ধর্ষণ মামলা নিতে হয়রানি ধান্ধাবাজি ওসি ফরমানসহ তিন কর্মকর্তা দোষী !
এস রহমান : ধর্ষণ মামলায় নিতে ওসি ফরমানসহ তিন কর্মকর্তা দোষী স্বাব্যস্থ হয়েছে পুলিশের তদন্তে। গঠিত
তদন্ত কমিটি বলেছে, পুলিশের ওই ৩ কর্মকর্তার গাফিলতি ধান্ধাবাজি ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে।শিগগির তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধর্ষণ মামলা নিতে বিলম্ব ও থানায় দুই তরুণীর সঙ্গে অসদাচরণের দায়ে তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। তারা হলেন- রাজধানীর বনানী থানার ওসি ফরমান আলী, পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিন ও গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মানস কুমার পোদ্দার।
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে ৭৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে মামলা করতে যাওয়া দুই তরুণীকে হয়রানি এবং তাদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির একটি সূত্র জাতিরকন্ঠ কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে সাফাত আহমেদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে গত ২৮ মার্চ বনানীর হোটেল রেইনট্রিতে ধর্ষণের শিকার হন দুই ছাত্রী। গত ৪ মে তারা থানায় মামলা করতে যান। তবে পুলিশ দু’দিন পর মামলা নেয়। ওই সময় বনানী থানার ওসির বিরুদ্ধে প্রভাবশালী আসামিদের রক্ষায় ২৫ লাখ টাকা নেওয়া এবং ঘটনার শিকার তরুণীদের হয়রানি করার অভিযোগ ওঠে।
এসব অভিযোগ তদন্তে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। ওই কমিটির সদস্য ছিলেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় এবং যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন, মামলা নিতে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে কিছু ব্যত্যয় হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের আলোকে তিনি বলেন, ‘মেজর কিছু না হলেও আইনের মাইনর কিছু ব্যত্যয় হয়েছে।’
মামলার পাঁচ আসামির সবাইকে গ্রেফতার করাকে পুলিশের আন্তরিকতার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের ওপর আস্থা রাখুন। কারও কোনো আইনের ব্যত্যয় ঘটলে তার দায়িত্ব পুলিশ নেবে না। ন্যায়বিচার যেন নিশ্চিত হয়, সে জন্য কাজ করব।
তদন্ত কমিটির এক সদস্য কে জানান, মামলা করতে গিয়ে দুই তরুণী হয়রানির যে অভিযোগ করেছেন তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। এ জন্য বনানী থানার ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত) এবং ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ঘটনার সময় গুলশান জোনের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদ ছুটিতে ছিলেন। ওই সময় ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন মানস কুমার পোদ্দার। তিনি ঘটনাটি সঠিকভাবে তদারকি করেননি। ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পরও পুলিশের ওই কর্মকর্তা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তা অবহিত করেননি।