‘দেশে ব্যবসার পরিবেশে অবনতি’
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ব্যবসার পরিবেশের আরও অবনতি হয়েছে। এবার ব্যবসা পরিবেশ সূচকে অর্জিত পয়েন্ট হয়েছে ৫৮ দশমিক ৭৫ যা গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ছিল ৬১ দশমিক ৯৫। চলতি অর্থবছরের ব্যবসা পরিবেশ সূচক বা বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্সে (বিবিএক্স) এ তথ্য উঠে এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এমসিসিআইয়ের গুলশান কার্যালয়ে এ জরিপের চিত্র তুলে ধরা হয়। তৃতীয়বারের মতো বিবিএক্স জরিপ পরিচালনা করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ। ব্যবসায়ীদের মধ্যে করা জরিপের মাধ্যমে এ সূচক তৈরি করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবিরসহ এমসিসিআই নেতারা।বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স প্রকাশ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ।
চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জরিপে ব্যবসা পরিবেশ সূচকে অর্জিত পয়েন্ট ৫৮ দশমিক ৭৫। গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে অর্জিত সূচক ছিল ৬১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যবসা পরিবেশের স্কোর ৩ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। জরিপটি করা হয়েছে ১২ খাতের ওপর। যার মধ্যে রয়েছে কৃষি ও বনায়ন, ইলেকট্রনিকস ও হালকা প্রকৌশল, নির্মাণ, আর্থিক মধ্যস্থতাকারী, খাদ্য ও পানীয়, চামড়া ও ট্যানারি, ওষুধ ও রাসায়নিক, তৈরিপোশাক, বস্ত্র, আবাসন, পরিবহন, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা।
ব্যবসা ও ব্যবসা শুরু, জমির প্রাপ্যতা, আইনকানুনের তথ্য পাওয়া, অবকাঠামো সুবিধা, শ্রম নিয়ন্ত্রণ, বিরোধ নিষ্পত্তি, বাণিজ্য সহজীকরণ, কর পরিশোধ, প্রযুক্তি গ্রহণ, ঋণের প্রাপ্যতা এবং পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ ও মান- এই ১১ সূচকের ওপর ভিত্তি করে জরিপ করা হয়। এবার ১১টি সূচকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ঋণের প্রাপ্যতা সূচকে। এ সূচকটিতে প্রাপ্ত পয়েন্ট ২৮ দশমিক ১১। গত বছরের জরিপে ব্যবসায়ীদের ব্যাংকঋণ পাওয়ার বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে বলে বলা হয়েছিল।
এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সামগ্রিকভাবে ব্যবসার পরিবেশ সূচকের ১০০ নম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬১.০১, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কিছুটা বেড়ে হয় ৬১ দশমিক ৯৫। ২০২২ সালের সূচকের মানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ার বড় কারণ ছিল ১০টি সূচকের মধ্যে ৪টির অবস্থা খারাপ হওয়া, বাকিগুলো উন্নতির দিকে ছিল।
বাংলাদেশ ২০২২ সালের মতো ২০২৩ সালেও সবচেয়ে ভালো করেছে অবকাঠামোতে, যেখানে ১০০-এর মধ্যে স্কোর ৭১ দশমিক শূন্য ৮। তাছাড়া ব্যবসা শুরুর সূচকে ৬২ দশমিক ৭৪, জমির প্রাপ্যতা সূচকে ৫৩ দশমিক ১১, আইনকানুনের তথ্যপ্রাপ্তি সূচকে ৬৮ দশমিক শূন্য ৪, শ্রম নিয়ন্ত্রণে ৭০ দশমিক শূন্য ৪, বিরোধ নিষ্পত্তিতে ৬২ দশমিক ৩৮, প্রযুক্তি গ্রহণে ৬৩ দশমিক ৫০, বাণিজ্য সহজীকরণে ৬০ দশমিক ৮৭, কর পরিশোধে ৫৪ দশমিক ৭৪ এবং পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ ও মানে ৫১ দশমিক ৫৯।
এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, দেশের সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ সম্পর্কে বোঝার জন্যই জরিপটা করা হয়েছে। কোন খাতে কেমন নীতি গ্রহণ করা দরকার। সে বিষয় ধারণা দিতে তৃতীয়বারের মতো, এ জরিপ করা হয়েছে। এতে নীতিপ্রণেতা ও বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারবেন কোন পথে চলতে হবে।