছে, আদালত যে নির্দেশনা দেবেন সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, যেখানেই যাই সাংবাদিকেরা এক কথাই আমাকে জিজ্ঞাসা করেন। দেশে অনেক ইস্যু আছে। একই বিষয় নিয়ে প্রতিদিন কথা বলব কেন? সংবাদমাধ্যমে বলে ও লিখে পুলিশের ইজ্জত নষ্ট করবেন এবং পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে চেষ্টা করবেন সেটা কতটা বাঞ্ছনীয় সেটাও ভেবে দেখা উচিত।
আইজিপি বলেন, মানবাধিকার সংস্থা বা সংগঠন তৈরি করে মানবাধিকার রক্ষা হয় না। পুলিশই মানবাধিকার রক্ষা করে। তবে পুলিশের কোনো সদস্য যদি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাঁকে ছাড় দেওয়া হয় না। পুলিশ একটি শৃঙ্খলা বাহিনী। এর কোনো সদস্য যদি আইনবহির্ভূত কাজ করেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করেন তাঁদের ন্যূনতম অনুকম্পা দেখানো হয় না। অনেক পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন, অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, অনেকের ফাঁসি ও জেল হয়েছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন।
শহীদুল হক বলেন, ‘পুলিশ জনগণের সেবক। আমরা শাসন করতে আসি নাই। আইন জনগণের স্বার্থে। আমরা আইন প্রয়োগ করে থাকি। কিন্তু আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে যদি প্রতিবন্ধকতা হয় তবে সেখানে বল প্রয়োগের ক্ষমতাও আইনেই দেওয়া হয়েছে। আমরা বল প্রয়োগ করতে চাই না। আমরা মানুষকে সচেতন করে আইন প্রয়োগ করতে চাই।’
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই সমাবেশে স্থানীয় সাংসদ এনামুর রহমান, ঢাকা-১৪ আসনের সাংসদ আসলামুল হক, ধামরাইয়ের সাংসদ এমএ মালেক, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ঢাকা রেঞ্জের উপ মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।