• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

দেশে ৬ মাসে ক্রসফায়ার-২০৪ জন


প্রকাশিত: ৩:২৪ পিএম, ২ জুলাই ১৯ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩১০ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশে গত ৬ মাসে ক্রসফায়ার-২০৪ জন।একই সময় দেশে ৬৩০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩৭ নারীকে। আর যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনজন নারী ও দুজন পুরুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া ছয় মাসে ‘ক্রসফায়ারে’ মারা গেছেন ২০৪ জন এবং সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন ২০ জন।মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ছয় মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় মাসে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতন, এসিড নিক্ষেপসহ নারী নির্যাতনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে ১০৫ নারীর ওপর।আসক বলছে, গত ছয় মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২৭ নারী। এর মধ্যে যৌন হয়রানির কারণে ৮ জন আত্মহত্যা করেছেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৩ নারী ২ পুরুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিক্ষার হয়েছেন ১২৪ জন নারী-পুরুষ।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আসক বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হেফাজতে/‘ক্রসফায়ারে’ মোট ২০৪ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে র্যাবের ক্রসফায়ারে ৫৯ জন, পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ ৯২ জন, ডিবি পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ ১২ জন, বিজিবির ‘ক্রসফায়ারে’ ২৮ জন নিহত হয়েছে।

আসক বলেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশুদের হত্যা এবং নির্যাতনের সংখ্যা আশঙ্কাজনক। গত ছয় মাসে ৮৯৫ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ১০৪ শিশু হত্যার শিকার হয়েছে, ৪০ শিশু আত্মহত্যা করেছে, নিখোঁজের পর এক শিশু এবং বিভিন্ন সময়ে ১৭ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জন শিশুর।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় মাসে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন ২০ জন। এর মধ্যে ১৮ জন গুলিতে এবং শারীরিক নির্যাতনে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৫ জন ও অপহরণের শিকার হয়েছেন ১৯ জন। এছাড়া গত ছয় মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৮টি প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দির ও পূজাম-পে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৯ জন। এ ছাড়া আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১৬টি বসতঘর ও ৪টি দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ৫০ জন।

গত ছয় মাসে ৫৫ সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। এ ছাড়া এক সাংবাদিকের রহস্যজনক মৃত্যু ও একজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ছয় মাসে এসিড নিপের শিকার হয়েছেন মোট ১১ নারী।আসক বলছে, ধর্ষণের এ সংখ্যা পুরো চিত্র তুলে ধরে না বলেই মনে করি। পত্রিকার প্রতিবেদন ও নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তারপরও যে সংখ্যা পাওয়া গেছে তা ভয়াবহ।