নাইকো ঘুষ-মোর্শেদ খান মাহমুদুর মোশাররফসহ কয়েকজনকে কানাডীয় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ
বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা:
নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে দেশে ফিরে গেছে কানাডিয়ান রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের (সিআরএমপি) একটি দল। সাত দিনের সফরে এসে এ দলটি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খান ও সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ জজ আদালতে সাক্ষ্য দেন সিআরএমপির কর্মকর্তা লয়েড ডগলাস স্কপ। কানাডায় নাইকো দুর্নীতি মামলার অনুসন্ধান করেন তিনি। নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার ২৬ সাক্ষীর মধ্যে ৭ নম্বর সাক্ষী ডগলাস স্কপ।এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন পরিচালক সাহিদুর রহমান।
কানাডার নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি, রেজিস্ট্রেশন বাবদ ২৩ হাজার ৮০৫ টাকা এবং কানাডা ও আমেরিকা ভ্রমণ বাবদ পাঁচ লাখ কানাডিয়ান ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে।
২৭ নভেম্বর বুধবার লয়েড ডগলাস স্কপসহ তাঁর অন্য তিন সহকর্মী দেশে ফিরে গেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২১ নভেম্বর বাংলাদেশে আসার পর আরসিএমপির দলটি এম মোর্শেদ খান ও মাহমুদুর রহমানসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ধারণা করা হচ্ছে, নাইকো দুর্নীতি মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে তাদেঁর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অন্য বিষয়ও থাকতে পারে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। অনেক গোপনীয়তা রক্ষা করে জিজ্ঞাসাবাদের কাজটি শেষ করা হয়। এ ক্ষেত্রে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি। জানা গেছে, সিআরএমপির দলটি প্রয়োজনে আবারও বাংলাদেশে আসতে পারে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়ন ও তেল, গ্যাস আহরণে বহুজাতিক কোম্পানি নাইকোকে কাজ পাইয়ে দিতে বাংলাদেশে এসে লবিং, তদবির করেন কানাডার সাবেক সিনেটর ম্যাক হেরপ। ২০০৩ সালে ওই সফরের সময় তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খান ও সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এ-সংক্রান্ত একটি অভিযোগ তদন্ত করছে আরসিএমপি।
মাহমুদুর রহমান ও মোশাররফ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে গত জুলাই মাসে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে চিঠি পাঠায় আরসিএমপি। উভয় পক্ষের যোগাযোগ ও আলোচনা সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে সাবেক দুই মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল কানাডার রয়্যাল পুলিশ। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৃত্যুর তথ্য না থাকায় তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের কথা আরসিএমপির চিঠিতে উল্লেখ ছিল বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
সূত্রটি জানায়, এর আগে ২০০৮ সালে নাইকো কেলেঙ্ককারির তদন্তে বাংলাদেশে এসে তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কানাডার রয়্যাল পুলিশ।