দুর্বার গতিতে বাংলাদেশ দল এগিয়ে-একেবারে ছয়ে নেমে গেছে পাকিস্তান
স্টাফ রিপোর্টার.ঢাকা: বিশ্বকাপের পর থেকেই বাংলাদেশ দল এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। পাকিস্তানকে ওয়ানডে সিরিজ হারানোর পর বাংলাদেশ র্যাঙ্কিংয়ে উঠে আসে ৮ নম্বরে। এবার কিছু সুখবর মিলল টেস্ট র্যাঙ্কিংয়েও। পাকিস্তানের সঙ্গে প্রথম টেস্ট ড্র করে ১-০তে সিরিজ হারার পরও বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ৩২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩। আর আজ আইসিসির টেস্ট দল র্যাঙ্কিং বার্ষিক হালনাগাদ করার ফলে ৬ রেটিং পয়েন্ট বেড়ে ৩৯ হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটে গত ১৪ বছরে এটাই বাংলাদেশের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ রেটিং পয়েন্ট।
বাংলাদেশ থেকে শেষ পর্যন্ত টেস্ট সিরিজ জিতে গেলেও বড় দুঃসংবাদ শুনতে হয়েছে পাকিস্তানকে। তিন নম্বর থেকে ধপাস করে একেবারে ছয়ে নেমে গেছে মিসবাহ-উল-হকের দল।
র্যাঙ্কিং পদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী, রেটিং হিসাব করা হয় বিগত তিন থেকে চার বছরের ম্যাচের ফলাফলের ওপর। প্রত্যেক বছরের মে মাসের শুরুতে বিগত চার বছরের সবচেয়ে পুরাতন বছরের ফলাফল বাদ দেওয়া হয়। এভাবে নতুন করে আবার মাস যোগ হতে থাকে। ১২ মাস পর আগামী বছরের মে মাসে আবার র্যাঙ্কিংয়ের বার্ষিক হালনাগাদ হবে এবং চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন বছরের ফলাফল বাদ যাবে।
এই প্রক্রিয়াকে ‘ডাটা আপডেটিং’ বলে। এর ফলে কোনো ম্যাচ না খেলার ফলেও দলগুলোর র্যাঙ্কিংয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। ২০১২ সালের আগ পর্যন্ত র্যাঙ্কিংয়ের বার্ষিক হালনাগাদ হতো প্রতি বছরের আগস্ট মাসে। এরপর থেকে প্রতি বছরের মে মাসেই করা হচ্ছ। বার্ষিক হালনাগাদের ফলে নতুন র্যাঙ্কিং থেকে বাদ পড়েছে আগস্ট ২০১১ থেকে আগস্ট ২০১২ পর্যন্ত ম্যাচগুলো। ওই এক বছরে বাংলাদেশ ৩টি সিরিজে ৫টি ম্যাচ খেলে একটি ড্র করেছিল, হার বাকি চারটিতেই।
এমনকি টেস্ট ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের ফিরে আসা ম্যাচেও হেরেছিল বাংলাদেশ। যার ফলে ওই ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ খুবই কম পয়েন্ট পেয়েছিল। বার্ষিক হালনাগাদের ফলে ওই বাজে পারফরমেন্সের ম্যাচগুলো বাদ যাওয়ায় সুবিধা হয়েছে বাংলাদেশের। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বড় দলের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচ ড্র এবং জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার ফলে বাংলাদেশের রেটিং ওপরের দিকে গিয়েছে।
র্যাঙ্কিংয়ের বার্ষিক হালনাগাদ হলেও অবস্থানগত পরিবর্তন অবশ্য বাংলাদেশের হয়নি। তারা আছে নয় নম্বরেই। এক নম্বর অবস্থান ধরে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তাদের রেটিং পয়েন্ট বেড়ে ১২৪ থেকে ১৩০ হয়েছে। র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয়েছে নিউজিল্যান্ড এবং ভারতের। অবনতি হয়েছে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার। আর আগের অবস্থানেই আছে দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের পাশাপাশি রেটিং পয়েন্ট বেড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কমেছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের।
ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের আটে উঠে আসা, সাতে উঠে যাওয়ার হাতছানি। ওয়ানডেতে উন্নতির ছাপটা স্পষ্টই। আক্ষেপ ছিল টেস্ট নিয়ে। গত ১৪ বছরে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে সেরা রেটিং পয়েন্ট পাওয়াটা আশাবাদীই করছে। ধীরে হলেও ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদার খেলাটাতেও আছে উন্নতির লক্ষণ। সেটা আরও ধারাবাহিক করাই এখন বিসিবির দায়িত্ব।
পজিশন – দল – রেটিং – ব্যবধান
১. দক্ষিণ আফ্রিকা – ১৩০ – আগের অবস্থানেই আছে, রেটিং ৬ বেড়েছে
২. অস্ট্রেলিয়া – ১০৮ – আগের অবস্থানেই আছে, রেটিং ১০ কমেছে
৩. নিউজিল্যান্ড – ৯৯ – দুই ধাপ ওপরে উঠেছে, রেটিং পরিবর্তন হয়নি
৪. ভারত – ৯৯ – তিন ধাপ ওপরে উঠেছে, রেটিং ৪ বেড়েছে
৫. ইংল্যান্ড – ৯৭ – এক ধাপ নিচে নেমেছে, রেটিং ৫ কমেছে
৬. পাকিস্তান – ৯৭ – তিন ধাপ নিচে নেমেছে, রেটিং ৫ কমেছে
৭. শ্রীলঙ্কা – ৯৬ – এক ধাপ নিচে নেমেছে, রেটিং পরিবর্তন হয়নি
৮. ওয়েস্ট ইন্ডিজ – ৮৪ – আগের অবস্থানেই আছে, রেটিং ৫ বেড়েছে
৯. বাংলাদেশ – ৩৯ – আগের অবস্থানেই আছে, রেটিং ৬ বেড়েছে
১০. জিম্বাবুয়ে – ৫ – আগের অবস্থানেই আছে, রেটিং ১৩ কমেছে