• সোমবার , ১৮ নভেম্বর ২০২৪

দুই দিন ধরে পানিবন্দী মানুষ তিস্তা পাড়ে


প্রকাশিত: ১:৪০ পিএম, ১১ জুলাই ১৭ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫২ বার

স্টাফ রিপোর্টার  :  দুই দিন ধরে পানিবন্দী মানুষ তিস্তা পাড়ে । মাটির বস্তা ফেলে বন্যার পানি ঠেকানোর চেষ্টা স্থানীয়দের বিপদসীমার tista.www.jatirkhantha.com.bd-111উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে দুর্ভোগ কমেনি তিস্তা পাড়ের মানুষের। দু’দিন ধরে পানিবন্দি মানুষ ত্রাণ সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সোমবার সকাল ৯টা থেকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এ পরিস্থিতিতে তিস্তা ব্যারাজের সব (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এদিকে তিস্তার পানি প্রবাহ কমায় নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলায় বন্যার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে তিস্তা পাড়ের বসবাসরতদের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। বন্যা দুর্গত মানুষ এখনো পায়নি ত্রাণ সহায়তা। দু’দিন ধরে পানিবন্দি মানুষগুলো অভুক্ত থেকে ত্রাণ সহায়তার আশায় ক্ষণ গুণছে।
tista.www.jatirkhantha.com.bd
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে বন্যা দুর্গতদের জন্য সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসনের ত্রাণভাণ্ডার হতে জিআর এর ৫৫ মেট্রিকটন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।নীলফামারী জেলা প্রশাসক খালেদ রহীম বলেন, উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পাড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে । ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলায় বন্যায় যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের জন্য চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

জাতিরকন্ঠ এর জেলা জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২৫টি চর ও গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া পাশ্ববর্তী লালমনিরহাট  হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদী বেষ্টিত চর ও গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া বিভাগের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিন ধরে উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়াস্থ তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ৩২ সেন্টিমিটার উপর পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে তিস্তা অববাহিকার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চর ও গ্রাম প্লাবিত হয়ে ১৫ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। তবে মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তায় পানি কমতে শুরু করেছে। আজ সকাল ৯টায় তিস্তার পানি ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো সূত্র জানায়, ভারত ১৯৯৮ সালে তিস্তা ব্যারাজের ৬০ কিলোমিটার উজানে গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে। বর্ষার সময় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হলে বা উজানে বন্যা হলে এ বাঁধের ৫৪টি গেটের সব কটি খুলে দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বন্যা দেখা দেয়। প্লাবিত হয় নীলফামারী ও লালমনিরহাটসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা।

অথচ শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা ব্যারেজে গজলডোবার উজানে তিস্তা-মহানন্দা খালের মাধ্যমে ভারতে ২ হাজার ৯১৮ কিলোমিটার বাঁধে পানি প্রবেশ করে। তা দিয়ে ভারতের উত্তরাঞ্চলের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, কুচবিহার ও মালদাহ জেলার ২ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা হয়। ঠিক ওই সময় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে তিস্তাপাড়ে খরা দেখা দেয়। পানির অভাবে ব্যাহত ফসল উৎপাদন।