• সোমবার , ১৮ নভেম্বর ২০২৪

দিনাজপুর পুলিশ রক্ষক ও ভক্ষক ? মহা জালিয়াতি হলেও এসপি নিরব?


প্রকাশিত: ৩:৫৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৪ বার

দিনাজপুর থেকে আবু তাহের   :  দিনাজপুর পুলিশ রক্ষক ও ভক্ষক মহা জালিয়াতি হলেও এসপি oনিরব? এবার  চোরাই বানিজ্যে নেমেছে দিনাজপুর পুলিশ-।একটি জালিয়াতচক্র ম্যাজিষ্ট্রেটের সহি নকল করে শতাধিক মোটরসাইকেল বিক্রি করে দিয়েছে নিলামে। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানা পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের সিল স্বাক্ষর জাল করে অর্ধশত চোরাই মোটরসাইকেল নিলামে বিক্রি করে দেয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। দিনাজপুর পলিশ বিভাগে এনিয়ে চলছে তোলপাড়।

জানা গেছে, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ কর্তৃক ম্যাজিস্ট্রেটের সিল স্বাক্ষর জাল করে  নিলাম জালিয়াতি করে প্রায় অর্ধশত মোটরসাইকেল বিক্রির করেছে। এই অপকর্মের সাথে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে নিলাম জালিয়াতি সন্দেহে ৪টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এফ, এম, আহসানুল হক জানান, জালিয়াতিতে নিলামে কেনা মোটরসাইকেল মালিক কর্তৃক তার আদালতে দেয়া অভিযোগ তদন্তে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, তার আদালতের সিল এবং স্বাক্ষর জাল করে ২৩টি মটর সাইকেল বীরগঞ্জ থানা থেকে নিলাম দেখিয়ে বিক্রি করা হয়েছে।

নাম গোপন রাখার শর্তে বীরগঞ্জ থানার একজন কর্মকর্তা জানান, ওই থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেনের (বর্তমানে গোদাগাড়ী থানায় কর্মরত)  ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর জাল ও নিলামের কাগজ তৈরী করে চোরাই মোটরসাইকেল গুলো বিক্রি করেছেন।

অন্য একটি সুত্র জানায়, ২ মার্চ চুরি হওয়া বাজাস ডিসকোভার ১০০ সিসি (ইঞ্জিন নং-৪১১১৫০) একটি মোটরসাইকেল ১৪ এপ্রিল জনৈক বদিউল ইসলাম বীরগঞ্জ পৌর শহরে সাগর রায় নামে এক মেকারের দোকানে আনে। এসময় ওই মোটরসাইকেলের প্রকৃত মালিক পরিমল রায় পুলিশকে জানালে পুলিশ মোটরসাইকেলসহ উভয় পক্ষকে থানায় নিয়ে যায়।

থানায় কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় পরিমল চন্দ্র রায় শো-রুমের মুল কাগজপত্র এবং বদিউল ইসলাম ওই থানার তৎকালিন উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেনের মাধ্যমে থানা থেকে নিলাম নেয়ার ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরিত কাগজ প্রদর্শন করেন।

প্রাথমিক তদন্তে পরিমলের শো-রুমের কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিলামের কোন অস্তিত্ব পায়নি। তবে এই ঘটনার সাথে শুধু উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন জড়িত, নাকি ওসি সহ অনেকেই জড়িত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে পুলিশ এখন নিলাম জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার কৌশলে নেমেছে।

বীরগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, নিলাম জালিয়াতি সন্দেহে ৪টি মোটরসাইকেল জব্দ করার কথা স্বীকার করলেও অন্যগুলোর বিষয়ে কোন কিছু জানেন না।

দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন এর কাছে নিলাম জালিয়াতির শিকার মোটরসাইকেল ক্রেতাদের অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করলেও নিজস্ব কোন তদন্তের ব্যবস্থা না নেয়ার কথা বলে জানান, সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে নির্দেশ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে দিনাজপুরে মোটরসাইকেল চুরি নিত্য দিনের ঘটনা। অসংখ্য মোটরসাইকেল চুরি হলেও আজ পর্যন্ত সেগুলো উদ্ধার করতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। তবে ২/১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। যে গুলো উদ্ধার হয়নি সেগুলো পুলিশের সহায়দায় ম্যাজিস্ট্রেটের সিল জাল স্বাক্ষর করে বিক্রি করে দিয়েছে। এসময় মোটরসাইকেলে যে ইঞ্জিন নাম্বারটি থাকে তাতে একটি নাম্বার বেশি অথবা ঘসে কম করে দেয়ায় মুল মালিক তার মোটরসাইকেলটি ফেরত পায় না। দিনাজপুরে পুলিশের ছত্রছায়ায় একটি বিশাল মোটরসাইকেল চোরের চক্র রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মোটারসাইকেল চুরি হলেই জালিয়াতির সাথে যে সব পুলিশ জড়িত তাদের অবহিত করা হয়। সাধারণ মানুষের অভিমত পুলিশ নিরাপত্তা না দিয়ে চোরাই চক্রের সাথে আতাত করে এসব মোটরসাইকেল চুরিতে সহায়তা এবং বিক্রির ব্যবস্থা করে দেয়। রক্ষকই বক্ষক হয়েছে। দিনাজপুরের সর্বত্র এখন মোটরসাইকেল চুরির আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর দিনাজপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ বিভাগে তোলপাড় চলছে ।

একটি সূত্র জানায় একই জালিয়াতির ঘটনা কাহারোল,খানসামাসহ অনেক কয়টি থানায় ঘটেছে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে বলে সূত্রটি দাবী করেছে।