দিনের পর দিন হত্যা, অপহরণ, গুম,
রাজধানী ঢাকায় পর পর দুই দিনে পৃথক দুটি ঘটনায় এক নারীসহ চার ব্যক্তির খুন হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। অবশ্য দেশজুড়ে নিত্যনৈমিত্তিক খুনখারাবিসহ নানা ধরনের গুরুতর অপরাধ সংঘটনের খবর এত বেশি আসছে যে এসব নিয়ে সাধারণ উদ্বেগ ততটা প্রকটভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না।
বিশেষত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে এগুলো তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু তাতে করে এই ভয়াবহ সমস্যার বিপদের মাত্রা ও গুরুত্ব কিছুমাত্র কমছে না, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বুধবার রাতে ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারে মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকীর নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
সংবাদমাধ্যমের অব্যাহত প্রতিক্রিয়া এবং ফারুকীর সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ও তার সহযোগী সংগঠন ছাত্রসেনার বিক্ষোভ, ভাঙচুর, হরতালের হুমকি ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে খুনিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও তৎপর হয়েছে বলে খবর প্রচারিত হয়েছে।
এই অবস্থায় পরদিন রাতেই মগবাজারে যারা গুলি করে এক নারীসহ তিনজনকে হত্যা ও একজনকে আহত করেছে, তারা যে আইন-বিচার ইত্যাদিকে ভ্রুক্ষেপ করে না, সেটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সমাজের অপরাধপ্রবণ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর এ রকম বেপরোয়া হয়ে ওঠা একটি গুরুতর জাতীয় সমস্যা।
এই সমস্যা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। দিনের পর দিন হত্যা, অপহরণ, গুম, ধর্ষণসহ নানা ধরনের গুরুতর অপরাধ ঘটে চলেছে, কিন্তু অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি হচ্ছে না বললেই চলে। কোনো রাষ্ট্রে হত্যাসহ গুরুতর সব অপরাধ করে অপরাধীরা যদি বিচার ও শাস্তি এড়িয়ে যেতে পারে, তাহলে অপরাধপ্রবণতা লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ারই কথা। আইন প্রয়োগে শিথিলতা ও
বিচারহীনতার এই পরিবেশ জাতির জন্য ভয়ংকর পরিণাম ডেকে আনতে পারে। তাই হত্যাসহ প্রতিটি অপরাধকে গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ, সুষ্ঠু বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
ফারুকী ও মগবাজারের তিন ব্যক্তির হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন।