স্টাফ রিপোর্টার.ঢাকা: বিএনপি জোট অবরোধ-হরতাল চালিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দাবি করে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তিন সিটি কর্পোরেশনে ভোট আয়োজনের মত দিয়েছেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক।সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে একদিনে ভোট হবে বলেও জেনেছেন তিনি।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তবে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, সহসাই কমিশন তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে আইজিপির সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি। ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও ছিলেন বৈঠকে।
তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতি সিইসির কাছে তুলে ধরা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। যে কোনো ভোটে আইনশৃঙ্খলার মূল দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।ইসি থেকে বেরিয়ে আইজিপি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বাচনের অনুকূলে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ রয়েছে। কমিশন নির্বাচনের জন্য যে ধরনের সহায়তা চাইবে, আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করব।
এপ্রিল মাসে ক্রিকেট (পাকিস্তান দলের সফর) রয়েছে, তা মে মাসে যেত পারে। এর আগে এপ্রিলের ৩০ তারিখের মধ্যে ভোট হলে আমাদের সুবিধা হবে। কমিশন আমাদের প্রস্তাব বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে, বলেন তিনি।নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনকারী বিএনপি জোট হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের নাশকতার ঘটনা অনেকটাই কমেছে। তবে বিক্ষিপ্ত বোমাবাজি হচ্ছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন একদিনে করার কথা ইসি জানিয়েছে বলে শহীদুল হক জানান, যদিও এর পক্ষে নন তারা।আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রামে আলাদাভাবে দুই দিনে (ভোট) চেয়েছিলাম। কিন্তু কমিশন একদিনে করতে চায়। খুবসম্ভব একদিনে এ তিনটি সিটি নির্বাচন হবে।তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের তৎপরতা বেড়ে গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে মনে করেন আইজিপি। ।
সুষ্ঠুভাবে ভোট নিতে যতসব ব্যাড ইলিমেন্ট থাকবে; তাদের ধরতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সন্ত্রাস ও নাশকতা রোধে চলমান অভিযান আরও বেগবান করা হবে।পুলিশের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের আগে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ভোটের জন্য তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। এখন সুবিধাজনক সময়ে কমিশন সভা করে তফসিল ঘোষণা করতে পারে।
আগামী জুনের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার সঙ্গে ঢাকার দুটোও সেরে ফেলতে চায় ইসি। সেক্ষেত্রে এইচএসসি পরীক্ষার সময়টি নিয়ে ভাবনায় তারা। এইচএসসি পরীক্ষা ১ এপ্রিল শুরু হচ্ছে। এইচএসসি পরীক্ষার ফাঁকে এপ্রিলের শেষভাগ থেকে মধ্য জুনের মধ্যে এ তিন সিটির নির্বাচন করার কথা ইতোমধ্যে সিইসি জানিয়েছেন।
এপ্রিলের শেষভাগে ২৫, ২৮, ৩০ এপ্রিল এবং মে মাসের শুরুতে ৪, ৭ ও ১০ ও ১২ মে পরীক্ষা রয়েছে। যে কোনো একদিন পরীক্ষা পুনর্বিন্যাস করে ৫ দিনের ফাঁকে ভোট নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।এই বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতিও চলছে কমিশনে।
আইজিপির সঙ্গে সিইসির বৈঠকের পর ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবে এবং তাদের পরামর্শও পাওয়া গেছে। তফসিল দেওয়ার এখতিয়ার ইসির। কমিশন সময়সূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।কবে ভোট হবে, তা সহসাই জানতে পারবেন। সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকরা তাড়াতাড়ি ভোটের তফসিল জানতে পারবেন।
ঢাকা উত্তর ওদক্ষিণ এবং চট্টগ্রামের আসন্ন ভোটকে সামনে রেখে দিনভর নানা ধরনের প্রস্তুতি চলেছে ইসিতে। টিআইএন নম্বরযুক্ত মনোনয়ন ফরম ছাপাতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। ম্যানুয়েলসহ আনুষাঙ্গিক প্রস্তুতিও তফসিল ঘোষণার আগে সেরে নেওয়া হবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।ইসি সচিব বলেন, ইসি সচিবালয়ের পক্ষ থেকে তফসিলের আগে সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। কমিশন যখনই সিদ্ধান্ত নেবেন তখনই আমরা প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিতে পারব।