‘দ্য ক্লিনটন’স ওয়ার অন উইম্যান’ বদরাগী হিলারীর আসল গোমর ফাঁস!
লাবণ্য চৌধুরী: রেগে গেলে নাকি তার মাথা ঠিক থাকে না! হোয়াইট হাউসের কর্মী থেকে দুদে গোয়েন্দা, এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন- হিলারি ক্লিনটনের মেজাজকে ভয় পান সবাই! পারিবারিক ঝামেলায় বহুবার তার হিংস্রতার শিকার হতে হয় স্বামী তথা সাবেক প্রেসিডেন্টকে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও ফার্স্ট লেডি হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটনের দাম্পত্য জীবন নিয়ে চাঞ্চল্যকর এমন সব তথ্য উঠে এসেছে ‘দ্য ক্লিনটন’স ওয়ার অন উইম্যান’ নামের বইতে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক রজার স্টোন তার লেখা বইটিতে দাবি করেছেন, হিলারির হাতে বিল ক্লিনটনের মার খাওয়ার দীর্ষ ইতিহাস রয়েছে। ক্লিনটনকে ঘরের দরজা বন্ধ করে মারধর করতেন তার স্ত্রী হিলারি।
নানা সময়ে হিলারি শক্ত জিনিস ছুড়ে বিলকে আহত করেছেন, আঁচড়ে-কামড়ে রক্তাক্ত করার মতো ঘটনাও প্রচুর ঘটেছে, বলে দাবি করেছেন রজার স্টোন।
যুক্তরাষ্ট্রর রাজনীতিতেও বেশ চর্চিত নাম রজার স্টোন; তাকে ঘিরেও রয়েছে বহু বিতর্ক। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোলান্ড ট্র্যাম্পের শিবির ছেড়ে চলে যাওয়ায় তাকে নানা টিকা-টিপ্পনি শুনতে হচ্ছে। এহেন ঝানু রাজনৈতিক বিশ্লেষকের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের দীর্ষদিনের সম্পর্ক । বিশেষ করে ক্লিনটনদের সঙ্গে তার যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা ছিল বলেও শোনা যায়। তারই সুবাদে নিজের বইয়ে হিলারি-বিলের দাম্পত্য জীবনের অশান্তি সম্পর্কে বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ করেছেন স্টোন, যা হিলারির শান্তশ্রী ভাবমূর্তি থেকে একেবারেই আলাদা।
স্টোন জানিয়েছেন, ১৯৯০ সালের মার্চে বাবার মৃত্যুশয্যায় পাশের উপস্থিতি থাকতে লিটল রক, আর্কে উড়ে যেতে হয় হিলারিকে। ঠিক সেই সময় হোয়াইট হাউসের অতিথি হয়ে আসেন বিখ্যাত মার্কিন গায়িকা-নায়িকা বারবারা স্ট্রেইল্যান্ড; যিনি আবার বিলের একনিষ্ঠ ভক্ত। রাতে প্রেসিডেন্টের আতিথ্যগ্রহণ করে হোয়াইট হাউসে থেকে যান বারবারা । খবর কানে যেতেই রাগে কাপতে কাপতে ফিরে আসেন হিলারি। পরে বিলের গলায় দীর্ঘ আচড়ের দাগ নিরাপত্তাকর্মী ও মিডিয়ার ক্যামেরার নজর এড়ায়নি।এ ব্যাপার ধামাচাপা দিতে সে সময় বিলের প্রেস সচিব ডিডি মায়ার্স বিবৃতি দিয়েছিলেন, দাড়ি কামাতে গিয়ে গলায় আচড় লেগেছে প্রেসিডেন্টের। ১৯৯৯ সালে অবশ্য আসল কথা লেখক গেইল শিহির কাছে স্বীকার করেন মায়ার্স।
আরাকানসাসের গভর্নর থাকাকালে ক্লিনটনদের ঘরোয়া মারপিট চরম আকার নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন আরেক লেখক ক্রিস অ্যান্ডারসন। তার ভাষ্য মতে, একবার মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে স্বামীকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের তাকে খুজতে পাঠান হিলারি। বিল ফিরে এলে রান্নাঘর থেকে ভেসে আসে, কাচ ভাঙার আওয়াজ ও হিলারির চিৎকার ও গালাগালির শব্দ। সকালে ঘর সাফ করতে গিয়ে এন্তার কাপ-ডিশের ভাঙা টুকরোর সঙ্গে মেলে উপড়ে নেওয়া কাবার্ডের পাল্লা।
এমনকি, নানা সরকারি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে প্রেসিডেন্টের লিম্যুজিনের ভেতরেও চলত ক্লিনটন দম্পতির ঝগড়া। গাড়িতে হাতের কাছে যা পেতেন তা-ই ছুড়ে মারতেন হিলারি। তৎকালীন হোয়াইট হাউসের এক গাড়িচালক জানিয়েছেন, পরস্পরের উদ্দেশে জঘন্যতম ভাষায় অভিযোগ ছুড়ে দিতেন দুজনেই।
তবে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর আগের মুহূর্তে চকিতে স্বাভাবিক হতে পারার বিরল ক্ষমতাও তাদের অনায়াসলব্ধ ছিল। কেউ টেরই পেতেন না, এতক্ষণ কি খণ্ডযুদ্ধ ঘটে গিয়েছে!, জানিয়েছেন সেই চালক। হিলারির দাপটের সামনে প্রেসিডেন্টের সর্বক্ষণ কুঁকড়ে থাকার স্বাক্ষী ছিলেন তিনি।সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের আগেই এ বইটি বাজারে পাওয়া যাবে। আগামী ১৩ অক্টোবর বইটে বাজারে আসছে।
তবে স্টোনের বইয়ে লেখা তথ্যের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এই বিষয়ে ডেইলি মেইলকে কোনো মন্তব্য করেত রাজি হননি হিলারি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
শুধু তাই নয়, রজার লিখেছেন, কঠিন বস্তু দিয়ে আঘাত করা ছাড়াও আঁচড়, খামচি সবই কেটে বিলকে রক্তাক্ত করেছেন হিলারি।তবে এটি অবশ্য প্রথম নয়, এর আগে ১৯৯৯ সালে হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন প্রেস সেক্রেটারিও এক বইতে হিলারির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন। ফলে নতুন করে অভিযোগ উঠায় বিব্রত হয়েছেন হিলারি ক্লিন্টন।
এর আগে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন হিলারি। এবার সেইমাত্রায় নতুন করে ঘি ঢেলেছে হিলারির স্বামী পেটানোর এ চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ওই বইতে স্টোন বলেছেন, অনেক সময় মার খেয়ে রক্তাক্ত হতেন সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট; সেই মারের দাগ থাকত ক্লিনটনের শরীরজুড়ে।
স্টোন তার ওই বইতে লিখেছেন, স্ত্রী হিলারির মারের পর রক্তাক্ত অবস্থায় দেখার পর ক্লিনটনের কাছে কেউ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলতেন, শেইভ করতে গিয়ে কেটে গেছে।
বইটিতে আরও দাবি করা হয়েছে, মনিকা লিউনিস্কির সঙ্গে গোপন সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পর সবার সামনে ক্লিনটনকে থাপ্পড় কষিয়েছিলেন হিলারি।স্টোন তার ওই বইতে লিখেছেন, স্ত্রী হিলারির মার খেয়ে অনেক সময় রক্তাক্ত হয়ে যেতেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কেউ জিজ্ঞাসা করলে ক্লিনটন বলতেন, শেভ করতে গিয়ে কেটে গিয়েছে।বইটিতে আরও দাবি করা হয়েছে, মনিকা লিউনিস্কির সঙ্গে সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পর ক্লিনটনকে প্রকাশ্যে থাপ্পড় কষিয়েছিলেন হিলারি।
বইটি এমন একটা সময় প্রকাশিত হতে চলেছে যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হিলারি। এরইমধ্যে পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে খানিকটা এগিয়েও রয়েছেন হিলারি।
অবশ্য প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন হিলারি। সর্বশেষ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ই-মেইল ব্যক্তিগত সার্ভারে রাখার অভিযোগ রয়েছে হিলারির বিরুদ্ধে। এসব ইমেইলের কিছু কিছু সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।