নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে উইমেন ডেলিভার সম্মাননা
ডেনমার্ক থেকে এমদাদুল হক : নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে উইমেন ডেলিভার সম্মাননা দিলো ডেনমার্ক। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তরুণ সমাজের উদ্দেশে বলেছেন, তোমরা কখনো চাকরির পেছনে ঘুরবে না। এতে সব ধরনের প্রতিভা ধ্বংস হয়ে যায়।
বুধবার ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে চতুর্থ গ্লোবাল উইমেন ডেলিভার কনফারেন্সে তিনি এ বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেন। বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নসহ অন্যান্য উদ্ভাবনী অবদানের জন্য মুহাম্মদ ইউনূসকে উইমেন ডেলিভার সম্মাননা দেওয়া হয়। নিউইয়র্কভিত্তিক এনজিও উইমেন ডেলিভার আয়োজিত এই সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ইনভেস্ট ইন গার্লস অ্যান্ড উইমেন-ইট পেইস’।
সম্মেলন আয়োজনে ডেনমার্ক সরকার, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), ইউএন-উইমেনসহ নানা সংস্থা ও সংগঠন সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। এবারের সম্মেলনে বিশ্বের ১৬৯টি দেশ থেকে মন্ত্রী, সাংসদ, সাংবাদিক, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, তরুণ দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার পাঁচ হাজারের বেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দারিদ্র্য, একটি বেকারত্ব এবং আরেকটি হলো পৃথিবী থেকে কার্বন–দূষণ দূর করাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার আহবান জানিয়ে বলেন, দারিদ্র্য মানবসমাজে বসবাস করতে পারে না। তাকে জাদুঘরে পাঠাতে হবে। এতে নারীরা বেশি লাভবান হবে, কেননা নারীরা বেশি দারিদ্র্যের শিকার।
ইউনূস বেকারত্বকে কৃত্রিম ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষাপদ্ধতির কারণে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি খোঁজে। তারা ভাবে, চাকরি পাওয়াই জীবনের একমাত্র গন্তব্য। অথচ চাকরি কোনো গন্তব্য হতে পারে না। তাদের উদ্যোক্তা হতে হবে। এটিই গন্তব্য। সবাই উদ্যোক্তা হতে উদ্বুদ্ধ হলে আজ থেকে ৩০ বা ৩৫ বছর পরে ছেলেমেয়েরা বেকারত্ব কাকে বলে তা বুঝতেই পারবে না।
আলোচনায় ইউনূস সেন্টারের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেল, গ্রামের নারীদেরও গ্রামীণফোনের মুঠোফোন ব্যবহার, সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া, গর্ভবতী নারীদের কাছে আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা নিয়ে যাওয়া, মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় সরাসরি চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়াসহ নানান উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক ব্যবসা শুরু করার কারণে অন্যান্য কোম্পানি কীভাবে এগিয়ে আসছে, সে কথাও জানান।