দুই বোনকে গণধর্ষণ করে ভিডিও-৫ ধর্ষকের লাখ টাকা চাঁদাবাজি
চরভদ্রাসন প্রতিনিধি : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় রাস্তা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে মামাতো-ফুফাতো দুই বোনকে (১৫) ও (১৪) গণধর্ষণ করেছে পাঁচ লম্পট। এর পর ধর্ষণের ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে।
গত ১৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটলেও সম্মানের ভয়ে চুপ ছিল ধর্ষিতাদ্বয়ের পরিবার। কিন্তু সম্প্রতি ধর্ষণের ভিডিওচিত্র পূঁজি করে এক লাখ টাকা না পেয়ে ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ছেড়ে দেয় ধর্ষকরা। এর পরই ঘটনা জানাজানি হয়।
জানা যায়, চরহরিরামপুর ইউনিয়নের স্কুলছাত্রী মামাতো-ফুফাতো দুই বোনকে রাস্তা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে চরশালেপুর গ্রামের আশ্রয় কেন্দ্রের পাশে ফসলী মাঠের মধ্যে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পাঁচ যুবক।
তারা হল-উক্ত ইউনিয়নের চরশালেপুর গ্রামের উজ্জল খান (২৫), শুকুর আলী সিকদার (২৬), সিরাজ সেখ (২৫), ইলিয়াস বেপারী (২০) ও শফি মোল্যা (২৫)।দুই ছাত্রীকে ধর্ষণকালে তারা মোট পাঁচ খণ্ডের মোবাইল ভিডিওচিত্র ধারন করে।
এ ঘটনায় গত ১ জুন নির্যাতিতা এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।আদালত চরভদ্রাসন থানাকে মামলাটি এফআইআর করে দ্রুত আসামি গ্রেফতারপূর্বক কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার চরভদ্রাসন থানার ওসি রাম প্রসাদ ভক্ত জানান, মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, আজ-কালের মধ্যেই মামলাটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এদিকে মামলার পর ধর্ষকেরা মামলা তুলে নিতে বাদীকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
মামলার বাদী জানান, ইউনিয়নের চরশালেপুর গ্রামে তার বসবাস। তিন ছেলে ও এক মেয়ের সংসারে সবার বড় মেয়েটি গ্রামের স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। তার এক আপন ভাগ্নি একই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে।
এ দুইজন স্কুলে যাওয়া আসার পথে ধর্ষকরা প্রায় উত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি উজ্জল খান, শুকুর আলী সিকদার, সিরাজ সেখের অভিভাবকদের কাছে নালিশ দেয়ায় তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
ঘটনার দিন ছিল ১ বৈশাখ। তাই ওই দিন সকালে দুবোন শাড়ি পরে মেঠোপথ ধরে পাশের গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছিল। তারা একই গ্রামের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের কাছাকাছি পৌছালে তিনটি মোটরসাইকেল যোগে পাঁচ যুবক এসে তাদের ঘিরে ফেলে।
জোর পূর্বক দুবোনকে মোটর সাইকেলে তুলে নেয়ার পর আশ্রয়কেন্দ্রের পিছনে একটি ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।এ সময় লম্পটরা ধর্ষন করার পাশপাশি অন্যরা মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকে।
পরে পথচারীদের সহায়তায় কিশোরী দুজন বাড়ি ফিরে আসে। এ ঘটনার ভিডিওচিত্র জিম্মি করে ধর্ষকগোষ্ঠী নির্যাতিত পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতে থাকে।কিশোরীর পরিবার চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা ধর্ষণের ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়।এক পর্যায়ে টাকা না পেয়ে তারা ধর্ষনের ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।