চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাহিদুর রহমান (৮৪) ও আফসার হোসেন চটুর (৬৫) বিরুদ্ধে একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন না করে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারির আবেদন করে ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমানকে ট্রাইব্যুনাল প্বরশ্লেন করেন, ‘নিরপরাধ মানুষকে কেন হেনস্থা করবেন? আপনারা তথ্য-প্রমাণ দিয়ে গ্রেপ্তারী আবেদন নিয়ে আসুন।’
জবাবে প্রসিকিউটর বলেন, ‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে।’
এ সময় ট্রাইব্যুনাল আবারো বলেন, ‘এরকম খুনের আসামিতো অনেকেই আছেন। তবে তাদের অভিযোগের বিষয়ে আমাদের সন্তুষ্ট না করা পর্যন্ত এ আদেশ দেয়া যাবে না।’
মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এ মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চটুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদনের ওপর শুনানি হয়। তবে অভিযুক্তদের আটক দেখানোর জন্য প্রসিকিউশনের আবেদনে কোনো আদেশ না (নো অর্ডার) দিয়ে উল্টো ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া অভিযুক্ত দুইজনের বিরুদ্ধে একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আগামী ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে প্রসিকিউটরের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদেরকে আপনারা যুদ্ধাপরাধী মামলায় টানতে তৎপর কেন? আসামিরা তো কোনো দলের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী কিংবা এমপিও নয়। একজন নিরপরাধ মানুষকে কেন অপ্রয়োজনীয়ভাবে হেনস্থা করবেন?’
এ সময় প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান বলেন, ‘আসামিদের বাড়ি সীমান্ত এলাকায় ও তারা প্রভাবশালী। তারা অন্য একটি মামলায় আটক রয়েছেন। জামিন নিয়ে বের হলেই তারা পালিয়ে যেতে পারেন এবং তদন্ত কাজে বাধা দিতে পারেন।’
এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর কেন আপনাদের বোধদয় হলো? মামলার ৯ মাস অতিবাহিত হলেও এতোদিন তো এ মামলা নিয়ে আপনাদের তৎপরতা দেখলাম না।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘এ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, প্রাথমিক স্টেটমেন্টে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। তাছাড়া আসামিদের রাত ২টায় তাদের বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাই তাদের পালিয়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।’
এরপর ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এই মামলায় তাদের শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, অপর একটি মামলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর আফসার হোসেন চটু ও মাহিদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ। তবে ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশন গত ১৮ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী মামলায় তাদের আটক দেখানোর আবেদন করে। বর্তমানে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী মামলার তদন্ত কাজ চলছে।