• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

পাল্টাপাল্টি হুশিয়ারি কাদের রিজভী’র


প্রকাশিত: ৯:২৫ পিএম, ১০ মে ২৪ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৫ বার

বিশেষ প্রতিনিধি :  ফের জমছে রাজনীতির মাঠ।  পাল্টাপাল্টি হুশিয়ারি দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের ও রুহুল কবির রিজভী।শুক্রবার সমাবেশ করেছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে শনিবার। এদিকে শুক্রবার নৈরাজ্য করলে বিএনপি নেতাদের এবার ‘ডাবল শিক্ষা’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বিএনপি নেতারা জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন বলে সেটা সম্ভব হচ্ছে। তবে, বিএনপি আবার নৈরাজ্য করলে আগে তো একটা শিক্ষা পেয়েছে, এবার ডাবল শিক্ষা পাবে। আমরা বসে নেই। নৈরাজ্য, সন্ত্রাস বা অরাজকতা করলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়বো।’
ওদিকে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশের জনগণ কখনো বর্তমান সরকারের দুঃশাসন মানবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডামি নির্বাচনে জনগণ অংশ নেয়নি তারপরও প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিশ্চুপ। তিনি প্রথমে বললেন ৩৫ থেকে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।

দেশকে ছোট করা গয়েশ্বরদের  ক্ষেত্রেই মানায়:ওবায়দুল কাদের

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘প্রতিবেশী দেশকে খুশি করতে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে, ভারত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে পারবে না’- বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতকে খুশি করার আমাদের দরকার নেই। আমরা নিজেদের শক্তিতে টিকে আছি, ভারতের দয়ায় নয়। তবে, ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের সময় যে ভূমিকা নিয়েছিল, তখন কিন্তু ভারত কোনো কথা বলেনি, কোনো ভূমিকা রাখেনি। নিজের দেশকে এভাবে ছোট করা গয়েশ্বরের ক্ষেত্রেই মানায়।’
এসময় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের শঙ্কার কথা উল্লেখ করে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যে যুদ্ধ চলছে, আমরা কয়েকবার বলেছি, দুষ্টু ছেলে ইজরায়েল এখন আমেরিকাকেও মানে না। হিটলার যে গণহত্যা চালিয়েছে, আজ নেতানিয়াহু গাজায় সেটিই করছেন। যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র না দিলেও এখন একাই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। এটি সারাবিশ্বের জন্য আতংকের বিষয়। সারাবিশ্ব এ নিয়ে সোচ্চার। আমেরিকা-ইউরোপে গাজার প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে কর্মসূচি করছে। আমাদের ছাত্রলীগও বড় সমাবেশ করেছে, তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
১৭ মে’র কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরসহ সব শাখা ও সহযোগী সব সংগঠন কেন্দ্রীয় কার্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি নেবে। সবচেয়ে বড় প্রোগ্রাম হবে ২৩ জুন, আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, সারাদেশে আমরা ব্যাপকভাবে পালন করবো।’
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন খুব বেশি ভালো হয়নি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রাণহানির একটি ঘটনাও নেই, এমন একটা নির্বাচন আমরা করেছি। এই কৃতিত্ব আমাদের দিতে হবে। তবে যেভাবে ভোট হয়েছে, তাতে খুব বেশি ভালো বলবো না, তবে সন্তোষজনক। বিএনপি-জামায়াতসহ অনেক দল বর্জন করেছে। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ থেকে ৪০ শতাংশ কম নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে বিএনপি কিছুই আদায় করতে পারবে না। তারা মুখে বড় কথা বললেও নেতাদের ভেতরে হতাশা ভর করেছে। যতদিন ফিরে না আসবে, আরও জনবিচ্ছিন্ন হবে।’যৌথ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, আইন সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

সরকারের দুঃশাসন মানবে না জনগন:রিজভী

দেশের জনগণ কখনো বর্তমান সরকারের দুঃশাসন মানবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডামি নির্বাচনে জনগণ অংশ নেয়নি তারপরও প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিশ্চুপ। তিনি প্রথমে বললেন ৩৫ থেকে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। পরে বললেন ধান কাটার জন্য ভোট কম পড়েছে। আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার উনি মাঝে মধ্য একটু সত্য কথা বলার চেষ্টা করেন। যে ধরনের জালিয়াতি শেখ হাসিনা শুরু করেছেন, জনগণ কখনো এ দুঃশাসন মেনে নেবে না। এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

‘এদেশের মানুষকে স্বচ্ছল করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য শুনলাম। উনি বলেছেন, এদেশের মানুষকে স্বচ্ছল করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। আমার কথা হলো প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেছেন তার সঙ্গে তো বাস্তবের কোনো মিল দেখছি না। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এখন বৈশ্বিক ধনীদের তালিকায়। ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে তার নাম উঠে এসেছে।
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি কাদের স্বচ্ছল করার কথা বলছেন? ভারতের আদানি গ্রুপের বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি করে দশ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর আমাদের দেশের এ গরিব মানুষেরা বিদ্যুতের দাম দিচ্ছে দুইটি ফ্যান চললে তাকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল দিতে হচ্ছে। যদি একজন মানুষের বাসায় একটি এসি থাকে তাহলে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ টাকা নিয়ে যাচ্ছে ভারতের আদানি গ্রুপ। তাহলে আপনি স্বচ্ছল করছেন তো ভারতের ব্যবসায়ীদের আপনার ঘনিষ্ঠ লোকদের।

বাংলাদেশের মানুষকে আপনি স্বচ্ছল করছেন কোথায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি ক্যাসিনো খুলছে আপনার যুবলীগের নেতারা, ঢাকা শহরে ৪৫ থেকে ৫০ টি ক্যাসিনো খোলা হয়েছে আবার আজকে দেখছি অনলাইন জুয়াতেই হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে এরাও ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ। এটা পৃথিবীর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা যারা ফিনান্সিয়াল ইনভেস্টিগেশন করেন তাদের বক্তব্য।আপনিতো স্বচ্ছল করছেন জুয়াড়িদের। ছাত্রলীগ, যুবলীগকে। আপনার জেলার এক ছাত্রলীগ নেতা ২ হাজার কোটি টাকা পাচার করে। এ হচ্ছে আপনার স্বচ্ছলতার নিদর্শন।
ডলারের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘একদিনে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এক ডলারের দাম এখন ১১৭ টাকা। কয়েকদিন আগেই ছিল ১১০ টাকা। আমাদের শুধু শিল্পের যন্ত্রপাতি নয়, আদা, রসুন, পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়- এসব আমদানিতে ডলার লাগে। আপনি গরিব মানুষকে আরও গরিব করছেন তাদের পদদলিত করছেন।

উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘দেশে আরেকটি ডামি নির্বাচন হচ্ছে এ নির্বাচন নিয়ে আমাদের কথা বলার নেই। জালিয়াতির নির্বাচন বর্জন করায় এ সমাবেশ থেকে কোটি কোটি মানুষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আব্দুস সালাম আজাদ, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুল আলম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।