তুফানদের অপকর্মের শিকার মা-মেয়ে’ এখন কোথায় যাবে?
বগুড়া প্রতিনিধি : তুফানদের অপকর্মের শিকার মা-মেয়ে’ এখন কোথায় যাবে? বগুড়ায় কিশোরী ছাত্রী ধর্ষণ ও পরে মাসহ তার মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। নির্যাতন পরবর্তী দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন মা-মেয়ে। বর্তমানে তারা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শনিবার কথা হয় ওই মা-মেয়ের। তারা জানান, চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে জীবনের নিরাপত্তা ও সামাজিক অবস্থান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ওই ছাত্রীর মা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘চিকিৎসা তো শেষ, আমরা এখন কোথায় যাবো?’
নিজ বাড়িতে ফিরতে তারা অনিরাপদ মনে করছেন। তাই বাড়িতে ফিরতে চান না মা-মেয়ে। এখন তারা কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, কী করবেন এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন মা-মেয়ে। তারা বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমানোর চিন্তা-ভাবনাও করছেন। অবশ্য বগুড়া জেলার ডিসি ও এসপি নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তাদের বাড়িতে ফেরার পরামর্শ দিয়েছেন। সব ধরনের নিরাপত্তা প্রশাসনের পক্ষা থেকে নিশ্চিত করার কথাও জানানো হয়।
শজিমেকের উপ-পরিচালক ডা. নির্মেলেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘মা-মেয়ে দু’জনেই শারীরিকভাবে সুস্থ। তবে মানসিক কিছুটা সমস্যা আছে, তা আস্তে-আস্তে কাটিয়ে উঠবে। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়তে আমরা প্রস্তুত। তবে বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানাবো। যেহেতু তাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন রয়েছে। তাই হাসপাতাল থেকে যাওয়ার বিষয়টি পুলিশের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
গত ১৭ জুলাই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কিশোরী ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন শ্রমিক লীগ বগুড়া শহর শাখার আহ্বায়ক (বর্তমানে সাময়িক বহিষ্কৃত) তুফান সরকার। এর ১০ দিন পর ওই কিশোরী ও তার মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে বেধড়ক পেটানো হয়।ধর্ষণ ও নির্যাতনের ওই ঘটনায় মেয়েটির মা গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাতে তুফান সরকার, তার স্ত্রী আশা এবং স্ত্রীর বড় বোন ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। এরইমধ্যে এজাহারভুক্ত ৯ আসামিসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার পর ওই রাতেই তুফান ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে তুফান এবং দুই সহযোগী আলী আজম ওরফে ডিপু ও রূপমকে রোববার তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। আর আতিকুর রহমান নামের একজন শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় তার রিমান্ড চাওয়া হয়নি।