• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

পরিমণির ঈদ কোরবানী ”এক্সট্রা” শিল্পীদের জন্য


প্রকাশিত: ৪:০২ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ১৬ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯৯ বার

এস রহমান  :  ”এক্সট্রা” শিল্পীদের জন্য পরিমণির ঈদ কোরবানী নিয়ে সাড়া পড়েছে চারদিকে। অনেকে বলেছেন, পরিমণি p-1যেন সত্যিকার কোরবানী করলেন! কোরবানি নিয়ে ব্যস্ততা চলছে ঢালিউডের তারকাদের। এরই মধ্যে অনেকে দেশের বাড়িতে চলে গেছেন, পশু কোরবানি করে পরিচিত আত্মীয়দের নিয়ে আনন্দ করছেন।

1 ব্যতিক্রম নায়িকা পরী মণি। সোমবার নিজে গরুর হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কিনলেন। আজ ঈদের দিন সকাল ১০টায় গরু নিয়ে বিএফডিসিতে চলে এলেন। সেখানে যাঁরা ‘এক্সট্রা’ নামে পরিচিত, সেই সহকারী শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে কোরবানি তদারকি করেছেন, বিলিয়েছেন মাংস। পরী মণির এমন ঈদ উদযাপনে খুশি বিএফডিসির অবহেলিত সহকারী শিল্পীরা, যাঁরা চিরকাল ‘অতিরিক্ত’ নামেই পরিচিত।

2১৯৭৮ সাল থেকে এফডিসিতে সহশিল্পী হিসেবে কাজ করেন মর্জিনা। মাংস নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন খুশিমুখে। বললেন, ‘প্রায় ত্রিশ বছর আগে, অভিনেতা রাজীব সাহেব বেঁচে থাকতে কোনো এক সমিতি আমাদের জন্য গরু কোরবানি দিয়েছিল।

এরপর আর কেউ আমাদের জন্য কোরবানি দেয়নি। গতকাল শুনলাম নায়িকা পরী মণি আমাদের জন্য কোরবানি দেবেন এফডিসিতে। শুনে প্রথমে বিশ্বাস করিনি। পরে খবর নিয়ে জানলাম সত্যি আমাদের জন্য কোরবানি দিচ্ছেন। অনেক আনন্দ পাচ্ছি। আল্লাহ তাঁকে অনেক বড় করুক।’

এফডিসিতে কোরবানি না হলে কোথা থেকে মাংস পেতেন জানতে চাইলে মর্জিনা বলেন, ‘আমরা এফডিসিতে কাজ করি, টাকা না থাকলেও মান-ইজ্জত আছে। কারো বাসায় গিয়ে মাংস চাইতে পারি না। আশপাশের মানুষ যারা থাকে, তাদের অধিকাংশই কোরবানি দিতে পারে না।

তার পরও দিন শেষে দেখা যায় এক-দুই কেজি মাংস আশপাশে থেকে চলে আসে। আর যদি না আসে তা হলে ঢাকার কিছু জায়গা আছে যেখানে সন্ধ্যার দিকে টুকাইন্না (সারা দিন বিভিন্ন বাসা থেকে সংগ্রহ করা মাংস) মাংস বিক্রি হয় কম দামে। সেখান থেকে রাতে কিনে আনি।’

গরু কোরবানি দেন এফডিসি মসজিদের ইমাম মাওলানা ইসহাক। তিনি বলেন, ‘মসজিদ খালি ফেলে তো আর বাড়ি যেতে পারি না। এ কারণে এখানেই ঈদ করছি। সকালেই আমাকে একজন গিয়ে বলল, কোরবানি দেওয়া লাগবে।

প্রথমে বুঝতে পারিনি, পরে এসে দেখলাম একজন নায়িকা দুঃস্থ শিল্পীদের জন্য এই কোরবানি দিচ্ছেন। আমার অনেক ভালো লাগল বাবা। ১৯৬৭ সাল থেকে এখানে কাজ করছি। মনে পড়ে না শেষ কবে এফডিসিতে কোরবানি দিয়েছি। ৩০-৩৫ বছর আগে কে যেন কোরবানি দিয়েছিল মনে নেই।’

নায়িকা পরী মণি বলেন, ‘আমি প্রতিবছরই কোরবানির ঈদ নানুবাড়িতে করি। সেখানে যাঁরা আমাকে বুকেপিঠে করে মানুষ করেছেন, তাঁরা আমার জন্য অপেক্ষা করেন। এখন যেহেতু চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো নয়, তাই অনেক শিল্পী-কলাকুশলীর কোরবানি দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবারের কোরবানির ঈদটা আমি এফডিসিতে করব। যাঁরা কোরবানি দিতে পারেননি, তাঁদের জন্যই এই কোরবানি দেওয়া।’

পরী আরো বলেন, ‘আমি কখনো কোরবানি দেখতে পারতাম না। ভয় করত। আজকেই জীবনের প্রথম কোরবানি দেখলাম। একদমই ভয় করেনি, মনে একধরনের আনন্দ কাজ করছে। এই ঈদটা আমার সার্থক হলো মনে হচ্ছে।’