নোয়াখালী সহকারি জেলা জজের স্ত্রীর করুণ মৃত্যু-২ ডাক্তার ওয়ান্টেড
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : প্রসবের সময় অবহেলায় এক বিচারকের স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগে চট্টগ্রামের দুই চিকিৎসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত মামলাটি সরাসরি আমলে নিয়ে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম হারুনুর রশিদ এ পরোয়ানা জারি করেছেন।
যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা.কাজল রেখা রায় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কার্ডিয়াক সার্জারির রেজিস্ট্রার ডা. দেবাশীষ তালুকদার এবং নগরীর পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জব্বার।
করুণ মৃত্যুর শিকার ওই গৃহবধূ হচ্ছেন নোয়াখালীর সহকারি জেলা জজ মোরশেদুল আলমের স্ত্রী সায়মা শিকদার (২২)। সায়মা চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। তিনি নগরীর অক্সিজেন-কাপ্তাই লিংক রোডের নয়াহাট এলাকার সাংবাদিক বিল্ডিংয়ের এমদাদউল্লাহর মেয়ে। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ সায়মা-মোরশেদ দম্পতির বিয়ে হয়।
গত ৩ জুন ভোর সাড়ে ৬টায় নগরীর ৫৭, কেবি ফজলুল কাদের চৌধুরী রোডের মায়াবিনী বিল্ডিংয়ে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে সায়মার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রায় ৫ ঘণ্টা আগে তিনি এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।
মামলার আরজিতে সায়মার মা সালমা বেগম অভিযোগ করেছেন, ডা. কাজল রেখা রায়ের তত্ত্বাবধানে সায়মার প্রসূতিকালীন চিকিৎসা চলছিল। তার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল ২০ জুন। কিন্তু ২ জুন দিবাগত রাতে সায়মার প্রসব ব্যাথা উঠলে ডা.কাজল রেখা রায়কে ফোন করা হয়। তিনি সায়মাকে দ্রুত প্যাশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
রাত ১টার দিকে সায়মাকে পেশেন্ট কেয়ারে ভর্তির পর তাকে সিজার অপারেশন করার কথা বলেন চিকিৎসক। রাত ২টায় অপারেশন থিয়েটারে সায়মা ছেলের জন্ম দেন। ৩ জুন সকাল পৌনে ৭টার দিকে তাকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মেট্রোপলিটনের চিকিৎসকেরা তার পরিবারকে জানান, রোগি সেখানে নেয়ার ঘণ্টাখানেক আগেই মারা গেছেন।
চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে সায়মার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সায়মার মা।মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরেফিন রিজভি জাতিরকন্ঠকে বলেন, অপরাধজনক নরহত্যা ও পেশাগত অবহলোর অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০৪, ৩০৪ (ক) এবং ৩৪ ধারায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পরোয়ানা তামিলের জন্য বলা হয়েছে।