• শনিবার , ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

পাহাড়িদের গভীর ষড়যন্ত্র ফাঁস


প্রকাশিত: ১১:২৮ পিএম, ৪ অক্টোবর ২৪ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৯ বার

স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি বলেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্নের ষড়যন্ত্র হচ্ছে

 

 

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা আদিবাসী স্বীকৃতি আদায় করতে পারলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বলে দাবি করেছে করেছে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামে একটি সংগঠন। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে এমন মন্তব্য করে সংগঠনটি। সমাবেশে বলা হয়, পাহাড়িরা প্রায় সময় ধর্ষণ নাটক সাজিয়ে জাতিগত দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। স্কুল শিক্ষক সোহেল রানাকে হত্যা করে পাহাড়িরা সেই নাটক মঞ্চায়ন করেছে।

বক্তারা পাহাড়ে স্কুলশিক্ষক সোহেল রানা হত্যার বিচার দাবি করে দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘উপজাতি সশস্ত্র গোষ্ঠী’ ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ সাত দফা দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে সংগঠনটি। সমাবেশে সংগঠনটির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক বলেন, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি আদায় করতে পারলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

নতুন আরেকটি তথাকথিত স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ তৈরি হবে। এর কারণ বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত আদিবাসী বিষয়ক জাতিসংঘ চার্টার। জাতিসংঘের ওই চার্টারে বর্ণিত বিতর্কিত বিষয়গুলো আদিবাসীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও কোনও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা উপজাতিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এ কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি সম্প্রদায় ২০০১ সাল থেকে হঠাৎ নিজেদের আদিবাসী দাবি করে বসছে, স্বীকৃতি চাইছে। কিন্তু তাদের আদিবাসী দাবি ইতিহাস বিকৃতি। ইতিহাস ও নৃতত্ত্ব অনুযায়ী তাদের আদি নিবাস হচ্ছে পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার, ভারত, কম্বোডিয়া ইত্যাদি রাষ্ট্র। তারা ওখানকারই আদি বাসিন্দা, বাংলাদেশের নয়।

‘আদিবাসী’ বলে প্রচার করা মানে একটি ঐতিহাসিক ও নৃতাত্ত্বিক সত্যকে অস্বীকার করা বলে দাবি করে তিনি বলেন, যে প্রচারণার পেছনে আমেরিকা, ভারত, খ্রিস্টান মিশনারি ও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি মদদ রয়েছে। যাদের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তথাকথিত জুম্মল্যান্ড নামে আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠন করা।

সমাবেশে হিল হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্ট মিনহাজ ত্বকি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের উপজাতি-অধ্যুষিত এলাকায় বাঙালি শিক্ষকদের বের করে দেওয়ার জন্য একটা ট্রামকার্ড ব্যবহার করে সেটা হলো ধর্ষক নাটক। সোহেল রানা হত্যাও এর ব্যতিক্রম নয়। এভাবে পাহাড়ে সেনাবাহিনীকে একটা ক্রিমিনাল রোলে অ্যাটাক করে, বাঙালিদের সেটেলার কার্ড ব্যবহার করে। আসলে পাহাড়ে উপজাতি ছাড়া আর কেউ থাকতে পারবে না, এটাই বলতে চায়। আমি বলবো, সাবধান হয়ে যাও, না হয় তোমাদের ট্রাম্পকার্ড তোমাদের গায়ে গিয়ে পড়তে পারে।

সমাবেশে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’র আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক সরকারের কাছে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো—বাংলাদেশের উপজাতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে ‘আদিবাসী’ ও ‘জুম্ম’ শব্দ ব্যবহার বন্ধ এবং বাঙালিদের ‘সেটেলার’ সম্বোধনকে রাষ্ট্রদ্রোহ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি; অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র ও সংবিধানবিরোধী জাতিগত বৈষম্যমূলক প্রচলিত আইন, চুক্তি ও বিধিসমূহ সংস্কার করে দেশের সবার জন্য এক সংবিধান ও এক আইন প্রণয়ন; পাহাড়ে স্কুলশিক্ষক সোহেল রানা হত্যার সঙ্গে জড়িত ও পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করে বিচার করা।

পার্বত্য সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি চাকরিতে উপজাতি কোটা বাতিল করা; ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যমূলক ভূমিকা পালন করা; পার্বত্য অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা ক্যাম্প বাড়ানো এবং চট্টগ্রাম চুক্তি ও ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিল করার দাবিও জানানো হয়।