• বৃহস্পতিবার , ২৮ নভেম্বর ২০২৪

“দেশের সকল আদালত ডিজটালাইজেশন ইন্টারনেট ও ওয়াইফাইয়ের আওতায় আসছে”


প্রকাশিত: ৫:৫৬ পিএম, ৩ মে ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৫২ বার

chif justic-www.jatirkhantha.com.bdবিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, দেশের সকল আদালতকে ডিজিটালাইজেশন করে ইন্টারনেট ও ওয়াইফাইয়ের আওতায় নিয়ে এসে প্রত্যেক বারে ই-লাইব্রেরি চালু করার চিন্তাভাবনা চলছে।অপরাধী সনাক্তকরণে আমেরিকার সহায়তায় একটি বিশ্বমানের ফরেনসিক লাইব্রেরি স্থাপনের কথাও তিনি ঘোষণা করেন।

সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, কাগজে-কলমে বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেও আমি বলব বাস্তবে আমরা স্বাধীন নই। প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে না। তাই ষাটভাগ জেলায় আমরা কোর্ট বিল্ডিং নির্মাণ করতে পারছি না। প্রশাসনকে বলব আপনারা আমাদেরকে সহায়তা করুন।

তিনি বলেন, প্রশাসনের কারণে আমরা আরও পিছিয়ে যাচ্ছি। আমি আমার বিচারকদের বসতে জায়গা দিতে পারছি না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন আইনজীবী সমিতি আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নিম্ন আদালতে ২৮ লাখ মামলা বিচারাধীন। প্রচলিত আইনের এতো মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। তাই আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি সাক্ষ্য আইনে পরিবর্তন করা যায় কি না। হাইকোর্টে সরাসরি যে সকল মামলা অ্যাডমিরালিটি স্যুট, রিট দাখিল হয় সেখানে মামলা তো এতো সাক্ষ্য গ্রহণ করি না।

তাই দেওয়ানি মামলায় সাক্ষ্য আইনে পরিবর্তন এনে বাদী এবং বিবাদী পক্ষ অ্যাভিডেভিটের মাধ্যমে সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেবেন। এরপর বিচারক তা পর্যালোচনা করে কোন কোন বিষয়ের ওপর জেরার সুযোগ দেবেন তা নির্ধারণ করবেন। তাহলেই সময় বাঁচবে। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। এ ব্যাপারে আমি আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করছি। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি সেমিনার আয়োজন করা হবে।’

তিনি বলেন, একটি ফৌজদারি মামলা ২০ বছরেও নিষ্পত্তি হচ্ছে না। নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে সাক্ষী না পাওয়া, বিদেশে যাওয়া, পুলিশি সাক্ষী বদলি হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই সকল ক্ষেত্রে সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয় ভাবা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিদেশি কিছু সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে।

তিনি আরো বলেন, সিভিল মামলায় ইস্যু গঠন এবং ফৌজদারি মামলায় চার্জ গঠনের পূর্বে বাদী ও বিবাদীদের হলফনামা গ্রহণ করে সেখান থেকে তর্কিত বিষয় নির্ধারণ করে শুধু সে বিষয়ের ওপর জেরা গ্রহণ করলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হবে।
এ লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন প্রণেতা, আইন বিশারদসহ প্রবীণ আইনজীবীদের মতামত গ্রহণ করছি। শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি সেমিনার করে যার যার চিন্তা ভাবনা গ্রহণ করা হবে।

অপরাধী সনাক্তকরণে আমেরিকার সহায়তায় একটি বিশ্বমানের ফরেনসিক লাইব্রেরি স্থাপনের কথাও তিনি ঘোষণা করেন।
দেশের সকল আদালতকে ডিজিটালাইজেশন করে ইন্টারনেট ও ওয়াইফাইয়ের আওতায় নিয়ে এসে প্রত্যেক বারে ই-লাইব্রেরি চালু করার কথাও তিনি জানান।

তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গার ওপারে কেরানীগঞ্জে কারাগার চলে যাচ্ছে। সেখানে কারাগার গেলে সেখান থেকে আসামিদের এ আদালতে হাজির কষ্টসাধ্য হবে এবং সময়ও বেশি লাগবে। সেখানে অনেক জায়গা আছে। আগামী ২০/৩০ বছর পর আইনজীবীর সংখ্যাধিক্যের কথা বিবেচনা করে পুরান ঢাকা থেকে নিম্ন আদালত কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের প্রস্তাব করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, সেখানে আদালত হলেই সবার জন্য সুবিধা হবে। সেখানে অনেক জায়গা আছে তাই পরিকল্পিতভাবে সব কিছু করা যাবে।

মেট্রোপলিটন আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আসকির খানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান, মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা, চিফ জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবার রহমান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার সাহা, ঢাকা বারের সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ঢাকার বিভিন্ন আদালতের বিচারক ও আইনজীবীরা।