নায়িকা সুপারস্টার শ্রীদেবী’র অজানা অধ্যায়
আসমা খন্দকার : নায়িকারাও যে সুপারস্টার হতে পারেন তার উদাহরন ছিলেন প্রয়াত ভারতীয় নায়িকা শ্রীদেবী। প্রায় তিন দশক তিনি ছিলেন পর্দা কাঁপানো নায়িকা । তাঁর মৃত্যুতে পুরো ভারতবাসী আবেগে আপ্লুত! সিনেমা দর্শকদের নয়নমনি ছিলেন শ্রীদেবী। শৈশব বুঝে ওঠার আগে চার বছর বয়সে চলচ্চিত্রে জড়িয়ে পড়া দক্ষিণ ভারতের শ্রী আম্মা ইয়ানগার আয়াপান। তৈরী করে দিয়েছিলেন নায়িকাও হয় সুপারস্টার এমন তত্বের ভিত। আশির দশকে একচ্ছত্র দাপটে কাজ করেছেন চলচ্চিত্রে।
যত বড় হয়েছেন, জড়িয়েছেন চলচ্চিত্রের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসায়। তেলেগু, তামিল, কন্নড় ও মালায়লাম ছবিতে এতটা জনপ্রিয় হয়েছেন যে বাবা এবং ছেলের বিপরীতে ধারাবাহিকভাবে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শতাধিক দক্ষিণী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রীদেবী। তারপর দক্ষিণের জনপ্রিয়তার প্রবল চাদর সরিয়ে রেখে বলিউডে নিজেকে সমর্পিত করেছেন। ১৯৮৩ সালে মুক্তি পাওয়া বলিউডের ‘সাদমা’ বলিউডে শ্রীদেবীকে ভিন্ন মাত্রায় প্রতিষ্ঠিত করে। যদিও এটি ছিল তার ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া দক্ষিণী ‘মুন্দ্রি মুদিচু’ চলচ্চিত্রের রিমেক। তারপরও বলিউড বা উপমহাদেশের দর্শকদের জন্য এটি ছিল দারুন অভিজ্ঞতা।
১৯৮৩-৮৯ ছিল নায়কা শ্রীদেবীর স্বর্ণকাল। এই সাত বছরে ৪৩ টি হিন্দী ছবি মুক্তি পায় তার। ৮৩ তে সাদমা’র পাশাপাশি ‘জিতেন্দ্রর বিপরীতে ‘হিম্মতওয়ালা’ প্রথাগত বানিজ্যিক হিন্দী ছবিতে শ্রীদেবীর উজ্জ্বল অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়। ৮৪ তে ইনকিলাব’ এ অমিতাভের পাশে সমউজ্বল শ্রীদেবী ৮৬ সালের ‘নাগিনা’, ৮৭ সালের ‘মি. ইন্ডিয়া’, ৮৮ এর ‘শেরনী’ এবং ৮৯ এর ‘চাঁদনী’ এব ‘চালবাজ’ দিয়ে নিজেকে বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টারের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন। যে মর্যাদার পথ বেয়ে উঠে এসেছেন মাধুরী দীক্ষিত বা আজকের প্রিয়াঙ্কা-দীপিকা পাডুকোনেরা।
সালমান খান দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন শ্রীদেবীর সঙ্গে। ৯৩ সালে ‘চন্দ্রমুখি’ এবং ৯৪ সালে ‘চাঁদ কা টুকরা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন দুজন। সেসমেয়ের ‘ফিল্মফেয়ার’ পত্রিকায় সালমান এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, শ্রীদেবী এক এবং একমাত্র সুপারস্টার যার সঙ্গে যে কোন সময় যে কোন বয়সে অভিনয় করতে চাইব আমি।’মৃত্যুর পরেও টুইটারে তার সেই মুগ্ধতার প্রকাশ ঘটেছে। লিখেছেন, ‘তোমার মত আর কেউ ছিলনা। এখনও নেই। কখনও হবেনা।’
অন্যদিকে শ্রীদেবীর সৌন্দর্য্য এবং মর্যাদাবোধের ভীষণ গুণগ্রাহী ছিলেন তিন ‘খান’ এর আরেক খান আমির খান। টুইটারে দুইবার তিনি তার গভীর শোকের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
সর্বশেষ লিখেছেন, এখনও বিশ্বাস করতে পারছিনা। তিনি সত্যিকারের আদর্শ ছিলেন।’ প্রথম টুইটে লিখেছিলেন, তার এমন অসময়ের চলে যাওয়া বিরক্ত এবং চরম ব্যথিত করে তুলেছে মনকে। আপনাকে সারা জীবন মনে রাখব।
এদিকে শাহরুখ খান নব্বই দশকে বলেছিলেন, শুধু শ্রীদেবীর সঙ্গে অভিনয় করবেন বলে তিনি ‘আর্মি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ে সম্মত হয়েছিলেন। ৯৬ এ মুক্তি পাওয়া ‘আর্মি’ চলচ্চিত্রটি জনপ্রিয় হয়েছিল। তবে তার মৃত্যুর পর টুইটারে শাহরুখের কোন মন্তব্য না পাওয়াতে বলিউডে বিস্ময়ের আবহ ছড়িয়েছে।