”ডায়েরিতে লিখে রাখুন-হাসিনার অধীনেই খালেদা নির্বাচনে যাবেন”
বিশেষ প্রতিনিধি : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, আপনারা ডায়েরিতে লিখে রাখুন, আমি নিশ্চিত করে বলছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেবেন। এছাড়া খালেদা জিয়ার সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সহায়ক সরকার গঠনের বিষয়ে বিএনপি সম্পর্কে জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই ক্ষমতাসীন সরকারের অধিনেই নির্বাচন হয়। ব্রিটেনে থেরেসা মে, আমেরিকায় বারাক ওবামার নেতৃত্বে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে এবং সহায়তা করবে সরকার। সেই সরকারের নেতৃত্বে থাকবে শেখ হাসিনা। অন্য কারও এখানে আসার সুযোগ নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলে বিএনপি নেত্রীর ঘোষণা বিষয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ক্ষমতা নেই নির্বাচন বন্ধ করার। ২০১৪ সালে সহিংসতা করেছে, মানুষ পুড়িয়েছে কিন্তু নির্বাচন বন্ধ করতে পারেনি। উনি এ ধরনের নৈরাজ্য করে সামরিক সরকার আনতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি।
তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির আগেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হবে। এখানে অন্য কোনো কিছু হওয়ার সুযোগ নেই। কেউ যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে তো জোর করে আনা যাবে না।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দশম সংসদের গ্রহণযোগ্যতা সংক্রান্ত সমালোচনাও নাকচ করে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে আইপিইউতে সাবের হোসেন চৌধুরী ও সিপিইউতে শিরিন শারমিন চৌধুরী সভাপতি কেমনে হলেন?
রমজানে বিএনপির ভূমিকার সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের একটি গ্রামেও বিএনপি মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। রমজান মাসে ইফতার পার্টি হয়। আমরাও দিয়েছি। কিন্তু খালেদা জিয়া প্রতিটি ইফতার পার্টিতে যেভাবে কটাক্ষ করে শেখ হাসিনার নাম নিয়েছে তা অশোভনীয় ও মার্জিত নয়।
সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হওয়ায় সন্তোষ জানান তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন, এ বছর যথাযথ মর্যাদায় ও শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ পালিত হয়েছে। সারা দেশে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। গতবছর শোলাকিয়ায় হামলা হলেও এ বছর কোথাও দুর্ঘটনা ঘটেনি। আমরা ভোলার চারজন এমপি জনগণের কাছে ছিলাম। তারা বলেছেন, তারা ভালো আছেন।
তিনি আরও বলেন, দুই একটি পণ্য ছাড়া রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে ছিল। চাল ও চিনির সংকট ছিল কৃত্রিম সংকট। চালের দাম দুই তিন টাকা করে কমেছে। গ্রামে যদি পাকা রাস্তা থাকে এবং বিদ্যুৎ থাকে তবে সেটি গ্রাম থাকে না, শহরের পরিণত হয়। এবার আমি গ্রামে গিয়ে তাই দেখে এলাম।
শিগগির চালের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
চাল আমদানির ওপর শুল্ক কমানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমদানি শুল্ক কমানোয় প্রতি কেজিতে দাম কমবে ৬ টাকা এবং পুরোটা প্রত্যাহার করলে কমতো ৯ টাকা। যারা মিল মালিক তারা চাল মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছিল।
তিনি আরও বলেন, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে চাল আসবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর পালিত হয়। ছুটি শেষে তৃতীয় দিনে আজই সরকারি অফিসগুলোতে প্রথম কর্মদিবস শুরু হয়।
প্রথম দিনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সচিবালয়ে এসে সহকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বিরেন শিকদার প্রমুখ।