পুলিশের এস আই পদে লিখিত পরীক্ষায় টেকার গোপন কৌশল
প্রিয়া রহমান.ঢাকা:
পুলিশের এস আই পদে লিখিত পরীক্ষায় টেকার নানা গোপন কৌশল রয়েছে।আমাদের এই প্রতিবেদনটি ভালভাবে পড়ে লেখাপড়া করলে আপনি টিকে যেতে পারেন।ইংরেজি অংকে ভাল করতে হলে আপনাকে ষষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেনীর পাঠ্য বই ঝালাই করে নিতে হবে। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর উপপরিদর্শক (এসআই নিরস্ত্র) পদের শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের এবার মুখোমুখি হতে হবে লিখিত পরীক্ষায়। লিখিত পরীক্ষা হবে তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপে ২৫ নম্বরের মনস্তত্ত্ব বিষয়ে, দ্বিতীয় ধাপে ১০০ নম্বরের ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন এবং তৃতীয় ধাপে ১০০ নম্বরের সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (রিক্রুটমেন্ট ও ক্যারিয়ার প্ল্যানিং) মনিরুল ইসলাম জানান, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখেই লিখিত পরীক্ষা হবে। সে অনুযায়ী এ পদের মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা হবে আগামী ৭ আগস্ট বেলা তিনটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। ৮ আগস্ট ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন এবং ৯ আগস্ট সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত বিষয়ের পরীক্ষা বেলা দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নেওয়া হবে। এই সময়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আপনিও হতে পারেন একজন উপপরিদর্শক বা এসআই।
পরীক্ষা প্রস্তুতি
২০১২ সালে এসআই পদে নিয়োগ পেয়েছেন অপূর্ব কুমার বর্মণ। লিখিত পরীক্ষার ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন বিষয়ের পরীক্ষা প্রস্তুতি বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণত ইংরেজিতে ৫০ এবং বাংলা রচনা ও কম্পোজিট বিষয়ে ৫০ মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। ইংরেজিতে সমসাময়িক বিষয়ের ওপর একটি ১৫ নম্বরের রচনা, Latter, Fill in the Blanks থাকতে পারে। এ ছাড়া গ্রামার অংশ থেকে প্রশ্ন থাকবে। এ জন্য পড়তে হবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির গ্রামার বইগুলো। Tense, Voice, Article, Parts of speech, Correct spelling, Antonym, Narration, Translation, Noun-এই অধ্যায়গুলো চর্চা করলে ইংরেজিতে ভালো করা যাবে।
বাংলা রচনা ও কম্পোজিট বিষয়েও সমসাময়িক বিষয়ে রচনা, ভাবসম্প্রসারণ ও পত্র লিখন থাকতে পারে। বাংলা অংশে ভালো করতে হলে ব্যাকরণ অংশে বেশি জোর দিতে হবে। এ জন্য পড়তে পারেন ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বই। ব্যাকরণ অংশে কারক, বিভক্তি, শব্দ, ভাষা, সন্ধিবিচ্ছেদ, সমাস, সমার্থক শব্দ, এক কথায় প্রকাশ, অনুবাদ, বানান শুদ্ধি, বাগ্ধারা, বাক্য সংকোচন—এসব অধ্যায় ভালোভাবে পড়লে কাজে দেবে।
সাধারণ জ্ঞানে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। এ অংশে ভালো করতে হলে নিয়মিত পত্রিকা পড়া, দেশি-বিদেশি সমসাময়িক খবর নিজের আয়ত্ত করা। বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি, পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, জলবায়ু, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, বিভিন্ন জেলার আয়তন, অর্থনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত থাকা। আর আন্তর্জাতিক অংশের জন্য বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, সাম্প্রতিক ঘটনা এসব সম্পর্কে জানা থাকলে ভালো করা যাবে। এ ছাড়া গত বছরগুলোর এসআই নিয়োগের প্রশ্নগুলো সমাধান করলেও কাজে দেবে বলে জানান অপূর্ব কুমার বর্মণ।
গণিতে ভালো করতে হলে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বইগুলো বারবার চর্চা করতে হবে। পাটিগণিত থেকে লসাগু, গসাগু, ঐকিক নিয়ম, শতকরা, সুদকষা, লাভ-ক্ষতি, অনুপাত-সমানুপাত এসব অধ্যায় ভালো করে চর্চা করলে প্রশ্ন পাওয়া যাবে।
মনস্তত্ত্ব বিষয়কে অবহেলা করা যাবে না। নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস না থাকায় বেশির ভাগ প্রার্থীই এ বিষয়ে খারাপ করতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। পাস করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই সাড়ে ১২ নম্বর পেতে হবে। এখানে মূলত সংখ্যা চিহ্নিতকরণ, সমস্যার সমাধান, সাধারণ জ্ঞান (পূর্ণ রূপ, সংক্ষিপ্ত টীকা, সঠিক উত্তর), সম্পর্ক নির্ণয় ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে ভালো করতে হলে গত এসআই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো দেখলে প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।