• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

নারীকে জিম্মি করে দুই দারোগার সামারিতে উত্তপ্ত যশোর পুলিশ


প্রকাশিত: ৩:৩১ পিএম, ১২ জুন ১৭ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৩ বার

যশোর প্রতিনিধি :  এবার নারীকে জিম্মি করে দুই দারোগার সামারির ঘটনায় উত্তপ্ত যশোর পুলিশ প্রশাসন। police-www.jatirkhantha.com.bdঅভিযোগ করা হয়েছে, যশোরের মনিরামপুরে ঝুমুর নামে এক নারীকে জিম্মি করে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও সন্তুষ্ট থাকতে পারেননি কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের দুই এসআই। পরদিন আবারও কৌশলে টাকা নিতে এসে না পেয়ে স্বামী ও ভাইকে ডাকাতি মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার মনিরামপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। ঘটনাস্থল মনিরামপুর হলেও কোতোয়ালি থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে এমন ঘটনায় খোদ পুলিশের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে ঝুমুর জানান, দীর্ঘদিন মাংস বিক্রেতা স্বামী জামাল হোসেনের কাজে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি। হঠাৎ ৬ জুন বিকাল ৩টার দিকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস দোকানের সামনে এসে থামে।

মাইক্রোবাস থেকে দুইজন অপরিচিত লোক নেমে দোকানে আসে। মাইক্রোবাসে এনজিও’র কর্মকর্তা বসে আছেন, যারা মাংস কিনবেন- এমন কথা বলে ঝুমুর ও তার শ্বশুর হাসান আলীকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে তাদের গ্রামের বাড়ি উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা খানপুর গ্রামে নেয়া হয়।

মাইক্রোবাসের ভেতরে থাকা দুইজনের কোমরে পিস্তল দেখে ঝুমুর ধারণা করেন তারা পুলিশের লোক। এ সময় ঝুমুর তাদের কাছে জানতে চান, কী কারণে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এমন প্রশ্ন করতেই ঝুমুরের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন তারা। ঝুমুরের পরিবার মাদকসহ চোরাকারবারিতে জড়িত- এমন অভিযোগ তুলে ঝুমুরের স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে তিন লাখ টাকা দাবি করেন তারা।

ভয়ে স্বামীর মাংসের দোকান, বাড়িতে গচ্ছিত ও ধার করে এক লাখ টাকা তাদের দিয়ে দেন। এ সময় তাদের মধ্যে একজন ঝুমুরকে মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। একই সঙ্গে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেয়া হয় ঝুমুরকে।

কিস্তিতে নেয়া ঝুমুরের ট্রাকটি চোরাই অভিযোগ করে পরদিন বুধবার মনিরামপুর থেকে তার ট্রাকটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সময় মনিরামপুর থানায় কর্মরত পরিচয় দিয়ে দেবাশীষ রায় নামের এক এসআই ঝুমুরের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে সেখানে যেতে বলে।

ঝুমুর সেখানে না গিয়ে চলে যান মনিরামপুর থানার ওসি মোকাররম হোসেনের কাছে। ঝুমুর পুরো ঘটনা খুলে বলেন ওসিকে। এ সময় ঝুমুরের কাছ থেকে দেবাশীষের মোবাইল নম্বর নিয়ে ওসি ফোন করলে তাদের আসল পরিচয় বেরিয়ে পড়ে। এদের একজন এসআই আসাদ ও অপরজন এসআই দেবাশীষ রায়।

বিষয়টি নিয়ে এসআই আসাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ওসি (কোতোয়ালি থানা) স্যারের নির্দেশে একটি মামলার তদন্তে সেখানে গিয়েছিলেন। অপর এসআই দেবাশীষ রায় ওই দিন মনিরামপুরে আসার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি মামলার সাক্ষী দিতে অন্য জায়গায় গিয়েছিলাম।’

জানতে চাইলে মনিরামপুর থানার ওসি মোকাররম হোসেন জানান, ওই দুই এসআই মনিরামপুরে এসেছিলেন, এ বিষয়ে তার কিছুই জানা ছিল না।তবে পরে বিষয়টি নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি কেএম আজমল হুদার সঙ্গে কথা হয় তার। ওসি আজমল হুদা তাকে জানিয়েছেন, এসআই আসাদ ও দেবাশীষ রায়কে তিনিই পাঠিয়েছিলেন।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি আজমল হুদা বলেন, ঝুমুরের স্বামী জামাল হোসেন গাড়ি চোরাই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য। এ সময় ডাকাতির মামলায় আসামি করার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা তো হবেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসি কেএম আজমল হুদা বলেন, অপরাধীদের ধরতে পুলিশ সবখানে যেতে পারে।