• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

দুদক ধরবে রাঘববোয়াল হচ্ছে গোয়েন্দা-নিজস্ব বাহিনী


প্রকাশিত: ৯:৪৯ এএম, ২০ মার্চ ১৭ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৯ বার

fff

বিশেষ প্রতিনিধি :  গোয়েন্দা অনুসন্ধান ও নিজস্ব বাহিনী হচ্ছে দুদকে।
দুর্নীতি দমন কার্যক্রম জোরদার করতে এ বিশেষ ইউনিট গঠন করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়াও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করতে গঠন করা হবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট। স্বপ্রণোদিত হয়ে দুর্নীতির খোঁজ করা ও দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে হবে গোয়েন্দা ইউনিট।

এদিকে দুদকের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার ও আসামি ধরার সময় নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে এনফোর্সমেন্ট ইউনিট গঠন করা হবে।  দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে কমিশন সভায় বিশেষ ইউনিট গঠনের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে দুদকের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালীকরণসহ কতিপয় সিদ্ধন্ত নেওয়া হয়।

দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বলেন, কমিশন সভায় সেসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ কাজ গতিশীল হবে। কমিশন স্বাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে কাজ করতে চায়। সে জন্যই চলতি বছরের প্রথম কমিশন সভায় সেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম, দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামালসহ সব বিভাগের মহাপরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

দুদক সূত্র জানায়, আদালতে দুর্নীতিবাজদের শাস্তি হলে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত তাদের সম্পদের বিষয়ে কিছু হয় না। এখন থেকে ওই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আবেদন জানানো হবে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের রিসিভার হওয়া ও ওই সম্পদ রাষ্ট্রীয় খাতে জমা দিতে কাজ করবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট।

সভা সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতির দায়ে আদালত যার বিরুদ্ধে শাস্তির রায় দেবেন তার সম্পদ বংশধরদের ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রীয় খাতে জমা দেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে দুর্নীতির যেসব অভিযোগ বাক্সে জমা পড়ে বা ডাকে পাঠানো হয় সেগুলোই যাচাই-বাছাই করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া সংবাদপত্রে প্রকাশিত দুর্নীতির খবরও আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। এবার দুদক কর্মকর্তারা নিজের উদ্যোগে দুর্নীতি খুঁজে বের করে কমিশনে পেশ করবেন। পরে কমিশন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেবে। স্বপ্রণোদিত হয়ে দুর্নীতি খুঁজে বের করতেই নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট গঠন করা হচ্ছে।

এ ছাড়া দুদকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও দিন বা রাতে আসামি ধরার সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে অ্যানফোর্সমেন্ট ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ৪০ সদস্যের আর্মড ফোর্স চাওয়া হবে সরকারের কাছে। পর্যায়ক্রমে এই ইউনিটে দুদকের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা হবে।

জানা গেছে, দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামিদের হেফাজতে রাখতে আগামী কিছু দিনের মধ্যে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় কম্পাউন্ডের ভেতরে নিজস্ব হাজতখানা নির্মাণ করা হবে। ওই হাজতখানার নিরাপত্তায়ও আর্মড ফোর্স মোতায়েন করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমিশন সভায় আরও ১৪টি জেলায় দুদকের নতুন অফিস চালু, জনবল ও অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে ২২টি জেলায় দুদকের অফিস রয়েছে। আরও ১৪টি জেলায় নতুন অফিস চালু করা হলে মোট ৩৬ জেলায় অফিস থাকবে। দুদকে আরও এক হাজার ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। বর্তমানে দুদকের জনবল এক হাজার ২৬৪ জন। নতুন জনবল নিয়োগ দেওয়া হলে মোট জনবল হবে দুই হাজার ২৯০ জন। অতিরিক্ত জনবল পরিচালনার জন্য সরকারের কাছে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দও চাওয়া হবে।

এ ছাড়া  সভায় দুদকের তথ্যপ্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও জনসংযোগ ইউনিট শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে দুদক আইনের বিধিমালা সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। ক্রিমিনাল ‘ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট সংশোধনের সুপারিশ করারও সিদ্ধান্ত হয়।