• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সামনে নারী এমপিকে থাপ্পর


প্রকাশিত: ১২:৩৮ এএম, ১৯ আগস্ট ২৩ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৩ বার

ইসলামপুর প্রতিনিধি : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের উপস্থিতিতে জামালপুর-শেরপুর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হোসনে আরাকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এ ঘটনা ঘটে। তবে প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান জানান দলীয় কার্যালয় বা তার সামনে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী এমপি তার বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দলীয় কর্মসূচিতে আমাকে দাওয়াত দেওয়া হয় না।’ এ সময় ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম তেড়ে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের এক পর্যায়ে গায়ে হাত তোলেন। আনোয়ারুল বলেন, তোকে দাওয়াত দিতে হবে কেন? এ সময় আনোয়ারুল ইসলামকে না থামিয়ে টেবিল চাপড়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মহিলা এমপি হোসনে আরাকে ধমক দেন এবং চুপ থাকতে বলেন। পরে মহিলা এমপি হোসনে আরা আওয়ামী লীগ অফিস ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সদস্য ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হোসনে আরা রাত ১০টায় তার নিজ বাসভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন।সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সারা দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা ঘটনার প্রতিবাদে ১৭ আগস্ট সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আমি উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের আসনটি খালি দেখতে পাই এবং তার সম্মানে আমি দাঁড়িয়ে থাকি। পরে তিনি সভাস্থলে আসলে আমি তাকে বসতে দিয়ে আমার আসনে বসি এবং সবিনয়ে জানতে চাই, যে কোনো সভা সমাবেশের বিষয়ে আমাকে কেনো জানানো হয় না। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক বহিস্কৃত নেতা আনোয়ারুল ইসলাম আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে সে আমার হাতে থাপ্পড় মারেন।

নারী সংসদ সদস্য অভিযোগ করে বলেন, ইচ্ছা থাকলে প্রতিমন্ত্রী মহোদয় বিষয়টি তাৎক্ষণিক সুরাহা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটি করেননি বরং আমাকেই শাসিয়েছেন।উপজেলা যুব লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম (ভিপি বাবু) বলেন, দলের সভাপতি ও প্রতিমন্ত্রীর সামনে একজন দলীয় নেতা হয়ে মাননীয় মহিলা এমপির ওপর হামলা করবে, এটা অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। প্রতিমন্ত্রী মহোদয় ইচ্ছা করলে বিষয়টি ওই সময়ই সমাধান করতে পারতেন।

দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম আমাদের সময়কে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে মহিলা এমপির কোনো কথা কাটাকাটি হয়নি। মহিলা এমপি মহোদয়ই তার নিকট জবাব চেয়েছেন। কেনো তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। উত্তরে শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বলেছেন, এ বিষয়ে আপনি আমাকে বলেন কেন? আমি তো আর দপ্তর সম্পাদক নই। এইটা কি তার অপরাধ?

সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, এটা শোকের মাস। এ মাসের সকল কর্মসূচি দলীয় ফেইসবুক গ্রুপ ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় সকল নেতাকর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহিলা এমপি মহোদয় যে অভিযোগ করেছেন, এখানে শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলামের কোনো খারাপ ভূমিকা ছিলো না।

অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, মাননীয় মহিলা এমপি হোসনে আরা মহোদয়কে কোনো ধরনের গালিগালাজ বা গায়ে হাত তোলার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় মহিলা এমপি হোসনে আরার অভিযোগটি সত্য নয়। কারণ, আমি তাকে আমার পাশের চেয়ারে বসিয়ে সভার কার্যক্রম সমাপ্ত করেছি। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম মাননীয় এমপি হোসেনে আরার সাথে কোনো রকমের খারাপ আচরণ করেছেন বলে আমি দেখিনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখলেই বিষয়টি খোলসা হবে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য মাননীয় এমপি হোসনে আরা সভা থেকে বের হয়ে বিভিন্নভাবে কুৎসা রটাচ্ছেন। এতে আওয়ামী লীগ ও তার নিজেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।