• মঙ্গলবার , ১৩ মে ২০২৫

ধর্ষণ রোধের কৌশ’লে নারী’কে অপমান!


প্রকাশিত: ৫:৪৪ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ১৭ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৮ বার

স্টাফ রিপোর্টার : এবার ধর্ষণ রোধের কৌশলে নারী’কে অপমান করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে! অষ্টম শ্রেণীর গার্হস্থ্য Home Economics_Coverবিজ্ঞান বইয়ে ওই পাঠটি দেয়া হয়েছে। এতে ধর্ষণরোধে ছাত্রীদের আত্মরক্ষামূলক নানা তালিম দিতে গিয়ে অন্যকে আকর্ষণ করে এমন পোশাক না পরা, বাড়িতে একা না থাকা, অপরিচিত কারও সঙ্গে বেড়াতে না যাওয়াসহ কয়েকটি কৌশল শেখানো হয়েছে। এসব বিষয় নিয়েই বিতর্ক ও আপত্তি উঠেছে।

বইটি প্রকাশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সপ্তম অধ্যায়ে যৌন নিপীড়নসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ আছে। ৬৫ নম্বর পৃষ্ঠার ৩ নম্বর পাঠে বলা হয়েছে, যৌন নিপীড়ন সমবয়সীরা ছাড়াও যেকোনো নিকটাত্মীয়, পরিচিত ব্যক্তি, বয়স্ক যেকোনো সদস্যের মাধ্যমে হতে পারে। এসব প্রতিকূল অবস্থা থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

সাবধানতার ব্যাপারে বলা হয়, বাড়িতে কখনোই একা না থাকা, পরিচিত-অপরিচিত কারও সঙ্গে একা বেড়াতে না যাওয়া, পাড়ার বখাটে দলের হয়রানিতে সরাসরি প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে কৌশলে উপেক্ষা করা। যেমন জুতা খুলে দেখানো, চড় দেখানো, গালাগাল ইত্যাদি না করে বুদ্ধির সঙ্গে পরিস্থিতি সামলাতে হবে। গার্হস্থ্যবিজ্ঞানের শিক্ষকদের মতে, এ পাঠে পরোক্ষভাবে নারীদের দায়ী করা হয়েছে। পোশাক সংক্রান্ত নির্দেশনা অযৌক্তিক। একজন মানুষ ঘরে নিরাপদ না থাকলে কোথায় থাকবে?

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী জাতিরকন্ঠকে বলেন, ‘আমার কাছে এ পাঠের বিষয়টি অশালীন মনে হয়েছে। দোষটা যেন নারীরই। এটা খুবই বিরক্তিকর। ভাবটা এমন- রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। তুমি তোমাকে রক্ষা কর। পারিবারিক-সামাজিক মূল্যবোধ ঠিক রাখলে এ ধরনের পাঠ লাগে না।’

জানা গেছে, গার্হস্থ্য বিজ্ঞানের এ বইটির প্রথম মুদ্রণ হয় ২০১২ সালে। পরে পুনর্মুদ্রণ করা হয় গত বছরের জুনে। বইটি রচনা করেছেন ৬ জন নারী লেখক। সম্পাদনা করেছেন দু’জন নারী। তবে আগামী বছরও এ বই ছাত্রীদের পড়তে হবে। কেননা বইটি জানুয়ারিতে বিতরণের জন্য ছেপে ইতিমধ্যে বিতরণ শুরু হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা জাতিরকন্ঠকে বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞ লেখক দিয়ে বই লিখিয়ে থাকি। তারা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে লেখেন। আমরা হস্তক্ষেপ করি না। এ বইটি ৬ জন নারী লেখক লিখেছেন ও সম্পাদনা করেছেন। তিনি বলেন, বই যে কোনো সময়ে সংশোধন করা যায়। যদি ওই পাঠের ব্যাপারে কোনো পরামর্শ থাকে তা গ্রহণ করা হবে।