• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ধানমন্ডিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু


প্রকাশিত: ৩:৩৪ এএম, ১৮ মে ১৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৬ বার

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা ১৮ মে ২০১৪:

 

 

রাজধানীর ধানমন্ডিতে গতকাল শনিবার সকালে এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নূরজাহান বেগম (৫৫) নামের ওই গৃহকর্মী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপাচার্যের ফ্ল্যাটে কাজ করতেন৷ পুলিশ প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক বলে উল্লেখ করেছে৷
ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে উপাচার্য মাহবুব আলীর ফ্ল্যাটের পাশে অন্য দুটি ফ্ল্যাটের মাঝখানে সরু জায়গায় লাশটি পড়ে ছিল। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ওই এলাকার বিভিন্ন বাসার গৃহকর্মীরা উপাচার্যের ফ্ল্যাটের সামনে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নূরজাহানকে হত্যার অভিযোগ তুলে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ধানমন্ডি থানার ওসি সুদ করিম বলেন, নূরজাহানের শরীরে দাগ আছে। তবে এটা হত্যা না অন্য কিছু, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা জানা যাবে। এ ঘটনায় কাউকে আটকও করা হয়নি৷
গতকাল সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে লাশ দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
ওসি মাসুদ করিম বলেন, নূরজাহানের একটি স্যান্ডেল পাওয়া গেলেও আরেকটির হদিস মেলেনি। তাঁর শরীরের নিচে সাত-আট হাত লম্বা একটি রশি পাওয়া যায়। ওই রশিটি ছাদে কাপড় শুকানোর জন্য ব্যবহৃত রশির অবশিষ্টাংশ। ছাদের রশিটি ধারালো কোনো কিছু দিয়ে কাটা ছিল। ছাদ থেকে পড়লে মাথা ফেটে বা হাত-পা ভেঙে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি। আবার যেখানে লাশ পাওয়া গেছে, উপাচার্যের ফ্ল্যাট থেকে সেখানে যাওয়ার কোনো পথ নেই। ওসি বলেন, ‘এসব আলামত রহস্যজনক। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।’
গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকার বেশ কয়েকজন গৃহকর্মী ওই বাড়ির সামনে ‘বিচার চাই’, ‘ফাঁসি চাই’ বলে বিক্ষোভ করছেন৷
জানতে চাইলে গৃহকর্তা উপাচার্য মাহবুব আলী বলেন, স্ত্রী ও বিবিএপড়ুয়া এক সন্তানকে নিয়ে দোতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। দুই মাস আগে তাঁর গাড়িচালক নূরজাহানকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে আসেন। গত শুক্রবার রাতে তাঁরা টেলিভিশন দেখছিলেন। রাত সোয়া নয়টার দিকে নূরজাহান কাউকে কিছু না বলে বের হয়ে যান। সারারাত বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
মাহবুব আলী বলেন, নূরজাহান প্রায়ই বলতেন, আবদ্ধ ঘরে থাকতে তাঁর ভালো লাগছে না। এর আগেও একবার তিনি বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে রাস্তা থেকে নিয়ে আসা হয়। এরপর আবদুর রশিদ নামে নূরজাহানের এক ভাইপোকে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকবার ফোন করেছিলেন৷ কিন্তু কেউ আসেনি।
ওই ফ্ল্যাটবাড়িতে দুই পালায় চারজন নিরাপত্তাকর্মী কাজ করেন। রাতে তাঁরা ওই বাড়িতেই থাকেন। আবদুর রহিম নামের একজন তত্ত্বাবধায়কও আছেন।
রহিম লেন, রাত সোয়া নয়টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে ওই গৃহকর্মী কীভাবে ওই জায়গায় গেলেন, তা বুঝতে পারছি না। কারণ, ঠিক রাত আটটার দিকে ছাদের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছাদ থেকে কিছু পড়ারও শব্দ পাননি কেউ।