ডাবল বেতন স্পিকার ডেপুটি স্পিকার সাংসদদের-
সংসদ রিপোর্টার: স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুণ করতে সংসদে দুটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। এতে স্পিকারের বেতন এক লাখ ১২ হাজার টাকা, ডেপুটি স্পিকারের বেতন এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা এবং এমপিদের বেতন ৫৫ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে তাদের অন্যান্য ভাতাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
রোববার মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সংসদের বৈঠকে বিল দুটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। ‘স্পিকার অ্যান্ড ডেপুটি স্পিকার (রেমুনেরেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬’ এবং ‘মেম্বারস অব পার্লামেন্ট (রেমুনারেশন অ্যান্ড অ্যালায়েন্সেস) (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬’ উত্থাপনের পর অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতন-ভাতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিলের উদ্দেশ্য সম্পর্কিত বিবৃতিতে আইনমন্ত্রী বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি এবং দেশের আর্থ-সামজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ও অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণা করায় স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের বেতন, ভাতা, পারিতোষিক, বিশেষ অধিকার ইত্যাদি সময়োপযোগী করা প্রয়োজন। স্পিকারের বেতন ৫৭ হাজার ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ ১২ হাজার টাকা, ব্যয় নিয়ামক ভাতা আট হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৩ হাজার টাকা, বিমান ভ্রমণের সময় বীমা কাভারেজ ১০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১৬ লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা এক হাজার থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিল ১০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১১ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকারের বেতন ৫৩ হাজার ১০০ থেকে বাড়িয়ে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা, ব্যয় নিয়ামক ভাতা ছয় হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, বিমান ভ্রমণের সময় বীমা কাভারেজ পাঁচ লাখ থেকে বাড়িয়ে আট লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা ৭৫০ থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা, স্বেচ্ছাধীন তহবিল আট লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংসদ সদস্যদের বেতন বাড়ানো সংক্রান্ত পৃথক বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে আইনমন্ত্রী বলেন, এমপিদের বর্তমান বেতন ২৭ হাজার ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ হাজার টাকা, ব্যয় নিয়ামক ভাতা তিন হাজার থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা, দৈনিক ভাতা ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা, স্বেচ্ছাধীন তহবিল তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা, নির্বাচনী এলাকার মাসিক খরচ সাড়ে সাত হাজার থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা, পরিবহন খরচের মাসিক ভাতা ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা, বার্ষিক ভ্রমণ খরচ ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা, মাসিক লন্ড্রি ভাতা এক হাজার থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা এবং মাসিক ক্রোকারিজ ভাতা চার হাজার থেকে বাড়িয়ে ছয় হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া রোববার সংসদে তিনটি স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করা হয়। সংসদীয় কমিটিতে যাচাই-বাছাই শেষে ‘বাংলাদেশ চা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বিল, ২০১৫’ পাসের সুপারিশ সহকারে উথাপন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী, ‘উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ বিল, ২০১৫’ উত্থাপন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান এবং ‘রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বিল, ২০১৫’ উত্থাপন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম।