পরকীয়ার জের জামাতা কুপিয়ে মারল তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে
বিশেষ প্রতিবেদক : পরকীয়ার জের জামাতা কুপিয়ে মারল তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে। শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাচঁপুরে এ ঘটনাটি ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকাবাসীরা ওই ব্যাক্তিকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশিদ জাতিরকন্ঠকে জানান, উপজেলার কাচঁপুর ইউনিয়নের উত্তর কাচঁপুর গ্রামের খায়রুল বাশারের বাড়িতে ভাড়া থাকে কাচঁপুর বিসিক শিল্প নগরীর মার্করী ফ্যাশন লিমিটেডের কর্মচারী কাউসার মিয়া (২৫)।
সে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার লাভলীকে (২০) নিয়ে চার মাস আগে ওই বাড়িতে ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। কাউসার বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের বাসিন্দা সারোয়ার হোসেনের ছেলে।
আজ দুপুরে জামাতা কাউসার মিয়ার বাসায় শাশুড়ি রাশিদা বেগম (৫৫) তার ছেলে ইমদাদুল হককে (১৭) নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে বেড়াতে আসেন। দুপুরের খাবার শেষে ইমদাদুল হক বাসা থেকে বের হয়ে কাচঁপুরে বেড়াতে যায়। এ সময় পরকীয়ার ঘটনা নিয়ে প্রথমে কাউসার মিয়া ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তারের মধ্যে ঝগড়া হয়।
ঝগড়া করার একপর্যায়ে শাশুড়ি রাশিদা বেগম মেয়ের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ করায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাউসার মিয়া ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে প্রথমে তার স্ত্রী লাভলীকে দা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। মেয়েকে কোপাতে দেখে রাশিদা বেগম প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে কাউসার মিয়া তার শাশুড়িকেও কোপায়। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি কোপে মা মেয়ে দু’জনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
পরে দু’জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘরের দরজা খুলে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীরা কাউসার মিয়াকে ঘরের ভেতরে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। রাত সাড়ে ৯টায় পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’জনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় এবং কাউসার মিয়াকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে নিহত লাভলীর ছোট ভাই ইমদাদুল হক জানান, পাচঁ বছর আগে আমার বোনের বিয়ে হয়। আমার বোনও কাচঁপুরের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতো। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
নিজের স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে জামাতা কাউসার মিয়া জানান, আমার স্ত্রী পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েছিল। আমি এর প্রতিবাদ করায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তাই জেদ করে প্রথমে তাকে পরে প্রতিবাদ করায় তার মাকেও হত্যা করি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রাত সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোখলেছুর রহমান জাতিরকন্ঠকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ এনে ক্ষিপ্ত হয়ে কাউসার মিয়া এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।