নায়িকা অঞ্জনার রহস্যজনক মৃত্যু
তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি বলে একাধিক সূত্র দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, অভিনেত্রীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মরদেহ গোসলের সময় তা প্রত্যক্ষ করেছেন সংশ্লিষ্ঠরা। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত খ্যাতিমান চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান কি শেষ পর্যন্ত কি হেরে গেলেন রহস্যজনক মৃত্যুর কাছে! এক সপ্তাহের বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই নায়িকা। তবে তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি বলে একাধিক সূত্র দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, অভিনেত্রীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মরদেহ গোসলের সময় তা প্রত্যক্ষ করেছেন সংশ্লিষ্ঠরা। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শনিবার আশির দশকের এই জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমানকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে অভিনেত্রীর দাফন সম্পন্ন হয়। শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন-বিএফডিসি এবং চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে অঞ্জনার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।বেলা সোয়া ১১টায় অভিনেত্রীর মরদেহবাহী গাড়িটি যখন এফডিসিতে প্রবেশ করে। অভিনেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে সেখানে আরও আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন অভিনেতা আলমগীর, উজ্জল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিশা সওদাগর, চিত্রনায়িকা নূতনসহ চলচ্চিত্রের মানুষরা।
প্রতক্ষদর্শীরা জানায়, অঞ্জনাকে সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে গোসল সম্পন্ন করা হয়। সে সময় তার শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।এসব সম্পর্কে সংশ্লিষ্ঠরা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।পরে অঞ্জনার মরদেহ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে নেওয়া হলে, সেখানেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই অসুস্থ ছিলেন এই নায়িকা। এরপর শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন না হলে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। চিকিৎসকের পরামর্শে চেকআপের পরে তার রক্তে ইনফেকশন ধরা পড়ে। এক সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা নিলেও কোনো উন্নতি হয়নি অঞ্জনার। পরে বুধবার (০১ জানুয়ারি) তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে অঞ্জনাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
অনন্য অভিনয়ের জন্য ১৯৮১ সালে ‘গাংচিল’ এবং ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ চলচ্চিত্রের জন্য অঞ্জনা রহমান দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এ ছাড়া মোহনা, পরিণীতা ও রাম রহিম জন চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে তিনবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন তিনি।১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরীর ‘সেতু’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে অভিনয় জীবনে পথচলা শুরু করেন অঞ্জনা। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’। রহস্যভিত্তিক এই সিনেমাতে তার বিপরীতে ছিলেন সোহেল রানা।
প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন গুণী এই অভিনেত্রী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- সুখের সংসার, যাদু নগর, সখী তুমি কার, নেপালী মেয়ে, রাখে আল্লাহ মারে কে, একই রাস্তা, অঙ্কুর, মাধবীলতা, জবরদস্ত, জিদ্দী, আশীর্বাদ, শাহী কানুন, রূপসী বাংলা, বাপের বেটা, মরুর বুকে, প্রমাণ, বিক্রম, আকাশপরি, রাজার রাজা, বিধিলিপি, দিদার, আনারকলি, অগ্নিপুরুষ, টার্গেট, আন, মহারাজ, মানা, আশার প্রদীপ, প্রতিরোধ, বেদনা, সোনার পালঙ্ক, চোখের মনি, প্রেমের সমাধি, ঈমানদার, অংশীদার, সুখ, দোযখ ইত্যাদি।