দশ বছর পর কিবরিয়া হত্যার বিচার শুরু-বাবর বরখাস্ত মেয়রসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সিলেট অফিস.ঢাকা: আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় আজ রোববার সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেটের বরখাস্ত হওয়া মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আরিফুলকে হুইল চেয়ারে করে আদালতের ভেতরে নেওয়া হয়।
সিলেটদীর্ঘ দশ বছর পর শুরু হলো আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার বিচার। বারবার তারিখ পেছানোর পর আজ রোববার এ হত্যা মামলায় ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে আছেন চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং বিএনপি নেতা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও।
সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসানের আদালতে আজ রোববার এ অভিযোগ গঠন করে ২১ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। এর আগে আদালতে হাজির করা হয় লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের বরখাস্ত হওয়া পৌর মেয়র জি কে গউছ ও নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ জঙ্গি মুফতি হান্নানসহ কারাবন্দী ১৪ আসামিকে।
অভিযোগ গঠনের আগে আদালতে প্রায় দুই ঘণ্টা শুনানি হয়। এতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন সিলেট জেলা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মিসবাহউদ্দিন সিরাজ, হবিগঞ্জের জেলা দায়রা জজ আদালতের পিপি আকবর হোসেন প্রমুখ। আর আসামি পক্ষে শুনানি করেন এম নুরুল হক, নোমান মাহমুদ, আবদুল গাফফার ও এমাদ উল্লাহসহ প্রায় অর্ধশত আইনজীবী।
শুনানি শেষে আদালত উপস্থিত ১৪ আসামি ছাড়াও জামিনে থাকা আটজন এবং পলাতক থাকা ১০ জনসহ মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
আরিফুল হক চৌধুরীর অসুস্থতার কারণে এর আগে নয় দফা পিছিয়ে যায় মামলাটির অভিযোগ গঠনের তারিখ। আজ সকালে আরিফুলকে কারাগার থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাঁকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আদালতপাড়ায় সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের ভিড় ছিল। আদালত পাড়ায় মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ।
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় আজ রোববার সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেটের বরখাস্ত হওয়া মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। বাবরকে সিলেটের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
সিলেট২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যেরবাজারে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অধিকতর তদন্ত করে গত বছরের ১৩ নভেম্বর তৃতীয় পর্যায়ে একটি সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। এতে আরিফুল হক চৌধুরী ও জি কে গউছসহ নয়জন নতুন করে অভিযুক্ত হন। গত বছরের ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর আরিফুল ও গউছ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। এ বছরের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এক আদেশে এই দুই মেয়রকে সাময়িক বরখাস্ত করে।