ডাক্তার নামের কলংক-চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট!
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট হাসপাতালের চিকিৎসকরা যেন ডাক্তার নামের কলংক! ওরা চোখ সারাতে গিয়ে চোখ’ই নষ্ঠ করে ফেলেছে। এর ফলে- চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিতে এসে চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার ( ১ এপ্রিল) এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো.ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অমিত দাস গুপ্ত। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফকতরের মহাপরিচালক, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন, চুয়াডাঙ্গার ডিসি ও এসপি, ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, ডা. মোহাম্মদ শাহীনসহ মোট ১০ জনকে বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৬ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
পৃথক এক রুলে চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরে চক্ষু চিকিৎসায় ২০ জনের চোখ অস্ত্রোপচারে কার্যকর, যথাযথ ও পর্যাপ্ত নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগতভাবে কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আাদলত।
একইসঙ্গে ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষুশিবিরে চিকিৎসা নিতে এসে একটি করে চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রবিবার (১ এপ্রিল) সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত রিটটি দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষুশিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই ২০ রোগীর সবাই দরিদ্র। কেউ স্বজনের কাছে ধারদেনা করে, কেউ বাড়ির ছাগল-মুরগি বিক্রি করে, কেউবা এনজিও থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে ভর্তি হয়েছিলেন চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে। সেখানে অপারেশনের পরই তাদের চোখে ইনফেকশন হয়।
পরে অপারেশন হওয়া চোখ তুলে ফেলতে হয়। তবে ঢাকার হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা ব্যয় দিয়েই নিজেদের দায় সেরেছে ইম্প্যাক্ট। যদিও সংশ্লিষ্টদের বিচার ও চিরদিনের জন্য অন্ধত্বের ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।পরে আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।