‘দুর্নীতিবাজদের নিয়ে আন্দোলন করলে তা সফল হবে না-গয়েশ্বর
স্টাফ রিপোর্টার : দলের গুটি কয়েক নেতার দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘দুর্নীতিবাজ লোক নিয়ে আন্দোলন করলে তা সফল হবে না। সুশৃঙ্খল লাখ লাখ কর্মী থাকার পরও আমরা কেন আন্দোলন করতে পারছি না তার জবাব খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দলে পদ পাওয়াটাই মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুলশান-বনানীতে না থাকলে যাদের রাতের ঘুম হয় না তাদের দিয়ে আন্দোলন হবে না।’জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভিআইপ লাউঞ্জে শুক্রবার দুপুরে গণসংস্কৃতি দলের ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘দুর্নীতির দু:শাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ- বিএনপির ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের এই স্লোগান জনগণও বিশ্বাস করে। তবে এর আগে বিএনপির ডানে- বায়ে তাকিয়ে দেখতে হবে দুর্নীতিগ্রস্থ নেতা আছে কি না। কারণ দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ নিয়ে চলা যায়। কিন্তু আন্দোলনের মূল লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় না।’
বর্তমান দেশে নির্বাচনের নামে খুন ও হত্যার মহাউৎসব চলছে এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এজন্য জনগণ এ নির্বাচন চায় না বলার পর আবার নির্বাচনে যেতে হবে কেন?’ বিএনপির নির্বাচন বর্জনের গণ-ডাক দিয়ে কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো? আবার নির্বাচনে যাওয়ার পর, নির্বাচন বৈধ হচ্ছে না বলে কেন কান্না করছে?’
বিএনপির যে সকল নেতাকর্মীরা দলকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার গেরান্টি দেয়নি। কিন্তু এরপরও কেন নির্বাচনে যাওয়া ঘোষণা দিলেন। আবার নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না বলে, কেনো কান্না করছেন।’
পহেলা বৈশাখ ও নববর্ষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পহেলা বৈশাখের আগে ঘোষণা দিলেন তিনি ইলিশ খাবেন না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি একদিনের জন্য কেন ইলিশ ছাড়লেন? আর আপনি (শেখ হাসিনা) ভোট চুরি ও ভোট ডাকাতি বন্ধ করে গণতন্ত্র খাওয়া বন্ধ করবেন কি না, তা জাতি জানতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘সরকার মনে করছে বিএনপি আর রাজপথে নামতে পারবে না। আমিও জানি না, কবে আন্দোলনে নামবো। কিন্তু দেশবাসীর জাতীয়তাবাদী মনের ভূমিকম্প কখন কোন অবস্থায় হবে, এর ক্ষয়ক্ষতি কী হবে, তা সরকার বুঝতে পারছে না। আমরাও বুঝতে পারছি না।’
গত বুধবারের ভূমিকম্প প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র ফিরে আনার জন্য মানুষের মনেও তীব্র ভুমিকম্প হচ্ছে। আর এই ভূমিকম্প এক সময় মনের ভিতর থেকে বাইরে বের হবেই। সেই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যে কতো হবে তা সরকার অনুমান করতে পারছে না।’
‘যদি অনুমান করতে পারতো তাহলে সকলকে নিয়ে সমাধানের পথ খুঁজতো। আমার মতে, একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনি এই পথ থেকে উত্তোলনের এক মাত্র সমাধান’, বলেন গয়েশ্বর।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ইমতিয়াজ হোসেন চপলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক ড. সুকোমল রড়ুয়া, জাসাসের সভাপতি এম এ মালেক, গণ সংস্কৃতি দলে প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এস আল মানুষসহ প্রমুখ।