• শনিবার , ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণ-৩ চোরাচালানি গুরুতর আহত


প্রকাশিত: ৯:৩০ পিএম, ২৪ জানুয়ারী ২৫ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬ বার

প্রতিনিধি বান্দরবান : লুক্কায়িত মাইন মৃত্যুদূত হয়ে দেখা দিচ্ছে নাইক্ষংছড়িতে। যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে চোরাচালানে জড়িত তারাই লুক্কায়িত মাইনে আহত হচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরে মাইন বিস্ফোরণে নাইক্ষ্যংছড়িতে গুরুতর আহত হন মো. রাসেল। পরে তাকে মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। ভুক্তভোগীরা জানান, সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত রাসেলের ডান পায়ের গোড়ালি ক্ষতবিক্ষত হয়।

পুলিশ জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে তিনজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা সময়ে পৃথক তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁরা আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে নাইক্ষ্যংছড়ির আশারতলি সীমান্ত এলাকায়। শূন্যরেখা থেকে মিয়ানমারের কয়েক শ গজ অভ্যন্তরে সংঘটিত এ বিস্ফোরণে আলী হোসেন (৩০) নামের এক যুবক আহত হন। বিস্ফোরণে তাঁর বাঁ পা বিচ্ছিন্ন এবং ডান পা ঝলসে যায়। আহত আলী হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী ওই এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে।

পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একই সীমান্তের ৪৯ নম্বর পিলার এলাকায় আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। শূন্যরেখা থেকে মিয়ানমারের প্রায় ৪০০ মিটার অভ্যন্তরে ঘটা এই বিস্ফোরণে মো. রাসেল (২৫) নামের একজন আহত হন। তিনি সীমান্তবর্তী আশারতলি এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মজিবর রহমানে ছেলে।

অপর স্থলমাইনটি বিস্ফোরণ হয়েছে জামগছড়ি এলাকায়। এখানে বিস্ফোরণে আরিফ উল্লাহ (৩০) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। তিনি সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জাফর আহমদের ছেলে। তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাসেল ও আরিফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আশারতলি এলাকার বাসিন্দা ছৈয়দ কাশেম বলেন, আহত আলী ও রাসেলসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি সীমান্তের ৪৮ ও ৪৯ পিলারের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে সীমান্তের ওপারে গিয়েছিলেন। শূন্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমারের কয়েক শ গজ ভেতরে তাঁরা আহত হয়েছেন। সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা তাঁদের উদ্ধার করে এপারে নিয়ে আসেন। আলী হাসানের এক পা বিচ্ছিন্ন এবং অন্য পা ঝলসে গেছে। রাসেল পা, বুক ও মুখে আঘাত পেয়েছেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানান, আহত যুবকেরা সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমার থেকে সুপারি আনতে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হন। তিনি আরও বলেন, সীমান্তের আশারতলি, ফুলতলি, আমতলি ও লেমুছড়ি বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনেকেই নিয়মিত মিয়ানমারে যাতায়াত করেন। চোরাকারবারিরাও এসব পথ ব্যবহার করছে।

তবে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক বিস্ফোরণে তিনজন আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র দল আরাকান আর্মি সীমান্তে এসব স্থলমাইন পুঁতে রেখেছে।