‘নওরোয’ ও ‘মেহেরজান’ থেকে যেভাবে ঈদ এলো-
ডেস্ক রিপোর্টার : একসময় আরবে ‘নওরোয’ ও ‘মেহেরজান’ নামে দুটি উৎসব হতো। এ উৎসব পালন করতো একটি সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে উৎসবটি ইসলাম ধর্ম পালনকারীরা তেমন পছন্দ করতো না। তখন রাসুলুল্লাহ ওই পদ্ধতির পরিবর্তে মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধির পবিত্র স্পর্শমণ্ডিত এবং বহুবিধ কল্যাণধর্মী ঈদ-উল-ফিতরের কথা ঘোষণা করলেন।
তিনি বললেন, লিকুল্লি কওমিন ঈদ, হা-যা ঈদুনা-অর্থাত্ প্রত্যেক জাতির বাৎসরিক আনন্দ-ফূর্তির দিন আছে।
ঈদ উল ফিতর আরবি শব্দ যার অর্থ হচ্ছে উত্সব, আনন্দ, খুশি। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজানের অবসানে নতুন চাঁদ দেখামাত্র ছোট-বড়, ধনী-গরীব, প্রতিটি মুসলমানের হৃদয় আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, সংযম সাধনার পর ঈদের দিনে রোজাদারগণ শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে যান।
এই দিনে ধনী-গরীব, বাদশা-ফকির নির্বিশেষে সব মুসলমান এক কাতারে ঈদের নামাজ আদায় করে, একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে। ঈদ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উৎসব। ঈদ উল ফিতরের দিনটি প্রতিটি মুসলমান নারী ও পুরুষের জীবনে তাৎপর্যে ও মহিমায় অনন্য।
জানা গেছে, আইয়্যামে জাহেলিয়াত যুগে আরবে ‘নওরোয’ ও ‘মেহেরজান’ নামক দুইটি বাৎসরিক উৎসব ছিল অধিক জনপ্রিয়। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম মক্কা হতে মদীনায় হিজরত করে দেখতে পান যে, এই দুইটি জাতীয় উৎসবে মদীনার আবালবৃদ্ধবনিতা নানা প্রকার স্থূল খেলায় মেতে উঠতো।
ফলে ওই পদ্ধতির পরিবর্তে মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধির পবিত্র স্পর্শমণ্ডিত এবং বহুবিধ কল্যাণধর্মী ঈদ-উল-ফিতরের কথা ঘোষণা করলেন। তিনি বললেন, লিকুল্লি কওমিন ঈদ, হা-যা ঈদুনা-অর্থাত্ প্রত্যেক জাতির বাৎসরিক আনন্দ-ফূর্তির দিন আছে। ঈদের দিন হচ্ছে আমাদের জন্য সেই আনন্দ-উৎসবের দিন। এইভাবেই হিজরী দ্বিতীয় বর্ষে প্রবর্তিত হ’ল ঈদ।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়, ‘আজি আরাফাত ময়দান পাতা গায়ে গায়ে,/কোলাকুলি করে বাদশাহ্ ফকিরে, ভায়ে ভায়ে’।একমাস রোজার শেষে ঈদের আনন্দ প্রতিটি মানুষের মনে খুশির দ্যোতনা ছড়ালেও দরিদ্ররা কি সেই আনন্দ ভেলায় ভাসতে পারছে? কবির কণ্ঠে তাই ধ্বনিত হয়েছে, “জীবনে যাদের হররোজ রোজা ক্ষুধায় আসে না নিদ/মুমূর্ষু সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি আজ ঈদ?”