ডেইলি স্টার সম্পাদকের রাষ্ট্রদ্রোহীতা ষড়যন্ত্র-অভিযোগ গ্রেফতার দাবি জয়ের
শফিক রহমান : সামরিক অভ্যুত্থানে উসকানি দিয়ে এবং সাজানো ও মিথ্যা প্রচারণা চালানোর জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়।
বৃহস্পতিবার অনলাইন দৈনিক জাতিরকন্ঠে ” ডেইলি স্টারের ইজ্জত পাংচার-‘ডিজিএফআইয়ের দেওয়া’ ভিত্তিহীন খবর ছেপেছিল মাহফুজ আনাম” শীর্ষক খবর প্রকাশের পর চারদিকে তোলপাড় শুরু হয়। খবরটি কানে যায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্ঠা সজিব ওয়াজেদ জয়ের কাছে।
এর জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ২টা ১৯ মিনিটে নিজের জয় তাঁর ফেইসবুক পেইজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ দাবি জানান তিনি।
জয় লিখেছেন, “মাহফুজ আনাম, দ্যা ডেইলি স্টার সম্পাদক, স্বীকার করেছেন যে তিনি আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অপবাদ আরোপ করতেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির গল্প ছাপিয়েছিলেন। তিনি সামরিক স্বৈরশাসনের সমর্থনে আমার মাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে এই কাজ করেছিলেন।
জয় উল্লেখ করেন “একটি প্রধান সংবাদপত্রের সম্পাদক সামরিক বিদ্রোহে উসকানি দিতে যে মিথ্যা সাজানো প্রচারণা চালায় তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা।”
ইংরেজি দৈনিকটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুধবার রাতে এটিএন নিউজে এক অনুষ্ঠানে প্রশ্নের মুখে সম্পাদক মাহফুজ আনাম স্বীকার করেন যে, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের সরবরাহ করা ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর’ যাচাই ছাড়া প্রকাশ করে সাংবাদিকতা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল তিনি করেছেন। ডেইলি স্টারের সম্পাদক বলেন, “এটা আমার সাংবাদিকতার জীবনে, সম্পাদক হিসেবে ভুল, এটা একটা বিরাট ভুল। সেটা আমি স্বীকার করে নিচ্ছি।”
অনুষ্ঠানে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ডেইলি স্টারের বিতর্কিত ভূমিকার প্রসঙ্গ শুরুতেই সঞ্চালক তুললে তা অস্বীকার করেন মাহফুজ আনাম। পরে অন্যতম আলোচক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ‘হেড অফ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও এডিটোরিয়াল পলিসি কো-অর্ডিনেটর’ গাজী নাসিরউদ্দিন আহমেদ উদাহরণ তুলে ধরলে মাহফুজ আনাম ভুল স্বীকার করেন।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “আমার ব্যক্তিগত মত, তার মিথ্যা গল্পের উসকানি আমার মাকে গ্রেপ্তার করিয়েছে এবং ১১ মাস তিনি জেলে কাটিয়েছেন। আমি বিচার চাই। আমি চাই মাহফুজ আনাম আটক হোক এবং তার রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিচার হোক।”
সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে মাহফুজ আনামের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। “তিনি (মাহফুজ আনাম) অব্যাহতভাবে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে তাদের অনৈতিকতা এবং দুর্নীতিগ্রস্ত হবার কথা লিখেন। তার নিজের স্বীকারোক্তি মতে তিনি নিজেই পুরোপুরি অনৈতিক এবং একজন মিথ্যাবাদী।
“তার অবশ্যই একজন সাংবাদিক হিসেবে থাকার কোনো অধিকার নাই- সম্পাদক তো অনেক দূরের বিষয়। তার কার্যক্রম দুর্নীতিকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা দেশপ্রেমহীন এবং বাংলাদেশবিরোধী।”