• বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর ২০২৪

পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এলাকা উত্তাল-চুয়েটে অবরুদ্ধ উপাচার্য সহ-উপাচার্য রেজিস্ট্রার


প্রকাশিত: ৯:৪৪ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২৪ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩০ বার

 

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : এবার পররাষ্ট্র মন্ত্রীর হাসান মাহমুদের এলাকায় আন্দোলনে উত্তাল চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য, সহ–উপাচার্যের দপ্তরসহ প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করার পর চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) প্রশাসনিক ভবনের মূল দরজায় তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ভবনে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। তাঁরা তিনজনই ভবনের ভেতরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তালা দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রীরা ভবনের নিচে অবস্থান নিয়েছেন।

অন্যদিকে বিকেল পৌনে পাঁচটায় সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাঁরা হল ছাড়বেন না। দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাঁরা আবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁরা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব দাবির বিষয়ে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেসবের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা একমত হননি। তাই আন্দোলন চলছে। কিন্তু প্রশাসন আলোচনায় না বসে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করবেন না।

এর আগে আজ বেলা দেড়টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে ছাত্রদের এবং আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ছাড়তে হবে।

রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা আশানুরূপভাবে সাড়া দেননি। তাই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হল না ছাড়লে কী হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

হল ছাড়ার নির্দেশনা পেয়ে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বরে থাকা ও মূল ফটকে রাখা শাহ আমানত পরিবহনের দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন কিছু শিক্ষার্থী। বর্তমানে ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সহ-উপাচার্য মো. জামাল উদ্দিন আহমেদ দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ‘প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়া হয়েছে। আমরা ভেতরে আছি। শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হবে। যেহেতু ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেহেতু আলোচনার আর পরিবেশ নেই।’

গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় নিহত হন পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১)। আহত হন জাকারিয়া হিমু (২১)। চুয়েটের কাছাকাছি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি যাত্রীবাসী বাস।

দুর্ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় প্রথম দফায় সড়ক অবরোধ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস। পাশাপাশি আরও দুটি বাস ভাঙচুর করা হয়। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রাত নয়টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীর। পরে সেদিন রাত তিনটায় নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হয়। এরপর গত বুধবার প্রায় ১৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। আজও সড়ক বন্ধ।